নয়াদিল্লি, 18 নভেম্বর: দিল্লির বায়ুদূষণ পরিস্থিতি 'অতি গুরুতর' পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে ৷ রীতিমতো 'গ্যাস চেম্বারে' পরিণত হয়েছে রাজধানী শহর ৷ দমবদ্ধ অবস্থায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের ৷ সোমবার গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান (GRAP)-এর চতুর্থ ধাপের অধীনে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে শহরজুড়ে ৷ পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সমস্ত স্কুলে অনলাইন ক্লাস শুরুর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী অতিশী ৷ যদিও দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে হবে ৷
সমস্ত স্কুলে বাতিল ক্লাস
ক্রমশ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে দিল্লির দূষণ ৷ বিগত এক সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ৷ শ্বাস নেওয়ার জন্য় রীতিমতো হাঁসফাঁস করছে দিল্লিবাসী ৷ সোমবার সকাল 7টায় দিল্লির বায়ুর গুণগত মান (AQI) ছিল 481 ৷ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে স্কুলে ক্লাসে বসে পড়াশোনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার ৷ একমাত্র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে হবে ৷ বাকিদের জন্য অনলাইনে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছে দিল্লির সরকার ৷ এই বিষয়ে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অতিশী ৷
With the imposition of GRAP-4 from tmrw, physical classes shall be discontinued for all students, apart from Class 10 and 12. All schools will hold online classes, until further orders.
— Atishi (@AtishiAAP) November 17, 2024
দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতি
রবিবার পর্যন্ত দিল্লির বায়ুদূষণের মান GRAP-III স্টেজে ছিল ৷ সেই অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ নেওয়া হয় দিল্লি সরকারের তরফে ৷ কিন্তু সপ্তাহের শুরু হতেই ভয়ঙ্কর অবস্থা রাজধানীতে ৷
কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (CAQM) জানিয়েছে, পরিস্থিতি বুঝে দিল্লি-এনসিআর এলাকায় GRAP-IV অর্থাৎ 'সিভিয়ার প্লাস'-এর অধীনে পরিকল্পিত সমস্ত প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ লাগু করা হয়েছে ৷ সোমবার সকাল 8টা থেকেই রাজধানীর সমস্ত এলাকায় এই সমস্ত বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে ৷
দূষণের কারণে দৃশ্যমানতা একেবারে নেই বললেই চলে ইন্ডিয়ান মেটিয়োরোলজিকাল ডিপার্টমেন্ট (IMD) দিল্লিজুড়ে কমলা শতর্কতা জারি করেছে ৷ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘন ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকেছে রাজধানী ৷ ফলে বিমান ও রেল চলাচল ব্যহত হয়েছে ৷
বায়ুদূষণ নিয়ে পরিবেশমন্ত্রীর বৈঠক
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার সমস্ত বিভাগের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই ৷ এদিন বিকেলে দিল্লি সচিবালয়ে হবে এই বৈঠক ৷ GRAP-IV লাগু করা এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, সেই নিয়ে এদিনের এই বৈঠক বলে জানান গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে ৷
GRAP পর্যায় কী ?
GRAP-I: AQI 201-300 হলে জনসাধারণের পরামর্শ, ধুলো দমন এবং খোলা বার্নিং বিধিনিষেধের মতো মৌলিক নিয়ন্ত্রণগুলি বাস্তবায়ন করে ।
GRAP-II: AQI 301-400 থাকলে ডিজেল জেনারেটরের সীমাবদ্ধতা, রাস্তা পরিষ্কার করা এবং জল ছিটানোর মতো ব্যবস্থা চালু হয় ।
GRAP-III: AQI 400 ছাড়িয়ে গেলে অপ্রয়োজনীয় নির্মাণ নিষিদ্ধ করা, নির্দিষ্ট যানবাহন সীমাবদ্ধ করা এবং ইটভাটা বন্ধ করার নিয়ম রয়েছে ।
GRAP-IV: এটি সবচেয়ে কঠোর স্তর ৷ 450-এর উপরে AQI উঠে গেলে সমস্ত নির্মাণ বন্ধ করা, স্কুল বন্ধ করা এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের জন্য জোড়-বিজোড় নিয়ম (গাড়ির নম্বর) আরোপ করা হয় ।
GRAP-IV-এ বিধিনিষেধ কী কী ?
- ধূলিকণা এবং নির্গমন রোধ করার জন্য, GRAP-IV লাগু হওয়ার পর নির্মাণকাজ নিষিদ্ধ ৷ যার মধ্যে মাটির কাজ, পাইলিং, ট্রেঞ্চিং এবং রেডি-মিক্স কংক্রিট (RMC) প্ল্যান্টের কাজ রয়েছে । পাশাপাশি বালি এবং সিমেন্টের মতো নির্মাণ সামগ্রীর পরিবহণও নিয়ন্ত্রিত ।
- এই পর্যায়ে কেবলমাত্র এলএনজি বা সিএনজি বা ইলেকট্রিক চালিত বা BS-IV ডিসেল ট্রাক চলাচলে ছাড় রয়েছে ৷
- সরকারি অফিসে কেবলমাত্র 50 শতাংশ লোক একসঙ্গে উপস্থিত থাকবে ৷ বাকিদের বাড়ি বসে কাজ করতে হবে ৷