কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর: ফের বিরল অস্ত্রোপচারে নজির গড়ল কলকাতার সরকারি হাসপাতাল। এসএসকেএম হাসপাতালে জটিল অস্ত্রপচারে বাঁচল একরত্তির প্রাণ। এক বিরল টিউমার অস্ত্রোপচার করে বর্তমানে সুস্থ দক্ষিণ 24 পরগনার একরত্তি। তিনমাসের ওই শিশু দক্ষিণ 24 পরগনার মথুরাপুরের বাসিন্দা। তার ওজন ছিল প্রায় তিন কেজি। কিন্তু এই ওজন পুরোপুরি তার নয়। তার শরীরে বাসা বেঁধেছিল বিরল এক টিউমার। যা ঘিরে রীতিমতো ভয় ধরে গিয়েছিল গোটা পরিবারের। তবে বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ সে।
জন্মের পর থেকে কিছুতেই ওজন বাড়ছিল না তিনমাসের ওই খুদের। খাওয়ার ইচ্ছাও একেবারে ছিল না তার। তবুও ফুলে উঠত পেট। এছাড়াও ছিল শ্বাসজনিত সমস্যা। তাই নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে আসেন ওই খুদের পরিবার। একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায় তার শরীরে পেটের অংশে রয়েছে প্রকাণ্ড মাংসপিণ্ড। যার চাপে গুটিয়ে গিয়েছিল খাদ্যনালি। কিডনি নেমে গিয়েছিল কুঁচকির কাছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই ধরণের টিউমারকে বলা হয় 'রেট্রোপেরিটোনিয়াল টেরাটোমা'।
এই রোগ 'রেট্রোপেরিটোনিয়াল টেরাটোমা' একটি গ্রিক শব্দ ৷ যার মানে রাক্ষস ৷ পেটের মধ্যে সেই রাক্ষসই বাসা বেঁধেছিল ওই তিনমাসের শিশুটির ৷ যে কারণেই খাওয়ার কোনও ইচ্ছা দেখা যেত না ওই শিশুর মধ্যে। এসএসকেএম হাসপাতালে এই জটিল অস্ত্রোপচারটি চলে তিন ঘণ্টা ধরে ৷ চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এসএসকেএম হাসপাতালের শিশুশল্য বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর চিকিরসক সুজয় পালের অধীনে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসক জানান, পেটের ভিতর রেট্রোপেরিটোনিয়াম অংশে তার টিউমার হয়েছে।
সাধারণত এই ধরনের মাংসপিণ্ড ওভারি বা ডিম্বাশয়ে দেখা যায়। কিন্তু রেট্রোপেরিটোনিয়াম অংশে চোখে পড়ে না। সেই কারণেই ওই শিশু খেতে পারতেন না। তবে এই ধরনের মাংসপিণ্ড আদতে জার্ম সেল থেকে তৈরি হয়। বিরল এই টিউমারের ভিতরে জল, হাড় অনেক সময় থাকে। এই শিশুটির টিউমার থেকে হাড়ের কিছু অংশ পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানের ওই শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ ৷