ETV Bharat / state

বারবার গৌড়বঙ্গে বদল হয়েছেন উপাচার্য, পড়ুয়াদের উপর পড়েছে প্রভাব; মানছেন শিক্ষাবিদরা - MALDA VICE CHANCELLOR

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 27, 2024, 6:01 PM IST

Gour Banga University: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অবশেষে স্থায়ী উপাচার্য পেতে চলেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ৷ রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিকে স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষাবিদরা ৷ সেই সঙ্গে স্থায়ী উপাচার্য না থাকলে স্বাভাবিক পঠনপাঠনে যে অসুবিধা হয়, তা নিয়ে রইল ইটিভি ভারতের রিপোর্ট ৷

Gour Banga University
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (নিজস্ব চিত্র)

মালদা, 27 জুলাই: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে 36টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অবশেষে স্থায়ী উপাচার্য পেতে চলেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ও ৷ 2008 সালে পথ চলা শুরু গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৷ আর এই 16 বছরে 8 জন উপাচার্য বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন ৷ কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্যের কেন প্রয়োজন, স্থায়ী উপাচার্য না থাকলে তার প্রভাব কী পড়ে, তাই জানার চেষ্টা করল ইটিভি ভারত ৷

স্থায়ী উপাচার্য পাচ্ছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (ইটিভি ভারত)

বারবার এই উপাচার্য বদলের জেরে প্রভাব পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের উপর ৷ শুক্রবার রাজ্যের মোট 36টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য উচ্চশিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে ৷ সেই তালিকায় রয়েছে উত্তরবঙ্গের আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ৷ রয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও ৷ আর স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করার পর বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধীনস্ত 25টি কলেজের পরিকাঠামো থেকে পঠন-পাঠন, প্রতি ক্ষেত্রেই নতুন গতি আসবে ৷

ইতিমধ্যে আট জন উপাচার্য দ্বায়িত্ব নিয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৷ তাঁদের মধ্যে একমাত্র গোপা দত্ত নিজের চার বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ করেছেন ৷ আরও তিনজন উপাচার্যকে স্থায়ী হিসাবে নিয়োগ করা হলেও তাঁরা কেউ নিজের কার্যকালের মেয়াদ শেষ করেননি ৷ বিভিন্ন কারণে তাঁরা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেন ৷ বাকি চারজনকে অস্থায়ী হিসাবেই নিয়োগ করা হয়েছিল ৷

সম্প্রতি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের বেনজির টানাপোড়েন শুরু হলে রাজ্যপাল নিজের পছন্দের অধ্যাপককে অস্থায়ী উপাচার্য করে পদে বসিয়েছেন ৷ কখনও রাজ্য সরকার ঠিক একই কাজ করেছে ৷ কোনও ক্ষেত্রে কোনও নিয়মের পরোয়া করা হয়নি ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের দড়ি টানাটানি শিক্ষাবিদদের কাছে কার্যত হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছিল ৷ এনিয়ে শিক্ষা মহলে সমালোচনার ঝড়ও বয়ে গিয়েছে ৷ সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে ৷

গত 8 জুলাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের 36টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হবে ৷ আবেদনকারীদের যোগ্যতার বিষয়টিও আদালত থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ আবেদন জমা পড়ার পর সার্চ কাম সিলেকশন কমিটি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিন বা পাঁচজনের প্যানেল তৈরি করবে ৷ সেই প্যানেল থেকেই আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল কাউকে উপাচার্য নিয়োগ করবেন ৷

বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন একজন স্থায়ী উপাচার্য প্রয়োজন ?

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কমিটির প্রাক্তন সদস্য শক্তিপদ পাত্র বলেন, “একমাত্র গোপা দত্তই তাঁর মেয়াদকালের চার বছর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে কাটিয়েছেন ৷ এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকাঠামোগত যেসব উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে, তার সবই মূলত তাঁর আমলে হয়েছে ৷ তিনি ছাড়া আর কোনও উপাচার্য এখানে পূর্ণ সময় কাজ করতে পারেননি ৷"

স্থায়ী উপাচার্যের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "একজন স্থায়ী উপাচার্য জানেন, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করতে এসেছেন ৷ যাঁদের নিয়ে তিনি কাজ করবেন, তাঁরাও জানবেন উপাচার্য চার বছর নিজের চেয়ারে থাকছেন ৷ ফলে উপাচার্যের উপর তাঁদের আস্থা থাকবে ৷ কিন্তু যদি স্থায়িত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ে, রাতের মধ্যে কাউকে চেয়ার ছেড়ে চলে যেতে হতে পারে, তবে সেই উপাচার্য কিছুতেই কোনও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে হাত দেবেন না ৷"

তাঁর কথায়, "গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি সদস্য হিসাবে আমি দেখেছি, অস্থায়ী উপাচার্যরা ভেবে নেন, কোনও গোষ্ঠী তাঁকে সেই পদে বহাল করেছে ৷ বিরুদ্ধ গোষ্ঠী কখনও শক্তিশালী হলেই তাঁকে চেয়ার ছেড়ে চলে যেতে হবে ৷ এমন টানাপোড়েনের মধ্যে কাজ করা কোনও উপাচার্যের ক্ষেত্রে কখনওই বাঞ্ছনীয় নয় ৷ কোনও কারণে মেয়াদ শেষের আগে তাঁকে পুরনো জায়গায় ফিরে যেতে হলে তাঁর ইমেজও খারাপ হয়ে যায় ৷ কিন্তু স্থায়ী উপাচার্যকে সেসব ভাবনা ভাবতে হয় না ৷ শুধুমাত্র আর্থিক দুর্নীতি কিংবা চরিত্রগত কারণেই কোনও স্থায়ী উপাচার্য অপসারিত হতে পারেন ৷ ফলে তিনি নিজের মতো করে পরিকল্পনা ও সহায়ক নির্বাচন করতে পারেন ৷"

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ক্ষেত্রে উপাচার্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ? এই প্রসঙ্গে শক্তিপদ পাত্র বলেন, "উপাচার্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপও অস্বীকার করতে পারেন ৷ উপাচার্যের উপর ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ খুব একটা নির্ভর করে না ৷ তবে পরীক্ষা ব্যবস্থা, বিভিন্ন কলেজে ইনস্পেকশন, কলেজগুলির চাহিদা পূরণ হচ্ছে কি না, সেসব উপাচার্যই দেখেন ৷ ফলে পরোক্ষভাবে পড়ুয়ারাও উপকৃত হন ৷

গৌড় কলেজের অধ্যাপক সুস্মিতা সোমের মতে, “সবসময় স্থায়িত্বের একটা আলাদা মূল্য আছে ৷ যে কোনও কাজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সেটা বোঝা যায় ৷ আগে আমরা অস্থায়ী উপাচার্য কথাটাই শুনিনি ৷ তাঁরা অনেক ভাবনাচিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলির উন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত নিতেন ৷ পরিকাঠামোগত হোক কিংবা পঠনপাঠন, দুটি ক্ষেত্রেই তার প্রভাব পড়ত ৷"

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের স্থায়িত্ব না থাকায়, তা তাঁদের কাজের উপরও প্রভাব ফেলেছে ৷ এনিয়ে অধ্যাপক বলেন, "আমরা গৌড়বঙ্গের ক্ষেত্রে দেখেছি, অনেক উপাচার্য এখানে এসেছেন ৷ কিন্তু তাঁরা নিজের মতো কাজ করতে পারেননি ৷ কারণ, তাঁদের স্থায়িত্বের কোনও নির্দেশনামা নেই ৷ ফলে তাঁরা নিজেদের এক্তিয়ারের বাইরে বেরিয়ে কিছু ভাবেননি ৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনেক কলেজ থাকে ৷ অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, বিশেষ করে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে থাকে, তাই একজন স্থায়ী উপাচার্য ভীষণ প্রয়োজন ৷ আমি বলব, একটা ভবিষ্যৎ সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে একজন স্থায়ী উপাচার্যের খুব প্রয়োজন ৷"

মালদা, 27 জুলাই: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে 36টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অবশেষে স্থায়ী উপাচার্য পেতে চলেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ও ৷ 2008 সালে পথ চলা শুরু গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৷ আর এই 16 বছরে 8 জন উপাচার্য বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন ৷ কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্যের কেন প্রয়োজন, স্থায়ী উপাচার্য না থাকলে তার প্রভাব কী পড়ে, তাই জানার চেষ্টা করল ইটিভি ভারত ৷

স্থায়ী উপাচার্য পাচ্ছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (ইটিভি ভারত)

বারবার এই উপাচার্য বদলের জেরে প্রভাব পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের উপর ৷ শুক্রবার রাজ্যের মোট 36টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য উচ্চশিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে ৷ সেই তালিকায় রয়েছে উত্তরবঙ্গের আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ৷ রয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও ৷ আর স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করার পর বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধীনস্ত 25টি কলেজের পরিকাঠামো থেকে পঠন-পাঠন, প্রতি ক্ষেত্রেই নতুন গতি আসবে ৷

ইতিমধ্যে আট জন উপাচার্য দ্বায়িত্ব নিয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৷ তাঁদের মধ্যে একমাত্র গোপা দত্ত নিজের চার বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ করেছেন ৷ আরও তিনজন উপাচার্যকে স্থায়ী হিসাবে নিয়োগ করা হলেও তাঁরা কেউ নিজের কার্যকালের মেয়াদ শেষ করেননি ৷ বিভিন্ন কারণে তাঁরা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেন ৷ বাকি চারজনকে অস্থায়ী হিসাবেই নিয়োগ করা হয়েছিল ৷

সম্প্রতি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের বেনজির টানাপোড়েন শুরু হলে রাজ্যপাল নিজের পছন্দের অধ্যাপককে অস্থায়ী উপাচার্য করে পদে বসিয়েছেন ৷ কখনও রাজ্য সরকার ঠিক একই কাজ করেছে ৷ কোনও ক্ষেত্রে কোনও নিয়মের পরোয়া করা হয়নি ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের দড়ি টানাটানি শিক্ষাবিদদের কাছে কার্যত হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছিল ৷ এনিয়ে শিক্ষা মহলে সমালোচনার ঝড়ও বয়ে গিয়েছে ৷ সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে ৷

গত 8 জুলাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের 36টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হবে ৷ আবেদনকারীদের যোগ্যতার বিষয়টিও আদালত থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ আবেদন জমা পড়ার পর সার্চ কাম সিলেকশন কমিটি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিন বা পাঁচজনের প্যানেল তৈরি করবে ৷ সেই প্যানেল থেকেই আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল কাউকে উপাচার্য নিয়োগ করবেন ৷

বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন একজন স্থায়ী উপাচার্য প্রয়োজন ?

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কমিটির প্রাক্তন সদস্য শক্তিপদ পাত্র বলেন, “একমাত্র গোপা দত্তই তাঁর মেয়াদকালের চার বছর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে কাটিয়েছেন ৷ এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকাঠামোগত যেসব উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে, তার সবই মূলত তাঁর আমলে হয়েছে ৷ তিনি ছাড়া আর কোনও উপাচার্য এখানে পূর্ণ সময় কাজ করতে পারেননি ৷"

স্থায়ী উপাচার্যের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "একজন স্থায়ী উপাচার্য জানেন, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করতে এসেছেন ৷ যাঁদের নিয়ে তিনি কাজ করবেন, তাঁরাও জানবেন উপাচার্য চার বছর নিজের চেয়ারে থাকছেন ৷ ফলে উপাচার্যের উপর তাঁদের আস্থা থাকবে ৷ কিন্তু যদি স্থায়িত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ে, রাতের মধ্যে কাউকে চেয়ার ছেড়ে চলে যেতে হতে পারে, তবে সেই উপাচার্য কিছুতেই কোনও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে হাত দেবেন না ৷"

তাঁর কথায়, "গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি সদস্য হিসাবে আমি দেখেছি, অস্থায়ী উপাচার্যরা ভেবে নেন, কোনও গোষ্ঠী তাঁকে সেই পদে বহাল করেছে ৷ বিরুদ্ধ গোষ্ঠী কখনও শক্তিশালী হলেই তাঁকে চেয়ার ছেড়ে চলে যেতে হবে ৷ এমন টানাপোড়েনের মধ্যে কাজ করা কোনও উপাচার্যের ক্ষেত্রে কখনওই বাঞ্ছনীয় নয় ৷ কোনও কারণে মেয়াদ শেষের আগে তাঁকে পুরনো জায়গায় ফিরে যেতে হলে তাঁর ইমেজও খারাপ হয়ে যায় ৷ কিন্তু স্থায়ী উপাচার্যকে সেসব ভাবনা ভাবতে হয় না ৷ শুধুমাত্র আর্থিক দুর্নীতি কিংবা চরিত্রগত কারণেই কোনও স্থায়ী উপাচার্য অপসারিত হতে পারেন ৷ ফলে তিনি নিজের মতো করে পরিকল্পনা ও সহায়ক নির্বাচন করতে পারেন ৷"

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ক্ষেত্রে উপাচার্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ? এই প্রসঙ্গে শক্তিপদ পাত্র বলেন, "উপাচার্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপও অস্বীকার করতে পারেন ৷ উপাচার্যের উপর ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ খুব একটা নির্ভর করে না ৷ তবে পরীক্ষা ব্যবস্থা, বিভিন্ন কলেজে ইনস্পেকশন, কলেজগুলির চাহিদা পূরণ হচ্ছে কি না, সেসব উপাচার্যই দেখেন ৷ ফলে পরোক্ষভাবে পড়ুয়ারাও উপকৃত হন ৷

গৌড় কলেজের অধ্যাপক সুস্মিতা সোমের মতে, “সবসময় স্থায়িত্বের একটা আলাদা মূল্য আছে ৷ যে কোনও কাজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সেটা বোঝা যায় ৷ আগে আমরা অস্থায়ী উপাচার্য কথাটাই শুনিনি ৷ তাঁরা অনেক ভাবনাচিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলির উন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত নিতেন ৷ পরিকাঠামোগত হোক কিংবা পঠনপাঠন, দুটি ক্ষেত্রেই তার প্রভাব পড়ত ৷"

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের স্থায়িত্ব না থাকায়, তা তাঁদের কাজের উপরও প্রভাব ফেলেছে ৷ এনিয়ে অধ্যাপক বলেন, "আমরা গৌড়বঙ্গের ক্ষেত্রে দেখেছি, অনেক উপাচার্য এখানে এসেছেন ৷ কিন্তু তাঁরা নিজের মতো কাজ করতে পারেননি ৷ কারণ, তাঁদের স্থায়িত্বের কোনও নির্দেশনামা নেই ৷ ফলে তাঁরা নিজেদের এক্তিয়ারের বাইরে বেরিয়ে কিছু ভাবেননি ৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনেক কলেজ থাকে ৷ অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, বিশেষ করে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে থাকে, তাই একজন স্থায়ী উপাচার্য ভীষণ প্রয়োজন ৷ আমি বলব, একটা ভবিষ্যৎ সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে একজন স্থায়ী উপাচার্যের খুব প্রয়োজন ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.