কলকাতা, ১৫ মার্চ : মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীকে জমা দিতে হবে আয় সংক্রান্ত হলফনামা। স্ক্রুটিনির পর সেই হলফনামা দিয়ে দেওয়া হবে কমিশনের ওয়েবসাইটে। আজ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর নির্দেশ দিল, যত দ্রুত সম্ভব সেই হলফনামা ডাউনলোড করতে হবে আয়কর দপ্তরকে। তারপর সেই তথ্য খতিয়ে দেখতে হবে তাদের। প্রার্থীর আয়কর সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখার পর রিপোর্ট দিতে হবে কমিশনকে। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, যদি কোনও প্রার্থী আয় সংক্রান্ত ভুল তথ্য হলফনামায় দেন, তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
এতদিন পর্যন্ত বিদেশে থাকা সম্পত্তির বিষয়ে কোনও হিসেব দিতে হয়নি লোকসভার প্রার্থীদের। কোনও নির্বাচনেই এ বিষয়ে কোনও হলফনামা জমা দিতে হত না। কিন্তু এবার এ বিষয়ে ছাড় পাবেন না প্রার্থীরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য তৈরি হওয়া নতুন নমিনেশন পেপারের সঙ্গে প্রার্থীকে দিতে হবে সেই খতিয়ান। এবিষয়ে আগেই জারি হয়েছে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা। একইসঙ্গে আরও কিছু বিষয় নির্বাচন কমিশন জানতে চায়। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে সে সব কিছুই।
প্রার্থী, তাঁর স্ত্রী অথবা স্বামী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের একবছরের আয়করের হিসাব দেওয়ার রেওয়াজ ছিল আগে থেকেই। যার ফলে সাধারণ মানুষ জানতে পারতেন প্রার্থীর সম্পত্তির খতিয়ান। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বল করত সে সব তথ্য। সম্প্রতি বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে আয়কর দপ্তরে তৃণমূলের বিভিন্ন বিধায়ক-মন্ত্রীদের আয়ের যে খতিয়ান জমা দেওয়া হয়েছিল, তা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকেই পাওয়া। পাশাপাশি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও ক্রিমিনাল মামলা আছে কি না তাও জানাতে হত নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচন কমিশনের নয়া নির্দেশিকায় প্রার্থীদের তথ্যের বিষয়ে আরও কিছু কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এবার থেকে আর শুধু এক বছরের নয়। প্রার্থী এবং তাঁর আত্মীয়দের ৫ বছরের আয়করের খতিয়ান জমা দিতে হবে হলফনামার মাধ্যমে। একইসঙ্গে জানাতে হবে বিদেশে থাকা স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ১৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রককে একটি নোট পাঠানো হয়। এই মতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক নমিনেশনের সঙ্গে জমা দেওয়া ফর্ম ২৬ সংশোধন করে। সেই সংশোধনীতেই বলা হয়েছে বিদেশে থাকা সম্পত্তির খতিয়ান লুকিয়ে যেতে পারবেন না কোনও প্রার্থী। বিদেশে থাকা সম্পত্তির আওতায় থাকছে বিদেশি ব্যাঙ্কে জমা রাখা টাকা। সঙ্গে বিদেশে যাবতীয় বিনিয়োগের হিসেব। শুধুমাত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নয়। বিদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকার হিসেব দিতে হবে প্রার্থীর স্ত্রী অথবা স্বামী এবং প্রার্থীর উপর নির্ভরশীল পরিবারের অন্য সদস্যদের ক্ষেত্রেও।
আজ আয়কর দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের কর্তারা। সেখানে দেখা হয় ইস্টার্ন রেল, সাউথ-ইস্টার্ন রেলের কর্তাদের। রেলের কর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নগদ সংক্রান্ত যে অভিযান আয়কর দপ্তর চালাচ্ছে তাতে সহযোগিতা করার জন্য। একই কথা বলা হয়েছে, মেট্রো কর্তৃপক্ষকেও। এয়ারপোর্ট অথরিটিকেও দেওয়া হয়েছে একই নির্দেশ।