কলকাতা, 18 জানুয়ারি: আরজি করে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করল সঞ্জয় রায় ৷ শনিবার এজলাসে চিৎকার করে সে বলল, "আমি যদি এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ করতাম, সেক্ষেত্রে আমার গলার রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে পড়ে যেত ৷"
আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পাঁচ মাস ন’দিন মাথায় এই মামলায় রায়দান করল শিয়ালদা আদালত ৷ এদিন রায় ঘোষণার আগে বিচারক মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে বলেন, "সিবিআই আপনার বিরুদ্ধে যে সমস্ত ধারা দিয়েছে সেগুলি দেখে আমার মনে হচ্ছে আপনি দোষী । এই দোষের সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হয় । এছাড়াও হতে পারে যাবজ্জীবনও । বলুন আপনি কোনটা চান?"
সঞ্জয় রায় জবাবে বলে, "হুজুর আমি কোনোরকমের ঘৃণ্য অপরাধ করিনি । আমি যদি এই ঘৃণ্য অপরাধ করতাম তাহলে সেদিন আমি গলায় যে রুদ্রাক্ষের মালা পরেছিলাম তা ছিঁড়ে পড়ে যেত । কিন্তু সেই রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে যায়নি । পড়েও যায়নি । সেই রুদ্রাক্ষের মালা আমি এখনও গলায় পরে রয়েছি ।"
এদিন আদালতে সে আরও দাবি করে বলে, "আইপিএস আধিকারিকরা যে সমস্ত জিনিস আমায় করতে বলেছিল, আমি তাই তাই করেছি । আমি নির্দোষ । আমায় ফাঁসানো হয়েছে ৷ আমি বাঁচতে চাই ।" বিচারক বলেন, "ঠিক আছে আমি সোমবার আপনার কথা শুনব । কিন্তু সোমবার আমি সাজাও ঘোষণা করব ।"
উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও বারবার আদালত চত্বরে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছে সঞ্জয় রায় ৷ এমনকি সে এও দাবি করে, তৎকালীন নগরপাল বিনীত গোয়েল আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৷ কলকাতা পুলিশের কর্মীরাও এই ঘটনায় যুক্ত ৷ তারা সকলে মিলে তাকে ফাঁসিয়েছে ৷ এদিন ফের সে ফাঁঁসানোর তত্ত্ব খাড়া করে দাবি করল, এই ঘটনায় আইপিএস আধিকারিকরা তাকে দিয়ে সমস্ত কাজ করিয়েছে ৷
যদিও গ্রেফতারির পর সঞ্জয় রায়ের বিস্ফোরক মন্তব্য আটকাতে আগেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল পুলিশ ৷ সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত তার গলার স্বর যাতে না পৌঁছয় তাই আদালতে পেশ করার সময় ছিল অতি তৎপরতা ৷ আদালত চত্বরে গাড়ির উপরের ছাদ ও বনেট চাপড়ে আওয়াজ করতে শোনা যায় পুলিশ আধিকারিকদের ৷ কালো কাঁচে ঢাকা গাড়িতে সঞ্জয়কে আনা হয় আদালতে ৷ তবে শনিবার বিচারকের সামনেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইলো সে ৷