কলকাতা, 15 এপ্রিল : ঐতিহ্যবাহী সেই লালখাতা। মলাট ওলটালেই প্রথম পৃষ্ঠায় পয়সা ও সস্তিক চিহ্ন আঁকা। কত তার নাম! জাবদা, খতিয়ান, খানাখরচা, ডাকবই। কিন্তু, ওই পর্যন্তই। রোজকার হিসেব এখন আর তাকে রাখতে হয় না। ডিজ়িটালের যুগে তার জায়গা নিয়েছে কম্পিউটার। অগত্যা ঐতিহ্যের মান রাখতে নববর্ষের দিনই দেখা যায় তাকে। আর বাকি সময়ে ঠাঁই সেই কুলুঙ্গিতে।
নববর্ষের দিন হালখাতা কিনে তার পুজো করা নিয়ম। সারা বছরের হিসেব-নিকেশ ওই খাতায় জমা থাকে। তারপর নতুন বছরে ফের নতুন খাতা। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে গুরুত্ব হারিয়েছে হালখাতা। বাঙালির হালখাতার বাজারে থাবা বসিয়েছে কম্পিউটার। এখন সব হিসেব সেই রাখে। ডিজ়িটালের যুগে তাই লালখাতা টিকে রয়েছে শুধুই নিয়মের প্রশ্রয়ে।
বিক্রিবাট্টা এখন তলানিতে। তবু আজও দোকান চালিয়ে যাচ্ছেন কালীঘাটের হালখাতা বিক্রেতা সিদ্ধার্থশঙ্কর ভট্টাচার্য। পুরনো দিনের রোমন্থন শোনা গেল তাঁর গলায়। বলেন, "এক সময় দোকানে নববর্ষের সকালে লাইন পড়ে যেত। ব্যবসায়ীরা আসতেন, হালখাতা নিয়ে যেতেন। সেই লালখাতার কত নাম ছিল। জাবদা, খতিয়ান, খানাখরচা, ডাকবই। এখন সেসব ইতিহাস।"
ক্যালকুলেটর, কম্পিউটারের দাপটে হালখাতা ঠাঁই নিয়েছে ইতিহাসে। গোটা বছরে এই একটা দিনই এখন তার প্রয়োজন। কিন্তু, তাও বা আর কতদিন ? "এখন তো সবকিছুই কম্পিউটার, দাদা। হালখাতা আর কোথায় ?" বিক্রেতার গলায় ঝরে পড়ল আক্ষেপ।