ETV Bharat / state

কোরোনা নির্ণয়ে দেশ-বিদেশে বাংলার সস্তা কিটের চাহিদা সত্ত্বেও নীরব রাজ্য

কম খরচে সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার জন্য কিট তৈরি করেছে বাংলার বেসরকারি একটি বায়োটেক সংস্থা । পূর্ব ভারতে এই সংস্থাই প্রথম কম খরচে কিট তৈরি করেছে । এই কিট নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজ্য, দেশ থেকে যোগাযোগ করা হলেও এখনও পশ্চিমবঙ্গ সরকারই এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি । তবে, রাজ্য সরকারকে সাহায্য় করতে পারলে খুশি হবে বলে জানান সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ।

কোরোনা নির্ণয়ের কিট
কোরোনা নির্ণয়ের কিট
author img

By

Published : May 11, 2020, 11:20 PM IST

কলকাতা, 11 মে : কোরোনা‌ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অনেক কম খরচে সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার জন্য বাংলার বেসরকারি একটি বায়োটেক সংস্থা কিট তৈরি করেছে । পূর্ব ভারতের মধ্যে এই সংস্থাই প্রথম কম খরচে কিট তৈরি করেছে । এই কিটের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই ভিনরাজ্য এবং বিদেশের তরফে এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে । অথচ এই কিটের বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে এই সংস্থার সঙ্গে কোনওরকমভাবে যোগাযোগ করা হয়নি ।

অনেক কম খরচে সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য পূর্ব ভারতের মধ্যে এ রাজ্যের একটি বায়োটিক সংস্থা কিট তৈরি করেছে । এই কিট দিয়ে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য 1 মে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR)-এর অনুমোদন মিলেছে । ICMR-র তরফে জানানো হয়েছে, সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য তৈরি এই সংস্থার কিটের গুণমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং অ্যামেরিকার সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর গাইডলাইন অনুযায়ী রয়েছে । এদিকে, ICMR-এর অনুমোদন পাওয়ার পরই অন্য অনেক রাজ্য এবং বিভিন্ন দেশের তরফে এই কিটের জন্য এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে । প্রক্রিয়া অনুযায়ী WHO-র তরফেও এই কিট চাওয়া হয়েছে । কিন্তু এই কিটের বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফেই এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি । অথচ, এর আগে কোরোনা‌ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কিট নিয়ে ICMR, কলকাতায় অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজ়িজ়েস (NICED) এবং রাজ্য সরকারের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দেখা গিয়েছিল ।

রাজ্য সরকারের তরফে কি এই কিটের বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে? এই বায়োটেক সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজা মজুমদার বলেন, "অনেক সরকার যোগাযোগ করেছে, কিটের জন্য অর্ডার দিয়েছে । তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও যোগাযোগ করেনি । পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্যই যোগাযোগ করবে । পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা কিট সরবরাহ করতে পারলে খুশি হব ।" কোন কোন রাজ্য, দেশ এই কিট চেয়েছে জানতে চাইলে অবশ্য ওই রাজ্য এবং দেশগুলির নাম বলতে চাননি রাজা মজুমদার । তবে তিনি বলেন, "এভাবে তুলনা করা ঠিক হবে না ‌। এই কিট এ দেশের অনেক রাজ‍্যে পাঠিয়েছি, অনেক দেশে পাঠানোর কথা চলছে । WHO-ও চেয়েছে, এটা প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে ।"

অনেক কম খরচে কোরোনা‌ নির্ণয়ের লক্ষ্যে এ রাজ্যে তৈরি এই কিটের বিষয়ে কি আগ্রহী রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর? এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় । তবে, তিনি ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি । হোয়াটসঅ্যাপ টেক্সট-এরও কোনও উত্তর আসেনি ।

কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য কত কিট প্রস্তুত হয়ে রয়েছে? রাজা মজুমদার বলেন, "50 লাখ মানুষের পরীক্ষা করতে গেলে যত কিটের প্রয়োজন হয়, আমাদের স্টকে তা এখন রয়েছে । এক কোটি মানুষের পরীক্ষার করার জন্য যত কিট প্রয়োজন, তা আমরা এক মাসে বানাতে পারি । তিন লাখ মানুষের পরীক্ষা করা যাবে, তার জন‍্য যত কিটের প্রয়োজন, তা আমরা একদিনে তৈরি করতে পারি । গত দুই মাস ধরে চেষ্টা করে আমরা এই কিট বানিয়েছি । এই কিট দিয়ে কোরোনা নির্ণয়ের জন্য ICMR 1 মে অনুমতি দিয়েছে । আমাদের এই কিট দিয়ে 96টি পরীক্ষা করার জন্য 90 মিনিট সময় লাগে । আমাদের বিজ্ঞানীরা নিজেরা নিজেদের প্রযুক্তির সাহায্যে আমাদের ল্যাবরেটরিতে এই কিট তৈরি করেছেন । এই কিটের প্রত্যেকটি কম্পোনেন্ট আমাদের ল্যাবে তৈরি হয় বলে, এই কিট এত সস্তা । কোরোনা‌ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এক-একটি পরীক্ষার জন্য তিন-চার হাজার টাকা খরচ হয় এমন কিট বিক্রি করে অ্যামেরিকার কোম্পানিগুলি । আমাদের এই কিট দিয়ে 500-600 টাকায় এক-একটি পরীক্ষা করা যাবে । পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট পরীক্ষা যাতে ভারতের সাধারণ মানুষের আয়ত্বের মধ্যে আসে, সেই চেষ্টা করে যাওয়াই আমাদের প্রধান কাজ । তার জন্যই আমাদের কিট এত সস্তা ।"

তবে, শুধুমাত্র যে এত কম খরচে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য কিট তৈরি করেছে এই সংস্থা, তা নয় । নিজেকে এই সংস্থার একজন কর্মী হিসাবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন এই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর । তিনি বলেন, "কিট ছাড়াও মূলত আমরা মলিকুলার ডায়াগনস্টিকের কাজ করি । ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া, জাপানিস এনসেফেলাইটিস, HIV-র মতো সংক্রমিত যে রোগগুলির নির্ণয় ব্যয়সাপেক্ষ, কোনও কোনও পরীক্ষা করাতে হলে হয়তো পাঁচ, 10, 15 হাজার টাকা লাগে, সেই পরীক্ষা 500 থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে করানোর জন্য কিট তৈরি করে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলির হাতে তুলে দেওয়াই আমাদের কাজ । যাতে ভারতের গরিব মানুষ এই কোম্পানির ডিটেকশন কিটগুলির বেনিফিট পায় ।" এর জন্য দক্ষিণ 24 পরগনার বাঁকরাহাটে অবস্থিত এই বায়োটেক সংস্থার ল্যাবরেটরিতে 107জন বিজ্ঞানী গবেষণা করেন । বায়োটেকনোলজি নিয়ে যাঁরা রিসার্চ করেন, তাঁদের জন্য সব ধরনের রি-এজেন্ট এই ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয় । গত সাত বছর ধরে এই কাজ চলছে ।

কলকাতা, 11 মে : কোরোনা‌ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অনেক কম খরচে সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার জন্য বাংলার বেসরকারি একটি বায়োটেক সংস্থা কিট তৈরি করেছে । পূর্ব ভারতের মধ্যে এই সংস্থাই প্রথম কম খরচে কিট তৈরি করেছে । এই কিটের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই ভিনরাজ্য এবং বিদেশের তরফে এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে । অথচ এই কিটের বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে এই সংস্থার সঙ্গে কোনওরকমভাবে যোগাযোগ করা হয়নি ।

অনেক কম খরচে সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য পূর্ব ভারতের মধ্যে এ রাজ্যের একটি বায়োটিক সংস্থা কিট তৈরি করেছে । এই কিট দিয়ে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য 1 মে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR)-এর অনুমোদন মিলেছে । ICMR-র তরফে জানানো হয়েছে, সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য তৈরি এই সংস্থার কিটের গুণমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং অ্যামেরিকার সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর গাইডলাইন অনুযায়ী রয়েছে । এদিকে, ICMR-এর অনুমোদন পাওয়ার পরই অন্য অনেক রাজ্য এবং বিভিন্ন দেশের তরফে এই কিটের জন্য এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে । প্রক্রিয়া অনুযায়ী WHO-র তরফেও এই কিট চাওয়া হয়েছে । কিন্তু এই কিটের বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফেই এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি । অথচ, এর আগে কোরোনা‌ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কিট নিয়ে ICMR, কলকাতায় অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজ়িজ়েস (NICED) এবং রাজ্য সরকারের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দেখা গিয়েছিল ।

রাজ্য সরকারের তরফে কি এই কিটের বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে? এই বায়োটেক সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজা মজুমদার বলেন, "অনেক সরকার যোগাযোগ করেছে, কিটের জন্য অর্ডার দিয়েছে । তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও যোগাযোগ করেনি । পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্যই যোগাযোগ করবে । পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা কিট সরবরাহ করতে পারলে খুশি হব ।" কোন কোন রাজ্য, দেশ এই কিট চেয়েছে জানতে চাইলে অবশ্য ওই রাজ্য এবং দেশগুলির নাম বলতে চাননি রাজা মজুমদার । তবে তিনি বলেন, "এভাবে তুলনা করা ঠিক হবে না ‌। এই কিট এ দেশের অনেক রাজ‍্যে পাঠিয়েছি, অনেক দেশে পাঠানোর কথা চলছে । WHO-ও চেয়েছে, এটা প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে ।"

অনেক কম খরচে কোরোনা‌ নির্ণয়ের লক্ষ্যে এ রাজ্যে তৈরি এই কিটের বিষয়ে কি আগ্রহী রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর? এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় । তবে, তিনি ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি । হোয়াটসঅ্যাপ টেক্সট-এরও কোনও উত্তর আসেনি ।

কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য কত কিট প্রস্তুত হয়ে রয়েছে? রাজা মজুমদার বলেন, "50 লাখ মানুষের পরীক্ষা করতে গেলে যত কিটের প্রয়োজন হয়, আমাদের স্টকে তা এখন রয়েছে । এক কোটি মানুষের পরীক্ষার করার জন্য যত কিট প্রয়োজন, তা আমরা এক মাসে বানাতে পারি । তিন লাখ মানুষের পরীক্ষা করা যাবে, তার জন‍্য যত কিটের প্রয়োজন, তা আমরা একদিনে তৈরি করতে পারি । গত দুই মাস ধরে চেষ্টা করে আমরা এই কিট বানিয়েছি । এই কিট দিয়ে কোরোনা নির্ণয়ের জন্য ICMR 1 মে অনুমতি দিয়েছে । আমাদের এই কিট দিয়ে 96টি পরীক্ষা করার জন্য 90 মিনিট সময় লাগে । আমাদের বিজ্ঞানীরা নিজেরা নিজেদের প্রযুক্তির সাহায্যে আমাদের ল্যাবরেটরিতে এই কিট তৈরি করেছেন । এই কিটের প্রত্যেকটি কম্পোনেন্ট আমাদের ল্যাবে তৈরি হয় বলে, এই কিট এত সস্তা । কোরোনা‌ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এক-একটি পরীক্ষার জন্য তিন-চার হাজার টাকা খরচ হয় এমন কিট বিক্রি করে অ্যামেরিকার কোম্পানিগুলি । আমাদের এই কিট দিয়ে 500-600 টাকায় এক-একটি পরীক্ষা করা যাবে । পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট পরীক্ষা যাতে ভারতের সাধারণ মানুষের আয়ত্বের মধ্যে আসে, সেই চেষ্টা করে যাওয়াই আমাদের প্রধান কাজ । তার জন্যই আমাদের কিট এত সস্তা ।"

তবে, শুধুমাত্র যে এত কম খরচে কোরোনা‌ নির্ণয়ের জন্য কিট তৈরি করেছে এই সংস্থা, তা নয় । নিজেকে এই সংস্থার একজন কর্মী হিসাবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন এই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর । তিনি বলেন, "কিট ছাড়াও মূলত আমরা মলিকুলার ডায়াগনস্টিকের কাজ করি । ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া, জাপানিস এনসেফেলাইটিস, HIV-র মতো সংক্রমিত যে রোগগুলির নির্ণয় ব্যয়সাপেক্ষ, কোনও কোনও পরীক্ষা করাতে হলে হয়তো পাঁচ, 10, 15 হাজার টাকা লাগে, সেই পরীক্ষা 500 থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে করানোর জন্য কিট তৈরি করে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলির হাতে তুলে দেওয়াই আমাদের কাজ । যাতে ভারতের গরিব মানুষ এই কোম্পানির ডিটেকশন কিটগুলির বেনিফিট পায় ।" এর জন্য দক্ষিণ 24 পরগনার বাঁকরাহাটে অবস্থিত এই বায়োটেক সংস্থার ল্যাবরেটরিতে 107জন বিজ্ঞানী গবেষণা করেন । বায়োটেকনোলজি নিয়ে যাঁরা রিসার্চ করেন, তাঁদের জন্য সব ধরনের রি-এজেন্ট এই ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয় । গত সাত বছর ধরে এই কাজ চলছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.