দেগঙ্গা, 28 ডিসেম্বর: সংখ্যালঘুদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ লোকসভা নির্বাচনের দিন এগিয়ে আসছে ৷ এদিকে দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপও ঊর্ধ্বমুখী ৷ এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গায় দলীয় সভা থেকে বঙ্গের সংখ্য়ালঘুদের বিশেষ বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির আসন সংখ্যা তৃণমূলের থেকে বেশি হলে তা ভালো হবে না, সচেতন করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷
এদিন চাকলার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কোনও সাম্প্রদায়িক বিভেদকারীর কথা শুনে এমন কাউকে ভোট দেবেন না, যারা বিজেপির টাকায় ঘোঁট পাকাচ্ছে ৷ আর তারা এইসব করছে তৃণমূলের ভোট কাটার জন্যই ৷" রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি ৷ তবে সংখ্যালঘু ভোটের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিপক্ষ আইএসএফ ৷
তিনি আরও বলেন, "কয়েকজন বসন্তের কোকিল এসেছেন ৷ তাঁরা এলাকায় এলাকায় ধর্মীয় সভা করার নাম করে ঘুরে তৃণমূলের ভোট কাটার চেষ্টা করছেন ৷ সংখ্যালঘু বন্ধুরা সাবধান, মনে রাখবেন আপনাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছি আমরাই ৷ আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা আমরাই করেছি ৷ যাঁরা বিজেপির টাকা নিয়ে ভাঁওতা দিচ্ছেন, তাঁদের কথায় ভুলে গেলে সমস্যা বাড়বে ৷"
ধর্ম প্রসঙ্গে মমতা বলেন, "মনে রাখবেন ধর্ম আলাদা, রাজনীতি আলাদা ৷ সব ধর্মকে আমরা ভালবাসি ৷ তবে বাংলাকে তৃণমূলের হাতেই রাখতে হবে ৷" লোকসভা ভোটে বিজেপির আসন সংখ্যা তৃণমূলের থেকে বেশি হলে রাজ্যবাসী সমস্যার মুখে পড়বে বলে সচেতন করেন তিনি ৷
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বাংলায় তৃণমূল আসন কম পেলে বিজেপির অত্যাচার আরও বাড়বে ৷ বিভিন্নভাবে অত্যাচার হবে ৷ সিএএ থেকে শুরু করে এনআরসি সবকিছুই চাপিয়ে দেওয়া হবে ৷ আমি এখনও মনে করি, নাগরিকত্বের বিষয়টি ডিএমদের হাতে ছেড়ে দিলে মানুষের উপকার হবে ৷ যাঁরা এখনও নাগরিকত্ব পাননি, তাঁরা ডিএমদের হাতে ছেড়ে দিন ৷ তাঁরাই দেখে নেবেন ৷ নির্বাচনের আগে খবরদারি করার কী দরকার ?" তিনি আরও বলেন, "মনে রাখবেন, আমরা যতদিন আছি, আপনাদের কেউ কোনও ক্ষতি করতে পারবে না ৷ আমরা আপনাদের পাহারাদার ছিলাম, আছি, থাকব ৷"
সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের পরাজয়ের পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ৷ রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, সংখ্যালঘু সমাজের একাংশ সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ৷ যদিও রাজ্যের শাসকদল এ কথা সরাসরি স্বীকার করেনি ৷ বরং তাদের পাল্টা দাবি, সংখ্যালঘু মানুষের সমর্থন তাদের সঙ্গেই রয়েছে ৷ কিন্তু সংখ্যালঘু সমাজের সমর্থন নিয়ে তৃণমূল যে দুশ্চিন্তায় রয়েছে, তার একটা বহিঃপ্রকাশ এদিন তৃণমূল নেত্রীর কথায় ঘটেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল ৷
আরও পড়ুন: