মেদিনীপুর, 24 ফেব্রুয়ারি: অবশেষে দেড় মাসের মাথায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পিজিটিদের সাসপেনশন নির্দেশ প্রত্যাহার কলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেইসঙ্গে করলেন বেতনও বৃদ্ধি করলেন। যদিও এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হওয়া মামলা চলবে যার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি।
সোমবার পিজিটি ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সাসপেনশন প্রত্যাহার করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ যার জেরে জয় দেখছে জুনিয়ার ডাক্তাররা। মূলত মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুতে গত জানুয়ারি মাসের শুরুতেই প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে। যেই ঘটনায় রোগী পরিবারের আত্মীয়দের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতি ও স্যালাইনের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে। যদিও সেই ঘটনায় তড়িঘড়ি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সিআইডি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই সঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার এবং বাকি চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়।
যদিও স্বাস্থ্য দফতর থেকেই সেই ঘটনায় প্রথমে 12 জন পরে আরও একজন পিজিটি'র নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে তদন্ত চালিয়ে যান সিআইডি'র টিম। ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হওয়ায় কর্মবিরতিতে নেমে পড়ে জুনিয়র ডাক্তাররা।পরবর্তীকালে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিলে তাঁরা কর্মবিরতি তুলেও নেন। অবশেষে এদিন কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তারদের বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি এই সাসপেনশন অর্ডারের প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন। যা নিয়ে কিছুটা উচ্ছ্বসিত পিজিটিরা। উল্লেখ্য, সেদিন পাঁচ প্রসূতির মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় ৷ বাকি তিন প্রসূতিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতায় রেফার করা হয়। এই প্রসূতি মৃত্যুতে অভিযুক্ত সাত পিজিটি ডাক্তারদের সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হয়েছে ৷ সুতরাং তাঁরা এদিন থেকেই যোগ দিতে পারবেন তাদের কর্মস্থলে।
প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সাতজন পিজিটি-সহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সুপার নিয়ে মোট 13 জন ডাক্তারের নামে অভিযোগ জমা পড়ে ৷ সঙ্গে সাসপেনশন অর্ডারও জারি হয়। এই তালিকায় রয়েছেন বিভাগীয় প্রধান মহম্মদ আলাউদ্দিন, হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত রাউত। এছাড়াও দিলীপ পাল, সিনিয়র চিকিৎসক হিমাদ্রি নায়েক, আরএমও সৌমেন দাস, অ্যানেস্থেসিস্ট পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়, পিজিটি প্রথম বর্ষের চিকিৎসক মৌমিতা মণ্ডল, পূজা সাহা, ইন্টার্ন চিকিৎসক সুশান্ত মণ্ডল, পিজিটি তৃতীয় বর্ষের চিকিৎসক জাগৃতি ঘোষ, ভাগ্যশ্রী কুণ্ডু, পিজিটি প্রথম বর্ষের অ্যানেস্থেসিস্ট মণীশ কুমার ও শ্বেতা সিং।
এই ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সড়ঙ্গি বলেন, "মেদিনীপুর হাসপাতালের প্রসূতি মৃত্যুতে সাসপেনশন অর্ডার দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী ৷ সেই ঘটনায় বহুদূর পর্যন্ত জল গড়িয়েছে। অবশেষে আজ থেকেই তাদের এই সাসপেনশন অর্ডার প্রত্যাহার করলেন। ফলে এই পিজিটিরা আবার কর্মস্থলে যোগ দিতে পারবেন আর কাজ করতে পারবেন আগের মতোই।"