কলকাতা, 30 অক্টোবর: রাত 10টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া হল রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। আর সোমবার রাতে বাইপাসের ধারের ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছাড়া পেতেই আর সময় নষ্ট করতে চাইল না ইডি ৷ সোজা তাঁকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে চলে গেলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আধিকারিকরা ৷ আপাতত 10 দিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঠিকানা হতে চলেছে এই সিজিও কমপ্লেক্সই ৷
এদিন হাসপাতাল থেকে হেঁটেই বেরিয়ে আসতে দেখা গেল মন্ত্রীকে। হাসপাতালের পিছনের গেট থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসতে দেখা গেলেও পরে মেইন গেট দিয়েই বেরিয়ে আসেন তিনি। এদিন হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে অবশ্য মিডিয়ার ক্যামেরা দেখে হাত নাড়তেও দেখা যায় মন্ত্রীকে। এরপর তাঁকে নিয়ে সোজা সিজিও-এর দিকে চলে যান ইডি আধিকারিকরা ৷ এরপর রাত 10 টা 20 মিনিট নাগাদ জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে সিজিও-তে ঢুকে যান ইডি আধিকারিকরা ৷ এরপর দুই ইডি আধিকারিককে মন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে লিফ্টে করে সোজা উপরে উঠে যেতে দেখা যায় ৷
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডি'র তদন্তকারী অফিসার এবং একজন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার রাত ন'টা নাগাদ হাসপাতালে আসেন। তাদের সঙ্গেই হাসপাতালে আসে ফুলবাগান থানার পুলিশও। এছাড়াও মন্ত্রীর মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিক এবং দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক সন্ধ্যাতেই বেসরকারি হাসপাতালে চলে এসেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার এজলাসে শুনানির সময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তখন তাঁর পরিবারের আর্জি অনুযায়ী তাঁকে বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার অনুমতি দিয়েছিলেন ব্য়াঙ্কশাল কোর্টের বিচারক তনুময় কর্মকার। একই সঙ্গে, বিচারক নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছিলেন, 30 তারিখের পর ইডি'র তদন্তকারী আধিকারিককে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থার হালহকিকত সম্পর্কে আদালতকে জানাতে হবে ৷ এরপর ওই বেসরকারি হাসপাতালেই সেখানেই রবিবার রাত পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে থাকার আর প্রয়োজন নেই জ্যোতিপ্রিয়র, জানালেন চিকিৎসকরা
একাধিক পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হয় তাঁর। মন্ত্রীর সুগার ও কিডনির সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপও রয়েছে। রবিবার জোড়া এমআরআই করা হয়েছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। শরীরে বাম-দিকের অংশ ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছিল বলেই এমআরআই করা হয় তাঁর। সোমবার তাঁকে নিউরো ও স্পাইন সার্জেনরা দেখেন। বেশ কিছু ফিজিওথেরাপিও করা হয়েছে তাঁকে। এছাড়াও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিল্লির আবগারি মামলায় এবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে তলব ইডি'র
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গতকাল 374 নম্বর কেবিনে রাখা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় 10 জন সিআরপিএফ মোতায়েন ছিল ওই বেসরকারি হাসপাতালে। সোমবার দুপুর তিনটে নাগাদ তাঁর মেডিক্যাল বোর্ডের একটি বৈঠক শুরু হয়। প্রায় একঘণ্টার বৈঠকের পর মন্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ ৷ তবে বেশ কিছু ওষুধ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। যা মেনে খেয়ে যেতে হবে তাঁকে। এছাড়া এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যে কোনও প্রশ্ন-উত্তরের মুখোমুখিও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হতে পারবেন বলেও জানিয়েছে।