মালদা, 14 জুলাই: প্ল্যাটফর্মের অদূরেই এক রেলকর্মীর স্ত্রী'র অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে । বৃহস্পতিবার একলাখি স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে একটি ঘাসজমি থেকে ওই বধূর দেহ উদ্ধার করে গাজোল থানার পুলিশ (Body Recover of Railway Workers Wife)। ঘটনার তদন্তে যান গাজোল থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি অক্ষয় পাল, ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) আজহারউদ্দিন খান । প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই বধূকে খুন করা হয়েছে । মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ছুরি ও এক প্যাকেট কন্ডোম । জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতার স্বামী ও ছেলেকে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ । পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি । আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল পৌনে দশটা নাগাদ স্থানীয় লোকজন মৃতদেহটি ঘাসজমিতে পড়ে থাকতে দেখেন । খবর যায় গাজোল থানায় । পুলিশ আসার পরেই জানা যায়, মৃতার নাম রিংকি দেবী (32)। তাঁর স্বামী এল রাহুল এনএফ রেলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী । তাঁদের বাড়ি বিহারের রোহতাস জেলায় । বছর সাতেক ধরে একলাখি রেল কোয়ার্টারে থাকেন তাঁরা । ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ দেখতে পায়, রিংকিদেবীর গলায় গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে । তাঁর পায়ের দিকে ওড়না বাঁধা ছিল । দুপুর নাগাদ পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠায় । জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর স্বামী ও ছেলেকে ৷
আরও পড়ুন : পুরুলিয়ায় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন পেট্রল পাম্প ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মৃতার স্বামী ও ছেলের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে । গোটা ঘটনা জানতে পুলিশ রেলের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে । স্বামী পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি গেটম্যান । সকালে ডিউটি থাকায় ভোর চারটের সময় তিনি কোয়ার্টার থেকে বেরিয়ে যান । পথে মোটরবাইক থেকে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন । তাতে তাঁর মুখে চোট লাগে । এদিকে একলাখি স্টেশনের ম্যানেজার রামাধর সিং জানিয়েছেন, আজ সকাল ছ'টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত এল রাহুলের ডিউটি ছিল । ওই গেটটি কোয়ার্টার থেকে 3-4 মিনিটের পথ । তার জন্য ভোর চারটের সময় বেরোনোর প্রয়োজন পড়ে না । অন্যদিকে পুলিশের বক্তব্য, মোটরবাইক থেকে পড়ে গেলে শুধু মুখে আঘাত লাগতে পারে না । শরীরের অন্যান্য অংশেও আঘাত থাকবে ।
স্থানীয় বাসিন্দা পঙ্কজ দাস জানান, ওই মহিলাকে সম্ভবত খুন করা হয়েছে । তাঁর শরীরে রক্তের দাগ ছিল । তিনি স্বামী আর 10 বছরের ছেলের সঙ্গে থাকতেন । তবে রিংকি দেবীর বোনও এখানে বছর দুয়েক ধরে ছিলেন । আট দিন ধরে তাঁকে আর দেখা যায় না । পারিবারিক কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে কি না, তা পুলিশ তদন্ত করলে জানা যাবে ।
পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে জানা যাবে । তদন্তের স্বার্থে মৃতার স্বামী আর ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । পুলিশের তরফে মৃতার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে । আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।