দুর্গাপুর, 21 ডিসেম্বর: পুলিশের তাড়া খেয়ে পালানোর সময় গতি বাড়ায় ইটবোঝাই ট্রাক্টর ৷ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকের উপর উল্টে যায় সেটি । এই ঘটনায় বাইক আরোহী মহিলার মৃত্যু ৷ আহত শিশু-সহ 2 জন । ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় দুর্গাপুর লিঙ্ক রোডে ৷ পথ অবরোধ করে ভাঙচুর চালায় ক্ষুব্ধ জনতা ৷ বাধা দিতে এলে পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় বচসা ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত মহিলার নাম রণেত পারভিন (25)। শিশুকে ডাক্তার দেখিয়ে স্বামী শেখ সাবিরের সঙ্গে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ নিউ স্টিল পার্কে যাওয়ার রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা । সেই সময় হঠাৎই ওই ট্রাক্টরটি প্রচন্ড গতিতে তাঁদের দিকে আসতে থাকে ৷ এরপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের বাইকের উপর উল্টে যায় । আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ সাবিরের স্ত্রীকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । শিশু ও মৃতার স্বামীও গুরুতর আহত।
এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি ৷ লিঙ্ক রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা ৷ পুলিশের ত্রিপল টাঙানো ক্যাম্পেও চলে ব্যাপক ভাঙচুর । পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় দুর্গাপুর থানার নিউ স্টিল পার্ক রোডে ।
প্রত্যক্ষদর্শী শেখ রশিদ ও ডা: মহম্মদ গুলসনের অভিযোগ, "এখানে দিবারাত্রি তোলাবাজি চলে পুলিশের । আজও পুলিশ তাড়া করছিল । সেই জন্যই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় সেটি । পুলিশের এই তোলা আদায়ের জন্যই আজ মৃত্যু হল ওই মহিলার ৷ আমরা চাইছি এসব বন্ধ হোক ।" স্থানীয়দের অভিযোগ, এই রাস্তাতে ট্রাফিক পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারা রাস্তার উপর তোলাবাজি চালান ।"
উল্লেখ্য, একই রাস্তাতে এর আগেও ট্রেলারের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার এক স্থায়ী কর্মীর মৃত্যু হয় ৷ সেই সময়েও বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয়রা ৷ মাঝে কিছুদিন ভারী পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে ৷ দুর্গাপুরের এই লিঙ্ক রোড ধরেই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্মীদের যাতায়াত ৷
রাস্তাটি দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর সঙ্গে 19 নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগের অন্যতম প্রধান রাস্তা । স্বাভাবিকভাবেই এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষ মাঝখানেক এই রাস্তা তাদের নিজস্ব রাস্তা এবং এ রাস্তায় ভারী পণ্যবাহী যান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ৷ কিন্তু, তারপরও কীভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷