ETV Bharat / state

ব্যবস্থার দোষ না ভরতিতে অনীহা ? প্রেসিডেন্সিতে স্নাতক স্তরে ভরতির সংখ্যায় উঠছে প্রশ্ন

author img

By

Published : Sep 23, 2020, 7:06 AM IST

চলতি বছর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের প্রবেশিকা পরীক্ষা বাতিল করা হয় কোরোনা পরিস্থিতির কারণে । পরিবর্তে মেধা অর্থাৎ বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে স্নাতক কোর্সগুলিতে পড়ুয়া ভরতির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রথম দফার তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায় মেধাতালিকার ভিত্তিতে খুব কম সংখ্যক পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হয়েছে ।

Presidency University
Presidency University

কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর : রাজ্যের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে স্নাতক কোর্সে ভরতির প্রক্রিয়া । এবছর কোরোনা পরিস্থিতিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা নয়, মেধার ভিত্তিতে অর্থাৎ বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ভরতি নেওয়া হচ্ছে । কিন্তু, একদিকে যখন বোর্ড পরীক্ষায় নম্বরের ছড়াছড়িতে বহু পড়ুয়া পছন্দের কলেজে ভরতি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না , তখনই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দফার ভরতির পরে দেখা গেল 16টির মধ্যে 9টি কোর্সে ছাত্র ভরতির সংখ্যা ডবল ডিজিটেও পৌঁছায়নি । যেমন বাংলা ভাষায় স্নাতক অনার্সের 38টি আসনের মধ্যে মাত্র 4টিতে পড়ুয়া ভরতি হয়েছে ৷ ইংরেজিতে 38টি আসনের মধ্যে 8টি আসন পূরণ হয়েছে । স্বাভাবিকভাবেই ভরতির এই সংখ্যা দেখে প্রশ্ন উঠছে , তাহলে কি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতিতে অনীহা দেখা দিচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে ? নাকি এর পিছনে অনলাইন ভরতি ব্যবস্থা দায়ী ?

চলতি বছর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের প্রবেশিকা পরীক্ষা বাতিল করা হয় কোরোনা পরিস্থিতির কারণে । পরিবর্তে মেধা অর্থাৎ বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে স্নাতক কোর্সগুলিতে পড়ুয়া ভরতির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অনলাইনে ভরতি প্রক্রিয়া চালু হয় । 16টি স্নাতক কোর্সের ভরতির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া চলে 18 অগাস্ট থেকে 1 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত । 4 সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় প্রথম প্রভিশনাল মেধাতালিকা । সেই মেধাতালিকার ভিত্তিতে 6 সেপ্টেম্বর থেকে 13 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে ভরতি হন তালিকায় থাকা প্রার্থীরা । 17 সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় প্রভিশনাল মেধাতালিকা । সেই তালিকা প্রকাশের পরই দেখা যায় প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে খুব কম সংখ্যক পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হয়েছে ।

প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে বাংলায় 38টি আসনের মধ্যে 4টি , ইংরেজিতে 38 টি আসনের মধ্যে 8টি , হিন্দিতে 30টি আসনের মধ্যে 6 টি , ইতিহাসে 46টি আসনের মধ্যে 11টি , দর্শনশাস্ত্রে 20 টি আসনের মধ্যে 6টি , রাষ্ট্রবিজ্ঞানে 31টি আসনের মধ্যে 5টি , সোশিওলজিতে 32টি আসনের মধ্যে 5টি , পারফর্মিং আর্টসে 15টি আসনের মধ্যে 1টি , কেমিস্ট্রিতে 53টি আসনের মধ্যে 11 টি , অর্থনীতিতে 53 টি আসনের মধ্যে 23টি আসন পূরণ হয়েছে ৷ এছাড়া ভূগোলে 28টি আসনের মধ্যে 9টি , জিওলজিতে 31টি আসনের মধ্যে 13টি , জীবনবিজ্ঞানে 116টি আসনের মধ্যে 43টি , গণিতে 53টি আসনের মধ্যে 14টি , ফিজ়িক্সে 53টি আসনের মধ্যে 14টি ও স্ট্যাটিস্টিক্সে 28টি আসনের মধ্যে মাত্র 6 টি আসন পূরণ হয়েছে । অর্থাৎ, প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে 16টি স্নাতক কোর্স মিলিয়ে মোট 665টি আসনের মধ্যে পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন 179টি আসনে।

তবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, অনলাইনে ভরতি ব্যবস্থার কারণেই প্রথম দফায় কম পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন । প্রেসিডেন্সির অ্যাডমিশনের নোডাল অফিসার অরবিন্দ নায়েক বলেন , "আমাদের কয়েক বছর ধরে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের মাধ্যমে কাউন্সেলিং হত । তাতে আমরা একটা বিভাগে যত আসন থাকত তার পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি সংখ্যক প্রার্থীকে ডাকতাম । এবার COVID-19-র কারণে কাউন্সেলিং করানো সম্ভব হয়নি । ফলে অনলাইনে ভরতির জন্য আমরা যতগুলি আসন ততজনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছি । কাউন্সেলিং হলে 50টা আসনের জন্য 400 জনকে ডাকতাম । তারপর মেধার ভিত্তিতে 50 জনকে ভরতি নিয়ে নিতাম । কিন্তু, এবার যেহেতু কাউন্সেলিং হচ্ছে না সেক্ষেত্রে যতগুলি আসন তার বেশি প্রার্থীর নাম তালিকায় রাখতে পারছি না । কারণ যদি সবাই উপস্থিত হয়ে যায় তাহলে কী হবে ?"

যদিও এই যুক্তি মানছেন না অনেকেই । অনেকের মতে , প্রেসিডেন্সির মান আগের মতো নেই । তাই পড়ুয়াদের মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতিতে অনীহা দেখা যাচ্ছে । প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন , "এখন লোকের খুব খারাপ ধারণা হয়েছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কে । আমরা যেভাবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়তে চেয়েছিলাম তা হয়নি । এর মান এখন অত্যন্ত নিচে নেমে গেছে। তার ফলেই এখানে ভরতি হচ্ছে না । ভারতবর্ষের 100টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকার মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নেই । শিক্ষার মান অত্যন্ত নিচে নেমে গেছে । অনলাইন তো সবাই করছে। তাদের ক্ষেত্রে তো কোনও সমস্যা হয়নি। আসলে মানুষের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খুব খারাপ ধারণা তৈরি হয়েছে। সেটাই এর কারণ।"

যদিও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, দ্রুতই সব আসন পূরণ হয়ে যাবে । অরবিন্দ নায়েক বলেন , "দু’টো তালিকা প্রকাশ হয়েছে । প্রথমটার ভিত্তিতে ভরতি হয়ে গেছে । দ্বিতীয় তালিকার ভিত্তিতে ভরতি চলছে । আমার মনে হয় তিনটে পর্যন্ত উঠতে পারে। চারেও উঠবে কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।"

কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর : রাজ্যের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে স্নাতক কোর্সে ভরতির প্রক্রিয়া । এবছর কোরোনা পরিস্থিতিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা নয়, মেধার ভিত্তিতে অর্থাৎ বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ভরতি নেওয়া হচ্ছে । কিন্তু, একদিকে যখন বোর্ড পরীক্ষায় নম্বরের ছড়াছড়িতে বহু পড়ুয়া পছন্দের কলেজে ভরতি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না , তখনই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দফার ভরতির পরে দেখা গেল 16টির মধ্যে 9টি কোর্সে ছাত্র ভরতির সংখ্যা ডবল ডিজিটেও পৌঁছায়নি । যেমন বাংলা ভাষায় স্নাতক অনার্সের 38টি আসনের মধ্যে মাত্র 4টিতে পড়ুয়া ভরতি হয়েছে ৷ ইংরেজিতে 38টি আসনের মধ্যে 8টি আসন পূরণ হয়েছে । স্বাভাবিকভাবেই ভরতির এই সংখ্যা দেখে প্রশ্ন উঠছে , তাহলে কি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতিতে অনীহা দেখা দিচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে ? নাকি এর পিছনে অনলাইন ভরতি ব্যবস্থা দায়ী ?

চলতি বছর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের প্রবেশিকা পরীক্ষা বাতিল করা হয় কোরোনা পরিস্থিতির কারণে । পরিবর্তে মেধা অর্থাৎ বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে স্নাতক কোর্সগুলিতে পড়ুয়া ভরতির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অনলাইনে ভরতি প্রক্রিয়া চালু হয় । 16টি স্নাতক কোর্সের ভরতির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া চলে 18 অগাস্ট থেকে 1 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত । 4 সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় প্রথম প্রভিশনাল মেধাতালিকা । সেই মেধাতালিকার ভিত্তিতে 6 সেপ্টেম্বর থেকে 13 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে ভরতি হন তালিকায় থাকা প্রার্থীরা । 17 সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় প্রভিশনাল মেধাতালিকা । সেই তালিকা প্রকাশের পরই দেখা যায় প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে খুব কম সংখ্যক পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হয়েছে ।

প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে বাংলায় 38টি আসনের মধ্যে 4টি , ইংরেজিতে 38 টি আসনের মধ্যে 8টি , হিন্দিতে 30টি আসনের মধ্যে 6 টি , ইতিহাসে 46টি আসনের মধ্যে 11টি , দর্শনশাস্ত্রে 20 টি আসনের মধ্যে 6টি , রাষ্ট্রবিজ্ঞানে 31টি আসনের মধ্যে 5টি , সোশিওলজিতে 32টি আসনের মধ্যে 5টি , পারফর্মিং আর্টসে 15টি আসনের মধ্যে 1টি , কেমিস্ট্রিতে 53টি আসনের মধ্যে 11 টি , অর্থনীতিতে 53 টি আসনের মধ্যে 23টি আসন পূরণ হয়েছে ৷ এছাড়া ভূগোলে 28টি আসনের মধ্যে 9টি , জিওলজিতে 31টি আসনের মধ্যে 13টি , জীবনবিজ্ঞানে 116টি আসনের মধ্যে 43টি , গণিতে 53টি আসনের মধ্যে 14টি , ফিজ়িক্সে 53টি আসনের মধ্যে 14টি ও স্ট্যাটিস্টিক্সে 28টি আসনের মধ্যে মাত্র 6 টি আসন পূরণ হয়েছে । অর্থাৎ, প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে 16টি স্নাতক কোর্স মিলিয়ে মোট 665টি আসনের মধ্যে পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন 179টি আসনে।

তবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, অনলাইনে ভরতি ব্যবস্থার কারণেই প্রথম দফায় কম পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন । প্রেসিডেন্সির অ্যাডমিশনের নোডাল অফিসার অরবিন্দ নায়েক বলেন , "আমাদের কয়েক বছর ধরে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের মাধ্যমে কাউন্সেলিং হত । তাতে আমরা একটা বিভাগে যত আসন থাকত তার পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি সংখ্যক প্রার্থীকে ডাকতাম । এবার COVID-19-র কারণে কাউন্সেলিং করানো সম্ভব হয়নি । ফলে অনলাইনে ভরতির জন্য আমরা যতগুলি আসন ততজনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছি । কাউন্সেলিং হলে 50টা আসনের জন্য 400 জনকে ডাকতাম । তারপর মেধার ভিত্তিতে 50 জনকে ভরতি নিয়ে নিতাম । কিন্তু, এবার যেহেতু কাউন্সেলিং হচ্ছে না সেক্ষেত্রে যতগুলি আসন তার বেশি প্রার্থীর নাম তালিকায় রাখতে পারছি না । কারণ যদি সবাই উপস্থিত হয়ে যায় তাহলে কী হবে ?"

যদিও এই যুক্তি মানছেন না অনেকেই । অনেকের মতে , প্রেসিডেন্সির মান আগের মতো নেই । তাই পড়ুয়াদের মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতিতে অনীহা দেখা যাচ্ছে । প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন , "এখন লোকের খুব খারাপ ধারণা হয়েছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কে । আমরা যেভাবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়তে চেয়েছিলাম তা হয়নি । এর মান এখন অত্যন্ত নিচে নেমে গেছে। তার ফলেই এখানে ভরতি হচ্ছে না । ভারতবর্ষের 100টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকার মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নেই । শিক্ষার মান অত্যন্ত নিচে নেমে গেছে । অনলাইন তো সবাই করছে। তাদের ক্ষেত্রে তো কোনও সমস্যা হয়নি। আসলে মানুষের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খুব খারাপ ধারণা তৈরি হয়েছে। সেটাই এর কারণ।"

যদিও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, দ্রুতই সব আসন পূরণ হয়ে যাবে । অরবিন্দ নায়েক বলেন , "দু’টো তালিকা প্রকাশ হয়েছে । প্রথমটার ভিত্তিতে ভরতি হয়ে গেছে । দ্বিতীয় তালিকার ভিত্তিতে ভরতি চলছে । আমার মনে হয় তিনটে পর্যন্ত উঠতে পারে। চারেও উঠবে কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.