ETV Bharat / state

বড়দিনের আগে বন্ধ শ্রীরামপুরের ঐতিহাসিক গির্জার ঘড়ি - SERAMPORE HISTORIC CHURCH

তিনমাস ধরে ফের এই ঘড়ি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ঘড়িতে চারটে দশ হয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। বড়দিনের আগে এই ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।

SERAMPORE HISTORIC CHURCH
ঐতিহাসিক গির্জার ঘড়ি বন্ধ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 6 hours ago

শ্রীরামপুর, 20 ডিসেম্বর: বড়দিনের আগেই অচল গির্জার ঘণ্টা-ঘড়ি। এখন চার্চগুলি আলোয় সেজে উঠেছে। উৎসবের সময় শ্রীরামপুরের সেন্ট ওলাভস গির্জায় উল্টো ছবি। ঐতিহ্যবাহী ঘড়ি 3 মাস ধরে বন্ধ। পুরনো গির্জায় আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু থাকে ঘড়ি। যা নিয়ে যথেষ্টই ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শহরবাসী। যদিও ডেনিস আমলের এই ঘড়ি বন্ধের পিছনে আর্থিক সমস্যার কথা বলে দায় সেরেছেন গির্জার কর্তৃপক্ষ ও ফাদার।

চার্চের ইতিহাস

1612 সালে ভারতে বাণিজ্য করার জন্য দিনেমার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠিত হয়। তারা 90 বছর উপনিবেশ করেছিল ভারতে। 1755 খ্রিস্টাব্দে ব্যবসার জন্য শ্রীরামপুরে প্রথম আসে তারা ৷ শ্রীরামপুরে ডেনিস উপনিবেশ থাকাকালীন ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গেই প্রোটেস্টান চার্চ 'সেন্ট ওলাভ চার্চ' তৈরি হয়েছিল। 1806 সালে ডেনিস গভর্নর ওলি বি এই চার্চ প্রতিষ্ঠা করেন। এই চার্চ তৈরি করতে সেই সময় খরচ হয়েছিল প্রায় 18 হাজার টাকা। তৎকালীন সময়ে কালো ডায়ালের একটি বড় ঘড়িও লাগানো হয় চার্চের উপরে। সেই সময় থেকেই আজও এই ঘড়ি চলে আসছে। বজ্রপাতে ঘড়িটি খারাপ হয়েছিল। পরবর্তী কালে সারিয়ে চালু করা হয়েছিল।

ঐতিহাসিক গির্জার ঘড়ি বন্ধ (ইটিভি বারত)

ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

গত তিনমাস ধরে ফের এই ঘড়ি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ঘড়িতে চারটে দশ হয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেন্ট ওলাভ গির্জার ঘড়ি থমকে যাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে শ্রীরামপুরবাসীদের মধ্যে। এদিকে চার্চের সামনের রাস্তা সুসজ্জিত আলোক মালায় সেজে উঠেছে। চার্চকে কেন্দ্র করে এখন উৎসবের আবহাওয়া। তবে চার্চের সামনে লাগানো ঘড়ি বন্ধ থাকায় আকর্ষণ হারাচ্ছে পর্যটকদের কাছেও। বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরে সেন্ট ওলাভ চার্চকে ঘিরে বড়দিন উপলক্ষ্যে 12 দিনের উৎসবের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উৎসবের তাল কেটেছে চার্চের মাথায় লাগানো বন্ধ ঘড়িটি।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা অধ্যাপক ভাস্কর চৌধুরী বলেন, "এই ঘড়ি অনেক দিনের। চার্চের মূল্যবান সম্পদ। যে কোনও চার্চের সঙ্গে একটি ঘড়ির সম্পর্ক থাকে। ছোটবেলায় আমরা এই ঘড়ির ঘণ্টার আওয়াজ শুনতে পেতাম। কিন্তু এই ঘড়ির দম দেওয়ার বিষয়ে কিছু টেকনিশিয়ানের দরকার হয়। তারা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তবে আমরা আশাবাদী চার্চ কর্তৃপক্ষ এটা খুব দ্রুত চালু করবেন। জনশ্রুতি রয়েছে এই চার্চে এন্টনি ফিরিঙ্গিও আসতেন প্রার্থনা করতে। রাজ্য ও ডেনমার্কের উদ্যোগে এই চার্চে ডেনিস স্থাপত্য সাজিয়ে তোলা হয়েছে। আমরা সকলেই চাই এই ঘড়ি আবার চালু হোক।"

চার্চের ফাদার অনুপ মণ্ডল বলেন, "ঘড়িটি দম দিতে প্রতি সপ্তাহে খরচ হয় তিন হাজার টাকা। মাসে বারো হাজার টাকা। আমরা নিজেরা এটাকে সরাতে গেলে তার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। দম দিলেই ঘড়ি চলবে, কিন্তু ঘণ্টা বাজবে না। এই ঘড়ির জন্য কলকাতা থেকে লোক আসে। আমরা চেষ্টা করব মেরামত করার, তবে টেকনিক্যাল লোক না এলে এগুলো সরানো যায় না। দু-তিন মাস হল ঘড়িটি বন্ধ করা রয়েছে।" শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান গিরিধারী সাহা বলেন, " একটা সময়ে আমরা এঘ ঘড়ি দেখে সময় নির্ধারণ করতাম। তবে অনেকেই বলছে ঘড়িটা বন্ধ রয়েছে। এটা যাতে তাড়াতাড়ি সারানো যায় তার জন্য আমি চার্চ কর্তৃপক্ষের নজরে আনব।"

শ্রীরামপুর, 20 ডিসেম্বর: বড়দিনের আগেই অচল গির্জার ঘণ্টা-ঘড়ি। এখন চার্চগুলি আলোয় সেজে উঠেছে। উৎসবের সময় শ্রীরামপুরের সেন্ট ওলাভস গির্জায় উল্টো ছবি। ঐতিহ্যবাহী ঘড়ি 3 মাস ধরে বন্ধ। পুরনো গির্জায় আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু থাকে ঘড়ি। যা নিয়ে যথেষ্টই ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শহরবাসী। যদিও ডেনিস আমলের এই ঘড়ি বন্ধের পিছনে আর্থিক সমস্যার কথা বলে দায় সেরেছেন গির্জার কর্তৃপক্ষ ও ফাদার।

চার্চের ইতিহাস

1612 সালে ভারতে বাণিজ্য করার জন্য দিনেমার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠিত হয়। তারা 90 বছর উপনিবেশ করেছিল ভারতে। 1755 খ্রিস্টাব্দে ব্যবসার জন্য শ্রীরামপুরে প্রথম আসে তারা ৷ শ্রীরামপুরে ডেনিস উপনিবেশ থাকাকালীন ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গেই প্রোটেস্টান চার্চ 'সেন্ট ওলাভ চার্চ' তৈরি হয়েছিল। 1806 সালে ডেনিস গভর্নর ওলি বি এই চার্চ প্রতিষ্ঠা করেন। এই চার্চ তৈরি করতে সেই সময় খরচ হয়েছিল প্রায় 18 হাজার টাকা। তৎকালীন সময়ে কালো ডায়ালের একটি বড় ঘড়িও লাগানো হয় চার্চের উপরে। সেই সময় থেকেই আজও এই ঘড়ি চলে আসছে। বজ্রপাতে ঘড়িটি খারাপ হয়েছিল। পরবর্তী কালে সারিয়ে চালু করা হয়েছিল।

ঐতিহাসিক গির্জার ঘড়ি বন্ধ (ইটিভি বারত)

ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

গত তিনমাস ধরে ফের এই ঘড়ি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ঘড়িতে চারটে দশ হয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেন্ট ওলাভ গির্জার ঘড়ি থমকে যাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে শ্রীরামপুরবাসীদের মধ্যে। এদিকে চার্চের সামনের রাস্তা সুসজ্জিত আলোক মালায় সেজে উঠেছে। চার্চকে কেন্দ্র করে এখন উৎসবের আবহাওয়া। তবে চার্চের সামনে লাগানো ঘড়ি বন্ধ থাকায় আকর্ষণ হারাচ্ছে পর্যটকদের কাছেও। বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরে সেন্ট ওলাভ চার্চকে ঘিরে বড়দিন উপলক্ষ্যে 12 দিনের উৎসবের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উৎসবের তাল কেটেছে চার্চের মাথায় লাগানো বন্ধ ঘড়িটি।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা অধ্যাপক ভাস্কর চৌধুরী বলেন, "এই ঘড়ি অনেক দিনের। চার্চের মূল্যবান সম্পদ। যে কোনও চার্চের সঙ্গে একটি ঘড়ির সম্পর্ক থাকে। ছোটবেলায় আমরা এই ঘড়ির ঘণ্টার আওয়াজ শুনতে পেতাম। কিন্তু এই ঘড়ির দম দেওয়ার বিষয়ে কিছু টেকনিশিয়ানের দরকার হয়। তারা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তবে আমরা আশাবাদী চার্চ কর্তৃপক্ষ এটা খুব দ্রুত চালু করবেন। জনশ্রুতি রয়েছে এই চার্চে এন্টনি ফিরিঙ্গিও আসতেন প্রার্থনা করতে। রাজ্য ও ডেনমার্কের উদ্যোগে এই চার্চে ডেনিস স্থাপত্য সাজিয়ে তোলা হয়েছে। আমরা সকলেই চাই এই ঘড়ি আবার চালু হোক।"

চার্চের ফাদার অনুপ মণ্ডল বলেন, "ঘড়িটি দম দিতে প্রতি সপ্তাহে খরচ হয় তিন হাজার টাকা। মাসে বারো হাজার টাকা। আমরা নিজেরা এটাকে সরাতে গেলে তার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। দম দিলেই ঘড়ি চলবে, কিন্তু ঘণ্টা বাজবে না। এই ঘড়ির জন্য কলকাতা থেকে লোক আসে। আমরা চেষ্টা করব মেরামত করার, তবে টেকনিক্যাল লোক না এলে এগুলো সরানো যায় না। দু-তিন মাস হল ঘড়িটি বন্ধ করা রয়েছে।" শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান গিরিধারী সাহা বলেন, " একটা সময়ে আমরা এঘ ঘড়ি দেখে সময় নির্ধারণ করতাম। তবে অনেকেই বলছে ঘড়িটা বন্ধ রয়েছে। এটা যাতে তাড়াতাড়ি সারানো যায় তার জন্য আমি চার্চ কর্তৃপক্ষের নজরে আনব।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.