চুঁচুড়া, 23 ডিসেম্বর: কলকাতা থেকে হাওড়ায় পৌঁছে গিয়েছে মেট্রো রেল । এবার শহরের এই লাইফলাইনের গন্তব্য হুগলি ! হুগলি পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সোমবার জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনার পর নিজেই একথা জানিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্র দয়া দেখালে চালু হবে ব্যান্ডেল পর্যন্ত মেট্রো ।
এই দাবিতে কেন্দ্রের কাছে তিনি চিঠি চালাচালি করছেন বলে জানিয়েছেন রচনা ৷ পাশাপাশি, আগামী দিনে আজমের শরিফে যাওয়ার জন্য ব্যান্ডেল থেকে ট্রেনের ব্যবস্থা করতে তিনি রেলমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন বলেও জানান হুগলির সাংসদ ৷
সোমবার তাঁর সাংসদ এলাকায় উন্নয়নের কাজ নিয়ে জেলাশাসক মুক্তা আর্যের কাছে আলোচনা করেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই বৈঠকের পরই হুগলিতে মেট্রোর সম্প্রসারণের জন্য তিনি তৎপর হয়েছেন বলে জানালেন হুগলির সাংসদ ৷ এবিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন বলে জানান ৷
এদিন রচনা সাংবাদিকদের বলেন, "মেট্রোটা যদি চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল পর্যন্ত আনতে পারি তবে মানুষের ভীষণ উপকার হয় । সেটা নিয়ে চিঠিপত্র চলছে । এটা একটা বড় ব্যাপার । এটা কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয় । সেটা নিয়ে আওয়াজ তোলা হচ্ছে । সেই বিষয় নিয়েও জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হল । ডিএম বলেছেন, তা যদি করা যায় তাহলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন । রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে আমি চিঠি দিয়েছিলাম, উনি তাঁর রিপ্লাই দিয়েছেন । এটা সবথেকে বড় কথা । উনি বলেছেন, এব্যাপারে কীভাবে এগোনো যায় সেটা দেখছেন । মেট্রোর সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিষয় থাকলে এটাও দেখতে হবে যে, কোথায় কীভাবে তা করা যায় ।"
হুগলি পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের ব্যাপারে স্থানীয় সব সাংসদকে মিলিতভাবে এগোতে হবে বলে এদিন জানান রচনা ৷ তাঁর কথায়, "এটাতো সরাসরি ব্যান্ডেল শুধু নয়, মাঝে শ্রীরামপুর আছে, হাওড়া আছে । হাওড়ায় রয়েছেন প্রসুন ব্যানার্জি, শ্রীরাপুরে রয়েছেন কল্যাণ ব্যানার্জি ৷ সবার সঙ্গে মিলিতভাবে এটা করতে হবে । আমার পক্ষে যতটা সম্ভব আমি চেষ্টা করব মানুষের জন্য ।"
এবিষয়ে তিনি কি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন ? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে রচনা বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এখনও কথা হয়নি ৷ এ বিষয়ে মন্ত্রীরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে যদি বিষয়টা মিটে যায় তাহলে আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার প্রশ্ন নেই । এটা কেন্দ্রের হাতে, তারা যদি একটু দয়াশীল হন, দয়া দেখান, তাহলে আমরা লড়তে পারি ।"
এদিন তৃণমূল সাংসদ বলেন, "আমার একবার সুযোগ হয়েছিল সংসদে বলাগড়ের ভাঙন নিয়ে বলার, বলেছি । আবার চেষ্টা করছি ৷ সুযোগ পেলেই মেট্রো নিয়ে ও মানুষের অন্যান্য দাবি নিয়ে বলব ।" তবে সংসদে আওয়াজ তুলতে না পারলেও চিঠির মাধ্যমে কেন্দ্রকে কিছু জানালে তার উত্তর পাওয়া যায় বলে এদিন জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ।
তিনি এদিন আরও জানান, "আরেকটা প্রোপোজাল জমা দিয়েছি ৷ যাঁরা আজমের শরিফ যান, তাঁদের জন্য ব্যান্ডেলে একটা যদি ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায় । যাঁরা আজমের শরিফ যান, তাঁদের জন্য ব্যান্ডেল থেকে কোনও ট্রেন নেই ৷ তাঁদের বর্ধমান নয়তো কলকাতা থেকে ট্রেন ধরতে হয় । চেষ্টা করছি যাঁরা আজমের শরিফ যেতে চান, তাঁদের জন্য ব্যান্ডেল থেকে যদি একটা ব্যবস্থা করা যায় ।"
এছাড়াও এদিন এলাকার উন্নয়নের কাজ নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি জানান, কয়েকটি জায়গায় কাজ শুরু হয়েছে । মানকুণ্ডুতে মানসিক হাসপাতালে, ধনিয়াখালি হাসপাতালে কাজ চলছে ।
রচনার কথায়, "গ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসকের একটা সমস্যা আছে । আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব । যাতে কিছু ভালো যোগ্য চিকিৎসক যাঁরা আছেন, তাঁরা শুধু শহরকেন্দ্রিক না ভেবে জেলা নিয়ে ভাবেন । গ্রামের অনেক ডাক্তার আছেন যাঁরা খুবই ভালো । তাঁরা যদি গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যান, তাহলে গ্রামের লোকদের কে দেখবেন ? তাই আমি চাই, ভালো ভালো ডাক্তাররা আসুন গ্রামের হাসপাতালে । বড় বড় হাসপাতালগুলো আমরা তৈরি করছি । পরিষেবাই যদি দিতে না পারি, তাহলে কোনও লাভ নেই ৷"