হায়দরাবাদ: কয়েকদিন আগেই কানাডার টরেন্টো বিমান বন্দরে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেছিল ৷ 17 ফেব্রুয়ারি (ভারতীয় সময়) কানাডার টরন্টো পিয়ার্সন বিমানবন্দরের ঘটনা ৷ টরন্টো পিয়ারসন বিমানবন্দরের রানওয়ে ছোঁয়ার কিছুক্ষণ আগে ডেলটার বিমানটি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে ৷ তবে ঘটনায় কোনও প্রাণহানি হয়নি ৷ ঠিক কোনও রহস্যে যাত্রীরা রক্ষা পেয়েছেন ৷ তার আগে জেনে নেওয়া যাক ঠিক কী ঘটেছিল ৷
অতীতের বিমান দূর্ঘটনার তথ্য খতিয়ে দেখলে সামনে আসে, প্রতিটি দুর্ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যাত্রীদের মৃত্যু হয়েছে ৷ তবে ব্য়তিক্রম থাকে ৷ এক্ষেত্রেও কি রহস্যে কাজ করেছে ৷ কীভাবে রক্ষা পেল 80জনের প্রাণ ৷ তবে তার আগে জেনে নেওয়া যাক ঠিক কি ঘটেছিল ৷
Delta Airlines-এর 4819 17ফেব্রুয়ারি (ভারতীয় সময়) আমেরিকার মিনিয়াপোলিস-স্ট.পল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল টরেন্টর উদ্দেশ্য । টরেন্টোয় মাটি ছোঁয়ার আগের মুহূর্তে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে বিমানে ৷ কানাডার টরেন্টর পিয়ারসন বিমানবন্দরের বোম্বার্ডিয়ার CRJ-900 রানওয়েতে দুপুর 2.30 (ভারতীয় সময়)আছড়ে পড়ে ৷ বিমানটিতে থাকা 4 জন ক্র সদস্য-সহ 76 জন যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান ৷ পরের দিন চিকিৎসকরা জানান যাত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ আঘাত ছিল ৷ পিঠে মচকানো এবং অল্প-বিস্তর আঘাত ছিল। কোনও কোনও যাত্রী বিমানে রাসয়নিক বিক্রিয়ায় সৃষ্টি গ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন । আঘাতের ধরন খুব একটা গুরুতর ছিল না ৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণ হানির ঘটনা না-ঘটার অন্যতম কারণ হল বিমানটি বিশেষ নকশা ৷ বিমানের "ক্র্যাশওয়ারথিনেস" – অর্থাৎ, দুর্ঘটনায় বিমানটিকে যতটা সম্ভব 'জীবন রক্ষা করার' মতো করে ডিজাইন করা হয়েছে ৷ তার কারণেই 80জন যাত্রী বেঁচে গিয়েছেন ৷ দুর্ঘটনার পর ব়্যাডারে ওঠা ফুটেজে দেখা গিয়েছে, উল্টানো বিমানের একটি উইংয়ের ক্ষতি হয়েছে ৷ তবে বিমানের মূল কাঠামো অক্ষত ছিল।
অবতরণের সময় যখন বিমানটিতে আগুন লেগেছিল, পাইলটরা ক্রসউইন্ডের সাহায্যে বিমানটির মুখ হাওয়ার দিকে ঘোরান ৷ যেভাবে কাঁকড়া চলা সেই কৌশলে বিমানটি অবতরণ করেন তার জেরেই রক্ষা পেয়েছন যাত্রীরা ৷
কিভাবে এটি সম্পাদন করা হয়:
- বিমানটির মুখ বাতাসের দিকে ঘোরানো হয়
- ক্র্যাব বজায় রেখে ফ্লেয়ার শুরু করেন পাইলটরা (বিশেষ উড়ান পদ্ধতি)
- নামার ঠিক আগে, রাডার ব্যবহার করেছিলেন
- উইন্ডের সঙ্গে ভেসে না যাওয়ার জন্য এলিরন ব্যবহার করা (বিশেষ উড়ান পদ্ধতি)
জ্বালানি ট্যাঙ্ক
জ্বালানি ট্যাঙ্কগুলি প্রধানত উইংয়ে সংরক্ষিত করা প্রয়োজন যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ৷ ডেল্টার বোম্বার্ডিয়ার CRJ900 বিমানটি ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করে উল্টে যাওয়ার পর এবং রানওয়ে ধরে এগিয়ে যায় ৷ তার জ্বালানির ভর্তি ডানপাশের উইংটি ভেঙে যায় ৷ এই ঘটনায়, উইংটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের কেবিন আগুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ৷ এয়ারস্পেস ইঞ্জিনিয়ার জো জ্যাকবসেন জানান, যিনি বোয়িং এবং ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর জন্য কাজ করেছেন । তিনি বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত,তাতেই রক্ষা পেয়েছন যাত্রীরা ৷
সিটটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা
16জি সিটগুলি নিরাপত্তার কথা ভেবে ডিজাইন করা হয়েছিল ৷ বর্তমানে অধিকাংশ বাণিজ্যিক বিমানকেই 16জি সিট থাকে ৷ যার মানে হল যে সেগুলি 16 গুণ গ্র্যাভিটির শক্তি সহ্য করতে সক্ষম। সিটের স্ট্যান্ড মেঝেতে একটি ট্র্যাকের যুক্ত থাকে, সেগুলি 10 ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে হেলতে পারে ৷ এই প্রসঙ্গেই কেভিন ক্যাম্পবেল, এভিয়েশন কনসাল্টিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সলিউশন্স-এর প্রতিষ্ঠাতা বলেন, "যাত্রীরা চান না যে সিটগুলি দুর্ঘটনার সময় ভেঙে যাক বা আলগা হয়ে যাক - এমনকি উল্টে গেলেও ৷
বিশেষজ্ঞরা ফ্লাইট ক্রু সদস্যদেরও প্রশংসা করেছেন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের । এই ফ্লাইটে থাকা দুইজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট উল্টানো বিমানে অবতরণ করেননি, কিন্তু সারা নেলসন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টস-সিএডব্লিউএ এর প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে তারা অনেক পরিস্থিতির জন্য প্রশিক্ষিত ছিলেন, যার মধ্যে 90 সেকেন্ডের মধ্যে যাত্রীদের উদ্ধার করারও প্রশিক্ষণ ছিল।