ETV Bharat / state

মেট্রো চিঠি দিলে তবেই ছাড়ব বাড়ি, বলছেন বউবাজারের বাসিন্দারা

বাড়ির অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বউবাজারের গৌর দে লেনের বাসিন্দাদের মধ্যে ৷ জমি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই বাড়ি ছাড়ছেন না সেখানকার বাসিন্দারা ।

বউবাজার
author img

By

Published : Sep 7, 2019, 8:41 PM IST

কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: মেট্রো কর্তৃপক্ষ দখল করে নিতে পারে জমি । এই আশঙ্কায় ঘর ছাড়ছেন না বউবাজারের গৌর দে লেনের বাসিন্দারা । তাঁদের দাবি, তাঁদের যদি বাড়ি ছাড়তে হয় তাহলে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে প্রত্যেক বাসিন্দার নামে চিঠি দিতে হবে । তারপরেই বাড়ি ছাড়বেন তাঁরা ।

গতকাল থেকেই বাড়ির অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে গৌর দে লেনের বাসিন্দাদের মধ্যে ৷ জমি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই বাড়ি ছাড়ছেন না সেখানকার বাসিন্দারা । গৌর দে লেনের 2-বি বাড়ির বাসিন্দা সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সন্ধ্যেবেলা মেট্রোর লোকেরা বলে বাড়ি ঠিক আছে, জমি স্টেবল হয়ে গেছে । আবার রাতে বলে পুরো গলি খালি করতে হবে । আমরা বাড়ি ছাড়ব না । আমরা কোথায় গিয়ে উঠব এবং সেটা কতদিনের জন্য উঠব এগুলো লিখিতভাবে জানাতে হবে । তবেই আমরা বাড়ি ছাড়ব ৷"

আজ মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন গৌর দে লেনের বাসিন্দারা ৷ সেখানে মেট্রো কর্তৃপক্ষ গৌর দে লেনের বাসিন্দাদের জমি-বাড়ির নথিপত্র তৈরি রাখতে বলেছে । মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ওই এলাকার মাটি পরীক্ষা করবে, সেখানকার মাটি শক্ত হয়ে গেলে গৌর দে লেন খালি করা হবে না ৷

অন্যদিকে, আজ দুর্গা পিতুরি লেনের পিছন দিকের বাড়িগুলো থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় বাসিন্দাদের । 30-45 মিনিটের মতো সময় দেওয়া হচ্ছে এক একটি পরিবারকে । তার মধ্যে যাঁরা যতটা পারছেন প্রয়োজনীয় জিনিস বের করে নিয়ে আসছেন । অনেকে জানান, বহু জিনিস পড়ে রয়েছে ঘরের ভিতর । বের করতে পারেননি ৷

দুর্গা পিতুরি লেনের পিছন দিকের বাড়িগুলি থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে যেতে পারলেও সামনের দিকে বাড়িগুলির বাসিন্দাদের আজ খালি হাতেই ফিরে যেতে হয়েছে । বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁদের ।

কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: মেট্রো কর্তৃপক্ষ দখল করে নিতে পারে জমি । এই আশঙ্কায় ঘর ছাড়ছেন না বউবাজারের গৌর দে লেনের বাসিন্দারা । তাঁদের দাবি, তাঁদের যদি বাড়ি ছাড়তে হয় তাহলে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে প্রত্যেক বাসিন্দার নামে চিঠি দিতে হবে । তারপরেই বাড়ি ছাড়বেন তাঁরা ।

গতকাল থেকেই বাড়ির অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে গৌর দে লেনের বাসিন্দাদের মধ্যে ৷ জমি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই বাড়ি ছাড়ছেন না সেখানকার বাসিন্দারা । গৌর দে লেনের 2-বি বাড়ির বাসিন্দা সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সন্ধ্যেবেলা মেট্রোর লোকেরা বলে বাড়ি ঠিক আছে, জমি স্টেবল হয়ে গেছে । আবার রাতে বলে পুরো গলি খালি করতে হবে । আমরা বাড়ি ছাড়ব না । আমরা কোথায় গিয়ে উঠব এবং সেটা কতদিনের জন্য উঠব এগুলো লিখিতভাবে জানাতে হবে । তবেই আমরা বাড়ি ছাড়ব ৷"

আজ মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন গৌর দে লেনের বাসিন্দারা ৷ সেখানে মেট্রো কর্তৃপক্ষ গৌর দে লেনের বাসিন্দাদের জমি-বাড়ির নথিপত্র তৈরি রাখতে বলেছে । মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ওই এলাকার মাটি পরীক্ষা করবে, সেখানকার মাটি শক্ত হয়ে গেলে গৌর দে লেন খালি করা হবে না ৷

অন্যদিকে, আজ দুর্গা পিতুরি লেনের পিছন দিকের বাড়িগুলো থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় বাসিন্দাদের । 30-45 মিনিটের মতো সময় দেওয়া হচ্ছে এক একটি পরিবারকে । তার মধ্যে যাঁরা যতটা পারছেন প্রয়োজনীয় জিনিস বের করে নিয়ে আসছেন । অনেকে জানান, বহু জিনিস পড়ে রয়েছে ঘরের ভিতর । বের করতে পারেননি ৷

দুর্গা পিতুরি লেনের পিছন দিকের বাড়িগুলি থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে যেতে পারলেও সামনের দিকে বাড়িগুলির বাসিন্দাদের আজ খালি হাতেই ফিরে যেতে হয়েছে । বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁদের ।

Intro:কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: মেট্রো কর্তৃপক্ষ দখল করে নিতে পারে জমি। এই আশঙ্কায় ঘর ছাড়ছেন না বৌবাজারের গৌর দে লেনের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, তাঁদের যদি বাড়ি ছাড়তে হয় তাহলে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে প্রত‍্যেক বাসিন্দার নামে চিঠি লিখে জানাতে হবে। তারপরেই বাড়ি ছাড়বেন তাঁরা।


Body:গতকাল থেকেই বাড়ির অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে গৌর দে লেনের বাসিন্দাদের মধ্যে। অভিযোগ, মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাঁদের গতকাল থেকে একবার বলছে বাড়িতে থাকতে, একবার বলছে বাড়ি খালি করতে। এই বিষয়ে গৌর দে লেনের 2B বাড়ির বাসিন্দা সোমনাথ ব‍্যানার্জি বলেন, "একবার সাড়ে 6টার সময় বলছে বাড়ি ঠিক আছে, জমি স্টেবল হয়ে গেছে। আবার সাড়ে 8টার সময় বলছে, জল আর জমছে না, শক্ত পাঁচিল তোলা হয়ে গেছে। আবার 10টা 10 নাগাদ এসে বলছে পুরো গলি খালি করতে হবে। এটা কালকে রাতের ঘটনা। আমরা যাইনি। সবাই এখানে বসে ছিলাম। বাড়ি ছাড়ব না। ওদের প্রপার ডকুমেন্ট দিতে হবে, বাড়ির ঠিকানা, নাম দিয়ে প্রপার ডকুমেন্টেশন, আমাদের জিনিসপত্রের দায়িত্ব, আমরা কোথায় গিয়ে উঠব এবং সেটা কতদিনের জন্য উঠব এগুলো জানাতে হবে। এগুলো লিখিত দিতে হবে।"

আজকে এই দাবি-দাওয়া তুলে নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোয়েনকা কলেজে গিয়ে বৈঠক করেন গৌর দে লেনের পরিবাররা। সেখানে কি মেট্রো কর্তৃপক্ষ ঘর ছেড়ে যেতে বলেছে? সোমনাথ ব‍্যানার্জি বলেন, "না। ওনারা বলেছেন আধার কার্ড, কাগজপত্র রেডি রাখুন। যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন। আমরা মেমোরেন্ডাম নিয়ে গেছিলাম। বলেছি, এই এই পয়েন্টগুলোর উপর বেস করে চিঠি তৈরি করুন। নামে নামে চিঠি করতে হবে। তাহলে আমরা বাড়ি ছাড়ব। কিন্তু, মালের দায়িত্ব আপনাদের, আমাদের নয়। আমাদের দাবি ওরা মেনে নিয়েছে। মেট্রোরেল বলেছে, যদি মাটি পরীক্ষা করে দেখি মাটি শক্ত হয়ে গেছে তাহলে আর ছাড়তে হবে না।"

জমি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার থেকেই বাড়ি ছাড়ছেন না গৌর দে লেনের বাসিন্দারা। এ বিষয়ে সোমনাথ ব‍্যানার্জি বলেন, "আগে স‍্যাকরা পাড়া খালি হয়েছে, দুর্গাপিতুরি লেন খালি হয়েছে, গৌর দে লেন খালি হচ্ছে, মদন দত্ত লেন খালি হবে। এই জায়গাটাকে এক জায়গায় করে মেট্রো দখল করে নেবে। ওরা পুরোটাই দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে।" গোরাঙ্গ ব‍্যানার্জি বলেন, "নিতে পারে নয়। নেবেই। মুখে বলুক আর না বলুক।"

গোটা ঘটনায় সরকার ও মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষুব্ধ গৌর দে লেনের বাসিন্দারা। ওখানকার এক মহিলার স্পষ্ট বক্তব্য, যার ছাদ যাচ্ছে তার যাচ্ছে। যারা এখানে থেকে করে খায় তাঁরা কোথায় যাবে? তাঁদের কী দেবে সরকার? সরকার মাথা থেকে ছাদ কেড়ে নিচ্ছে, ঘোড়া দেবে সরকার। মাধবী রায় বলেন, "আমাদের এটা 48 নম্বর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পর্যন্ত এখনও ঢোকেনি।"

একদিকে বিভ্রান্ত ও ক্ষুব্ধ গৌর দে লেনের বাসিন্দারা। অন্যদিকে, আজ দুর্গাপিতুরি লেনের পিছন দিকের বাড়িগুলো থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় বাসিন্দাদের। 30-45 মিনিটের মতো সময় দেওয়া হচ্ছে এক একটি পরিবারকে। তার মধ্যে যাঁরা যতটা পারছেন জিনিস বের করে নিয়ে আসছেন। এই রকম ভাবেই জিনিসপত্রের সঙ্গে ঘরের গোপাল ঠাকুরকে নিয়ে বেরিয়ে এসে হাতে গোপাল নিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেন এক মহিলা। তাঁর সঙ্গে থাকা মধ‍্যবয়স্ক মহিলাও কেঁদে ফেলেন। যতটা বয়ে নিয়ে আসা সম্ভব ততো জিনিসপত্র বের করে নিয়ে যান বাসিন্দারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, তারপরেও বহু জিনিস পড়ে রয়েছে ঘরের ভিতর।

দুর্গাপাতুরি লেনের পিছন দিকের বাড়িগুলি থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে যেতে পারলেও সামনের দিকে বাড়িগুলির বাসিন্দাদের আজ খালি হাতেই ফিরে যেতে হয়েছে। ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। তাঁরা আশা করছেন, আগামীকাল রবিবার হয়তো তাঁরা আরও কিছু জিনিসপত্র বের করে নিয়ে আসতে পারবেন। 94 বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা দীপ মালাকার বলেন, "ঘর ছেড়েছি, বলতে গেলে প্রায় রাস্তায় এসে পড়েছি। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ আপাতত একটা হোটেল দিয়েছে থাকার জন্য। কিন্তু, জানি না কতদিন ওখানে থাকতে পারব। অফিস, চাকরিজীবন সবই বন্ধ। কারোরই মাথা ঠিক নেই। খাওয়া-দাওয়া-ঘুম সবই উড়ে গেছে। সবথেকে বড় কথা নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় এতদিন পড়ে থাকতে খুবই অস্বস্তিকর লাগছে।" 10 দুর্গাপিতুরি লেনের বিকাশ সাউ বলেন, "এখন পুজোর টাইম। আমাদের পুজো-টুজো সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমরা টেনশনে আছি। যত মালপত্র ভিতরে রয়েছে তা যেন বের করে নিতে পারি।" প্রত্যেকেই আশা করছেন আগামীকাল হয়তো আবার জিনিসপত্র বের করে নিয়ে আসার সুযোগ দেওয়া হবে।

আজ কিছু জিনিসপত্র বের করার আশায় উপস্থিত হয়েছিলেন বাবা-ছেলে। দুর্গাপিতুরি লেনের 6C-র বাসিন্দা ছেলে দিপ‍্যমান দত্ত বলেন, " প্রথম দিন তো খুবই লিমিটেড সময় দেওয়া হয়েছিল। কিছুই বার করে আনতে পারিনি। তারপরের দিন অনেকটা সময় দিয়েছিল। তখন মোটামুটি 20 থেকে 30 শতাংশ জিনিস বের করেছি। 70 শতাংশ জিনিস যেমন, টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার, খাট, আলমারির মতো মোটামুটি সব জিনিসই রয়ে গেছে। তার থেকে বড় কথা নিয়ে গিয়ে কোথায় রাখব? এখন চাইছি, বাড়িগুলো যেন ভাঙা না পড়ে। আমাদের নতুন বাড়ির কোনো দরকার নেই। আমাদের পুরনো বাড়িই যথেষ্ট ভালো। আমরা টিভিতে দেখেছি ভূমিকম্প, বন‍্যা দুর্গতদের এরকম হয়। সেটা আমরা প্রথম এক্সপেরিয়েন্স করলাম। ভগবান করুক এই রকম ফিল যেন আর কারোর না হয়।" বাবা চণ্ডীদাস দত্ত বলেন, "এর চেয়ে ভূমিকম্প হওয়া ভালো ছিল। সলীল সমাধি, ঝামেলা খতম।"


Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.