কলকাতা, 23 জুন : শুধু বাংলাদেশ নয় । নেপাল ও ভুটানের বেশ কিছু চক্রেও সক্রিয় ছিল চিনা গুপ্তচর সন্দেহে ধৃত হান জুনেই । তদন্তে এমনই সব তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে ।
এরপর হান কোথায় হ্যাকিংয়ের ছক কষছিল, সেই সব সূত্রগুলিকে একসঙ্গে যোগ করার চেষ্টা করছে গোয়েন্দারা । তদন্তকারী আধিকারিকদের সন্দেহ, বেঙ্গালুরুর আলফা ডিজাইন সংস্থাকে হ্যাক করার চেষ্টায় ছিল হান । প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তাদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আলফা ডিজাইন সংস্থাকে দিয়ে করায় । হান আপাতত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হেফাজতে রয়েছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, "শেষ কয়েকদিনে হানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা বেশ কিছু ক্লু পেয়েছি । যা থেকে অনুমান করা যেতে পারে, বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল এবং ভুটানেও তার নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল । সে বেশ কয়েকবার এই দুই দেশে গিয়েছিল । বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানে গা ঢাকা দিয়ে থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করে থাকতে পারে সে । এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ।"
আরও পড়ুন : কালিয়াচকে ধৃত চিনা নাগরিকের কাছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক তথ্য, চরবৃত্তির সন্দেহ
একইসঙ্গে হানকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে একটি চমকে দেওয়ার মত প্রশ্ন উঠে এসেছে । যে সব সংস্থা দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করে তাদের ওয়েবসাইট এই ধরনের হ্যাকিংয়ে পারদর্শী গুপ্তচরদের থেকে কতটা সুরক্ষিত ? তদন্তকারী আধিকারিকরা সন্দেহ করছেন, হানের পরবর্তী লক্ষ্য ছিল বেঙ্গালুরুর সংস্থা আলফা ডিজাইনের ওয়েবসাইট হ্যাক করা । এই সংস্থাটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আউটসোর্স অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গে যুক্ত ।
কীভাবে এই ধরনের সংস্থাগুলি নিজেদের ওয়েবসাইটকে সুরক্ষিত রাখবে ?
এথিক্যাল হ্যাকার মহম্মদ রেজ়া বলছেন, "এই ধরনের সংস্থাগুলি, যারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে সরাসরি অথবা আউটসোর্সের কাজ করে, নিয়মিতভাবে তাদের ওয়েবসাইটগুলিকে হ্যাকিং থেকে সুরক্ষিত রাখতে একাধিক সাইবার বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা উচিত । যদি এই ওয়েবসাইটগুলির ডিজিটাল সিস্টেম নিয়মিত আপডেট হয় তবে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায় ।"
ইতিমধ্যেই হানের আইফোনের পাসওয়ার্ডের লক খুলে ফেলেছেন গোয়েন্দারা । কিন্তু ল্যাপটপের ভিতরে কী রয়েছে, তা এখনও গোয়েন্দাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি । আইফোন আনলক হওয়ার পর দেখা গিয়েছে, হান তার মোবাইল থেক একাধিক বিদেশি নম্বরে ফোন করত ও হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ পাঠাত । সূত্র মারফত এমনই জানা গিয়েছে ।
এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, "সে ইংরেজি ও মান্দারিন উভয় ভাষাতেই কথা বলত । একাধিক ই-মেইল আইডি ব্যবহার করত । তার মোবাইলে সেভ করা নম্বরগুলির মধ্যে বেশ কিছু নেপালের ।"
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরাও নিরন্তর যোগাযোগ রাখছেন স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে । আগামী দিনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরাও হানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন ।