মিনাখাঁ, 23 ডিসেম্বর: নেই কোনও স্কুলঘর ! অগত্যা বাড়ির উঠোনেই চলছে পড়ুয়াদের নিয়ে পঠন-পাঠন ৷ এমনকি, মিড-ডে মিলের রান্নাও হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে ! আর বৃষ্টি মানেই স্কুল বন্ধ ৷ এমনই ছবি উত্তর 24 পরগনার মিনাখাঁ বগিহুলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ৷ অভিযোগ, সব জেনেও নীরব প্রশাসন ৷ আর পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন কোনও অভিযোগ তাদের কাছে নেই ৷
মিনাখাঁ বগিহুলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হয়েছিল বছর দশকে আগে ৷ শুরুর দিন থেকে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র কোনও দিন স্থায়ী আস্তানা পায়নি ৷ লোকজনের বাড়ির বারান্দায় পড়াশোনা হতো ৷ মিড-ডে মিলের রান্নাও হতো সেভাবেই ৷ কিন্তু, সম্প্রতি সেই আস্তানা টুকুও আর নেই ৷ অগত্যা বাড়ির উঠোনে প্লাস্টিক বিছিয়ে পড়াশোনা চলছে ৷ আর তার পাশেই মাটির উনুনে মিড-ডে মিলের রান্নাও হচ্ছে ৷
এমনই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হওয়া রান্না করা খাবার খাচ্ছে পড়ুয়া থেকে প্রসূতি সকলেই ৷ স্থানীয় লোকজন থেকে শুরু করে অঙ্গনওয়াড়ির শিক্ষিকা সকলের দাবি, তাঁরা পাকা স্কুলঘর নির্মাণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করেছেন ৷ কিন্তু, 10 বছর ধরে সেই আবেদনের কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ ৷ আর সেই নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে ৷
এবিষয়ে মিঠু মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "গত দশ বছর ধরে খোলা আকাশের নীচেই এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে ৷ প্রশাসনের কাছে বহুবার আবেদন করা হয়েছে ৷ কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি ৷ ঝড়-বৃষ্টি হলে সমস্যা আরও বাড়ে ৷ সেই সময় অভিভাবকরা পড়ুয়াদের আর পাঠান না পড়াশোনার জন্য ৷"
মিনাখাঁর ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিক্ষিকা জয়ন্তী দাস বলেন, "অনেকদিন হয়ে গেল, আজও একটা স্কুলঘর পায়নি আমরা ৷ বাধ্য হয়ে তাই রোদ-বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নীচে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন চালাতে হচ্ছে । বাচ্চাগুলির অবস্থা দেখে ভীষণ কষ্ট পাই । সকলেই এই দুরবস্থার কথা জানে ৷ পঞ্চায়েত সমিতিকে জানিয়েছি ৷ তবুও, হাল ফেরাতে উদ্যোগ নেয়নি ৷"
তবে, এই অভিযোগ কার্যত খারিজ করে দিলেন মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাইফুদ্দিন মোল্লা ৷ তাঁর দাবি, "আমার মিনাখাঁ এলাকায় যতগুলো অঙ্গনওয়াড়ি আছে, সবই ঠিকঠাক চলছে ৷ স্কুলঘর ছাড়া এমন কোনও অঙ্গনওয়াড়ি চলছে কি না, আমার জানা নেই ৷ আপনাদের কাছে শুনলাম প্রথম ৷ আগে কেউ অভিযোগও করেনি ৷ এবার জানতে পেরেছি যখন, শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিককে নিয়ে গিয়ে খোঁজ নেব ৷ সত্যি এমনটা হলে, অঙ্গনওয়াড়ির স্থায়ী কেন্দ্র তৈরি করে দেওয়া হবে ৷"