মালদা, 8 অক্টোবর: লক্ষ্মী আছে সামনেই (Lakshmi Puja) ৷ কিন্তু লক্ষ্মীলাভ হয়নি শেষ প্রহরেও ৷ রাত পোহালে বাঙালির ধনলক্ষ্মী পুজোর আগে চিন্তায় রবি ৷ আজও সেভাবে খদ্দেরের দেখা না-মিললে চলবে কীভাবে ! এখনও তাঁর আশা, হাতে আরও দুটো দিন ৷ আজ আর কাল ৷ খদ্দের নিশ্চয়ই হবে ৷ বাঙালি লক্ষ্মীলাভের আশায় লক্ষ্মীপুজো করবে না...তা হয় নাকি ৷
দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে মেলা চলে হরিশ্চন্দ্রপুর হাটখোলায় ৷ থানার সামনেই হাটখোলা ৷ এবারও সেখানে মেলা বসেছে ৷ এখন অবশ্য ভাঙা মেলা ৷ এই মেলাতেই এলাকার পটুয়ারা লক্ষ্মীর ছোট মূর্তি আর পট নিয়ে বসেন ৷ এবারও বসেছেন ৷ কিন্তু এবার ছবিটা পুরোপুরি আলাদা ৷ দু’বছর আগেও মেলা শেষ না হতেই তাঁদের লক্ষ্মীর ছাঁচ আর পট সম্পূর্ণ বিক্রি হয়ে যেত ৷ এবার পুজোর আগেরদিনও সামনে পড়ে রয়েছে সেসবের একটা বড় অংশ ৷ সতেরোর বিধ্বংসী বন্যার ক্ষত এখনও হরিশ্চন্দ্রপুরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ৷ একটু ঘুরলেই তা চোখে পড়ে ৷ কিন্তু করোনার ক্ষত বোধহয় আরও গভীর ৷ যা চোখে দেখা যায় না ৷ শুধু অনুভব করে যাচ্ছেন পটুয়ারা ৷
স্থানীয় বারদুয়ারি গ্রামের কুমোরপাড়ার বাসিন্দা রবি পাল ৷ গত দু’বছর দুর্গাপুজোর মেলা না বসায় বাড়ি থেকেই লক্ষ্মীর ছাঁচ আর পট বিক্রি করেছিলেন ৷ ফলে ব্যবসা ভালো হয়নি ৷ পেট চালাতে অন্য কাজও করতে হয়েছিল ৷ ভেবেছিলেন, এবার করোনার দাপট নেই ৷ মেলায় ব্যবসা ভালোই হবে ৷ ভুল ভেবেছিলেন তিনি ৷ করোনা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে ৷ মানুষের শরীরে না থাকলেও নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে পকেটে ৷ রবি বলেন, "আজ ধরে এখনও দুটো দিন বাকি ৷ আশা করছি, খদ্দেরের দেখা পাব ৷ এসব বিক্রি করেই সংসার চালাই ৷ সিজন হিসাবে আমাদের ব্যবসা চলে ৷ এখন লক্ষ্মীর ছাঁচ আর পটের সিজন ৷ অন্য সময় মাটির অন্যান্য সামগ্রী বানাই ৷ দেখা যাক, কী হয় ৷"
আরও পড়ুন: মা দুর্গার বিসর্জনে আলো দেখান সোহরাব- সাইফুলরা
পটুয়ারা জানান, গত বছরের থেকেও এবার মূর্তি তৈরির উপকরণের দাম অনেকটা বেড়ে গিয়েছে ৷ ফলে ছাঁচ কিংবা পটের দামও তাঁরা কিছুটা বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন ৷ গতবার যে ছাঁচ তাঁরা 100-120 টাকায় বিক্রি করেছেন, এবার তার দাম 150-170 টাকা হয়েছে ৷ তাঁদের ধারণা, দাম বেড়ে যাওয়ার জন্যই খদ্দেররা এখনও মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন ৷ তবে আশায় বাঁচে চাষা ৷ বাঁচেন রবি পালের মতো পটুয়ারাও (Artisans looking for better income at Lakshmi Puja) ৷