কলকাতা, 24 জুলাই: সবার মাতৃভাষাকে সম্মান জানাতে চায় সিবিএসসি। আর তাই ইংরাজি ভাষার পাশাপাশি আরও 22টা ভাষায় বই প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিল সিবিএসসি বোর্ড। বিজ্ঞপ্তির প্রকাশ করে রবিবার একথা জানিয়েছে বোর্ড । আর বোর্ডের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা সংশয়ে শিক্ষা মহলের একাংশ।
বর্তমানে এনসিআরটি বা সিবিএসসির বই প্রকাশ হয় শুধুমাত্র ইংরাজি ভাষায় । কিন্তু আগামী বছর থেকে বই প্রকাশে বদল আসছে । এবার শুধু ইংরাজিতেই নয়, 22টা মাতৃভাষাতেই মিলবে বই। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়ারা কতটা বাংলা বই পড়তে উৎসাহিত হবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে শিক্ষক মহলে ।
কলকাতার নামকরা এক স্কুলের শিক্ষকের কথায়, "পড়ুয়ারা ইংরেজিতে ক্লাস করবে ৷ পরীক্ষাও দেবে ইংরেজিতে । ফলে বাংলা বই পড়তে ওরা আদৌ কি উদ্যোগী হবে ? যদি উত্তর বাংলায় বা মাতৃভাষায় লেখার নিয়ম করা যায় তাহলে পড়ুয়াদের সুবিধা হবে ।" আবার যেহেতু পরীক্ষা হবে ইংরেজিতে ফলে এই নয়া ব্যবস্থায় পড়ুয়াদের পড়া বোঝাতে ঝক্কি পোহাতে হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে ।
এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় টুইট করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "ভারতীর শিক্ষা ব্যবস্থার নয়া নীতি অনুসারে মাতৃভাষায় শিশুশ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা ব্যবস্থা করেছে সিবিএসই (CBSE) । এই ব্যবস্থা করার জন্য আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাই । জাতীয় শিক্ষা নীতির লক্ষ্য অনুসারে, মাতৃভাষায় স্কুল পড়াশোনা করলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যে আরও ভালো ফল করবে তা বলাই বাহুল্য।"
প্রসঙ্গত, বাংলা বনাম ইংরেজির এই দন্দ বহু পুরনো। সম্প্রতি লরেটো কলেজের এক বিজ্ঞপ্তি ঘিরে প্রশ্ন উঠেছিল। বাংলা মাধ্যম থেকে যাওয়া কোনও পড়ুয়া সেখানে পড়তে পারবে না বলেই জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। লরোটো যেহেতু ইংরেজি মাধ্যম তাই বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়ারা যাতে ভর্তির জন্য আবেদন না করে সেই কথাই নির্দেশিকার মারফতে জানিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই নির্দেশ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল শিক্ষা মহল থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমে। শেষমেশ তা প্রত্যাহার করে নেয় লরেটো কর্তৃপক্ষ। এমনই আবহে সিবিএসসির নির্দেশিকা ঘিরে নয়া জটিলতা তৈরি হল শিক্ষা মহলে।
আরও পড়ুন : সিলেবাসে বদল, দ্বাদশ শ্রেণির এনসিইআরটির বইতে ব্রাত্য 'বাবর-আকবর-শাহজাহান'রা !