মালদা, 17 অক্টোবর: মধ্যুযুগীয় বর্বরতা ৷ ইংরেজবাজারের পর এ বার ঘটনাস্থল চাঁচলের একটি গ্রাম ৷ অভিযোগ এক বিধবার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে, তাঁর মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে (Widow Allegedly Tortured in Malda) ৷ আর সেই সঙ্গে কপালে লিখে দেওয়া হয়েছে ‘420’ ৷ সেই ঘটনার ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ৷ যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা ইটিভি ভারত যাচাই করেনি ৷ এই ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের না হলেও, খবর পেয়ে ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে নির্যাতিতার স্বামী মারা যান ৷ দুই মেয়ে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন তিনি ৷ গ্রামবাসীদের দাবি, সম্প্রতি ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর শ্বশুরবাড়ির তরফের এক আত্মীয়র সম্পর্ক গড়ে ওঠে ৷ তিনি নাকি মাঝেমধ্যেই রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন ৷ এ নিয়ে গ্রামে কয়েকবার সালিশি সভাও বসে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ দিন কয়েক আগে তাঁকে নাকি ওই ব্যক্তির বাড়ির আশেপাশে দেখা গিয়েছিল ৷ অভিযোগ এর পরেই ভরা গ্রামের সামনে তাঁর চুল কেটে, কপালে 420 লিখে ‘শাস্তি’ দেন তাঁরই দেওর এবং শাশুড়ি (Widow Allegedly Torture by Family Members) ৷ সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেন গ্রামবাসীরা ৷ ওই মহিলা চিৎকার করে সাহায্য চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ ৷
এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় ৷ অভিযোগ গ্রামে এ নিয়ে একটি সালিশি সভা বসেছিল ৷ সেখানে যে দেওর বিরুদ্ধে মহিলার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ, তাঁর সঙ্গেই নাকি মহিলার বিয়ের নিদান দিয়েছে গ্রামের মাতব্বররা ৷ আর ওই যুবক নাকি সেই নিদান মেনেও নিয়েছেন ৷ আর নির্যাতিতা মহিলা ? জানা গিয়েছে, তিনিও নাকি সালিশি সভার নিদানে রাজি ৷
আরও পড়ুন: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে স্ত্রীর কোমরে দড়ি বেঁধে থানায় নিয়ে হাজির স্বামী
ঘটনার খবর পেয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল পুলিশ ৷ তাঁকে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানানোর পরামর্শও দেওয়া হয় পুলিশের তরফে ৷ তবে, তিনি তা করতে চাননি বলে জানিয়েছেন চাঁচল মহকুমা পুলিশের আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডল ৷ পুরো বিষয়টি প্রশাসনের উচ্চস্তরে জানানো হয়েছে ৷ বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক স্তরেও নিন্দার ঝড় উঠেছে ৷ পুলিশ ও পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির আইনি পদক্ষেপের কথা বলেছেন মালদা তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি ৷