কলকাতা, ২৭ মার্চ: একাকীত্ব দূর করতে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন কলকাতার এক মহিলা। বয়স ৫১। বন্ধুত্ব হয়েছিল জনৈক মণীশ কুমার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ওই নামেই পরিচিত ছিল সে। পেশায় পাইলট, থাকে ইংল্যান্ডে - ফেসবুকে মণীশ নিজের এই পরিচয় দিয়েছিল। সেই মনীষের পাল্লায় পড়ে ৯০ লাখ টাকা খুইয়েছেন কলকাতার সেই মহিলা। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানায়। শুরু হয়েছে তদন্ত।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারিত মহিলার ছেলে এবং মেয়ে প্রবাসী। স্বামী মারা গেছেন বছর দুয়েক আগে। তারপর থেকে গড়িয়াহাটের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তিনি। একাকীত্ব দূর করতে ২০১৭ সালে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেখানে পরিচয় হয় মনীশের সঙ্গে। ফেসবুকের বন্ধুত্ব গড়ায় হোয়াটসঅ্যাপেও। মণীশ একদিন ওই মহিলাকে জানায় তাঁর জন্য ইংল্যান্ড থেকে কিছু উপহার পাঠাচ্ছে। আর এই সূত্রেই শুরু হয় প্রতারণার খেলা।
ওই উপহার কাস্টমস থেকে ছাড়ানোর জন্য কর হিসেবে মণীশ মহিলাকে কিছু টাকা জমা দিতে বলে। সেলিম খান নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ৪৫ হাজার টাকা জমা দিতে বলা হয়। গত ৮ মার্চ সেই টাকা জমা করেন ওই মহিলা। এরপর মণীশ মহিলাকে জানায়, উপহারের পার্সেলে রয়েছে ৭০ হাজার পাউন্ডের গয়না। কিন্তু সেই গয়নার খোঁজ পেয়ে গেছে ভারতের কাস্টমস অফিসাররা। তাই সেই গয়না পেতে স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে আরও টাকা জমা দিতে হবে। অভিযুক্তের কথায় বিশ্বাস করে দফায় দফায় মোট ১১ টি অ্যাকাউন্টে ৯০ লাখ টাকা জমা দেন মহিলা। কিন্তু তারপরেও উপহার না পেয়ে তাঁর সন্দেহ হয়। বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন। এরপরই লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর পার্সেলে উপহার পাঠানোর নাম করে প্রতারণার একাধিক ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে। অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।