শক্তিপুর, 19 ডিসেম্বর: ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের শক্তিপুরের বাড়িতে এল বিজেপির পুস্তিকা ও প্রশংসাপত্র। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতর থেকেই পোস্ট মারফৎ তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিজেপির পুস্তিকা আসায় ব্যাপক গুঞ্জন ছড়াতে শুরু করেছে। তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘ভুলবশত আমার ঠিকানায় এসেছে । একবার লোকসভা নির্বাচনে আমি বিজেপির প্রতীকে লড়েছিলাম । তার জেরেই এই ভুল হয়ে থাকতে পারে । ওই পুস্তিকায় বিজেপি সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান রয়েছে ।’’
এখানে অনেকেরই প্রশ্ন বিজেপির দলীয় নথিপত্র যদি এসেও থাকে তাহলে তা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আসবে কেন ? এ প্রশ্নের কোনও জবাব অবশ্য মেলেনি। দিনকয়েক আগে হুমায়ুন কবীরের মুখে বিজেপি ও আরএসএসের স্তুতি শোনা গিয়েছিল। সাংবাদিকদের সামনে বলেছিলেন, ‘‘বিজেপিতে অনেক ভালো লোক রয়েছেন । আরএসএসের সকলে খারাপ নন । বিজেপির সদর দফতরে আমি বহুবার গিয়েছি। শীর্ষস্থানীয় বহু বিজেপির নেতার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল ।’’
হুমায়ুন কবীরের মুখে বিজেপির স্তুতি শুনে অনেকেই নানান সম্ভাবনা বাতাসে ভাসাতে শুরু করেছিলেন । এবার ভরতপুরের বিধায়কের বাড়িতে বিজেপির পুস্তিকা আসায় সেই জল্পনায় সিলমোহর পড়ল বলেই রাজনৈতিক মহলের অভিমত । গত মঙ্গলবার বিধায়কের শক্তিপুরের বাসভবনের ঠিকানায় এই পুস্তিকা এসে পৌঁছয় ।
রাজনীতিতে হুমায়ুন কবীর বিতর্কিত চরিত্র, এমনটাই অভিমত রাজনৈতক মহলের । তাঁর ঘনঘন দলবদল নিয়েও একাধিকবার সমালোচনার ঝড় উঠেছে । কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে কিছুদিনের জন্য মন্ত্রী হন। মমতা-অভিষেকের বিরুদ্ধে মুখ খুলে দল থেকে সাসপেন্ড হন । ফের কংগ্রেসে প্রত্যাবর্তনে অধীর-ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন । বছর ঘুরতে না-ঘুরতে বিজেপিতে যোগদান করে মুর্শিদাবাদ লোকসভা থেকে পদ্ম প্রতীকে ভোটে দাঁড়ান। ফের তৃণমূলে যোগ দিয়ে ভরতপুর থেকে বিধায়ক । আর কবীর এবং কুকথাও যেন সমার্থক শব্দ।
অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর পারবারিক সম্পর্ক এখনও অটুট আছে বলেও স্বীকার করেছেন নেতা। বিজেপি-আরএসএসের সকলে খারাপ নয়, তাও মেনে নিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক । তবে বাড়িতে বিজেপির পুস্তিকা ভুল করেই এসেছে বলে জানিয়েছেন নেতা। দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘জানি না ওঁর বাড়িতে বিজেপির পুস্তিকা এসেছে কি না । তবে উনি সংবাদমাধ্যমে ভেসে থাকতে চান সেটা আমরা জানি ।’’