ETV Bharat / state

আগামী বছরের ক‍্যাম্পাস প্লেসমেন্ট নিয়ে আশঙ্কায় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি

2020-র ক্যাম্পাস প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় লকডাউনের তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি । তবে আগামী বছরের প্লেসমেন্ট নিয়ে যথেষ্ট দুশ্চিন্তায় রয়েছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ ।

Kolkata
আগামী বছরের ক‍্যাম্পাস প্লেসমেন্ট নিয়ে আশঙ্কায় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি
author img

By

Published : Jul 31, 2020, 8:35 PM IST

কলকাতা , 31 জুলাই : কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দীর্ঘ লকডাউনের জেরে সব ক্ষেত্রেই ব‍্যাপক প্রভাব পড়েছে । বিশেষ করে অর্থনৈতিক মন্দায় ধুঁকছে গোটা দেশ । ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কম্পানিতে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে । বেতনও কাটা হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্যাম্পাসে প্লেসমেন্টের ক্ষেত্রেও কি এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন পড়ুয়ারা ? প্রতি বছর ক‍্যাম্পাসে মেধাবি ছাত্র-ছাত্রীদের খুঁজতে আসা কম্পানি কি ক‍্যাম্পাসমুখী হয়েছে ? রাজ‍্যের একাধিক নামী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেল , কোরোনার কারণে বেশিরভাগ ক‍্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেই অধিকাংশ প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল । লকডাউনের অল্পবিস্তর নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও তার বেশিরভাগটাই এড়ানো গেছে এই বছর ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের থেকেও ভালো প্লেসমেন্ট হয়েছে এই বছর । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন , "আমাদের যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্টসের ইকোনমিক্সে প্লেসমেন্টটা ভালো হয়। এই প্লেসমেন্ট আমাদের যথেষ্টই গর্বের কারণ। এ বছরও খুব খারাপ হয়েছে সেটা আমি বলব না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক বা কর্পোরেট সেক্টর, কোরোনার প্রভাবটা আমরা টের পেয়েছি মার্চ মাস থেকে। আরও নির্দিষ্টভাবে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। তার আগেই কিন্তু আমাদের অধিকাংশ প্লেসমেন্ট হয়ে গেছে। লকডাউনের সময়ে অনলাইন মোডে অন্ততপক্ষে 20 জনের প্লেসমেন্ট হয়েছে । সব মিলিয়ে আমাদের এই বছরের যে প্লেসমেন্ট রেকর্ড দেখা যাচ্ছে, 84 শতাংশ স্টুডেন্ট আমাদের প্লেসমেন্ট পেয়েছে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউতে। যদি আমরা বিগত দুই বছরের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে দেখব, একই রকম আছে। বরং, এই বছর একটু বেশি হয়েছে । "

খড়গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (IIT) রেজিস্ট্রার বিএন সিং বলেন , "এই বছর কোনও সমস‍্যা হয়নি । ভালোই প্লেসমেন্ট হয়েছে । ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (IIEST), শিবপুরের প্লেসমেন্টেও তেমনভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি । প্রতিষ্ঠানের এক আধিকারিক এই বিষয়ে বলেন, "আমাদের সাধারণত অগাস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে আউটগোয়িং ব‍্যাচের ক‍্যাম্পাসিং শুরু হয়ে যায় । আমাদের লকডাউনের আগেই অধিকাংশ ক‍্যাম্পাসিংটা হয়ে গিয়েছিল । "

লকডাউন চলাকালীন সময়েও থমকে থাকেনি প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়া । যাদবপুর এবং IIEST শিবপুর , দুটি প্রতিষ্ঠানেই অনলাইনের মাধ‍্যমে ক‍্যাম্পাস ইন্টারভিউ করে একাধিক পড়ুয়াকে চাকরির অফার দিয়েছে বহু কম্পানি । তারপরেও কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে এই বছরের প্লেসমেন্টে । যেমন অনেক কম্পানি আগে অফার দিয়েছিল । কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই তা বাতিল করেছে । আবার , অনেক কম্পানির আসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসেনি ।

এই প্রসঙ্গে IIEST শিবপুরের এক আধিকারিক বলেন , " দু'টো কম্পানি অফার করার পরে আর কেউ নিতে চায়নি । ওই কম্পানিগুলি থেকে চার থেকে পাঁচজনের মতো পড়ুয়া অফার পেয়েছিল । প্রায় 10-12টা কম্পানির সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু, এই পরিস্থিতির কারণে তারা কেউ আর নিতে চাইল না । ইন্টার্নশিপের মাধ‍্যমেও প্লেসমেন্ট হত । সেক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপ শেষের পর অনেক পড়ুয়াই চাকরির অফার পেয়ে যেতেন । অন‍্যান‍্য বছর IIEST-র 60-70 জনের মতো ছাত্র-ছাত্রী এভাবে চাকরির অফার পেয়ে যেতেন‌ । সেটাও এবার প্রভাবিত হয়েছে । "

তবে, এই বছরের প্লেসমেন্টে শুধু কোরোনার প্রভাব পড়েনি বলেই দাবি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির । চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন , "এই বছর যে শুধু কোরোনার জন্য প্লেসমেন্টে প্রভাব পড়েছে তা নয় । হ‍্যাঁ এটা অন‍্যতম একটা কারণ । অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে । এই বছর আর একটা বিষয় , যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ততটা প্রভাব না ফেলতে পারলেও , অন‍্যান‍্য জায়গায় তার প্রভাব পড়েছে । তা হল, অর্থনৈতিক মন্দা আগের থেকেই চলছিল । একটি কম্পানি যে আমাদের এখানে অফার তুলে নিয়েছে তার পিছনে কোরোনা যতটা দায়ী , তার থেকে বেশি দায়ী বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা । ওটা একটি মাল্টিন্যাশনাল কম্পানি ছিল । যার ভিত্তি ভারতে নয় । ওরা সব নিয়োগই বাতিল করেছিল । এই রকম বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা সব জায়গাতেই হয়েছে‌ । যাদবপুরে একটিই ঘটেছে। আমি আবারও বলছি , কোরোনা একটা অন‍্যতম কারণ । কিন্তু , কোরোনার সঙ্গে যুক্ত জেনেরাল যে অর্থনৈতিক মন্দা , সেটা কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে এই ক‍্যাম্পাস নিয়োগের উপর ।"

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের থেকে নির্বাচিত মোট চারজন সেন্ট্রাল প্লেসমেন্ট কো-অর্ডিনেটর থাকেন । তাঁরা প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্য করে থাকেন । এই বছরের এক সেন্ট্রাল প্লেসমেন্ট কো-অর্ডিনেটর নরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন , "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরোনা ভাইরাসের জন্য প্লেসমেন্টের উপর খুব কম প্রভাব পড়েছে । কারণ, যে সময় লকডাউন শুরু হয় সেই সময় আমাদের 80 শতাংশের বেশি পড়ুয়া চাকরি পেয়ে গেছিল । আরও কিছুদিন হাতে পাওয়া গেলে হয়তো নম্বরটা কিছুটা বাড়ত । "

এই বছরের প্লেসমেন্ট ভালো হলেও আগামী বছর নিয়ে যথেষ্ট দুশ্চিন্তায় রয়েছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ । 2021-এর প্লেসমেন্ট নিয়ে চিরঞ্জীবাবু বলেন , " আমার ধারণা কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও তার ব্যাতিক্রম হবে না । আগে থেকেই একটা অর্থনৈতিক মন্দা ছিল । সেটা আরও বেশি ঘনীভূত হয়েছে । তার জন্য বিশ্ব এবং ভারতে যে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে তার কিছুটা প্রভাব পড়বেই । সেটা নিয়ে আমাদের একটু আশঙ্কা আছে । আমি দীর্ঘদিন প্লেসমেন্টের সঙ্গে যুক্ত। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়তেই পারে। 2021-এ যাঁরা হবেন সেই ব‍্যাচটা নিয়ে আমরা সত‍্যিই কিছুটা চিন্তায় আছি । 2021-টা যথেষ্ট চ‍্যালেঞ্জিং। সেই চ‍্যালেঞ্জটা আমাদের নিতে হবে । সেটা আমরা কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারি সেটাও আমাদের পর্যালোচনা করে দেখতে হবে । "

কী বলছে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ

প্লেসমেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে IIEST-র এক আধিকারিক বলেন, " গোটা বিশ্বে একটা অর্থনৈতিক মন্দা চলছে । ভারতবর্ষের GDP , শিল্প বৃদ্ধি যাই দেখা হোক না কেন দেখা যাবে আমরা একটা অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি । এটার প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই চাকরির উপর পড়বে । লকডাউনে সবকিছু থমকে গিয়েছে । তাতে কম্পানিগুলির অবস্থা সহজেই অনুমেয় । রাজ‍্য থেকে বছরে 35-40 হাজার পড়ুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে । নিয়োগটা যদি আগের তুলনায় অর্ধেক বা তিনভাগের এক ভাগ হয়ে যায় তাহলে যে সব প্রতিষ্ঠানগুলি নিচের দিকে আছে তাঁদের ওখানে ক্যাম্পাসিংয়ে প্রভাব পড়বে । যাদবপুর , শিবপুর, IIT, NIIT একটা ব্র্যান্ডিংয়ের মধ্যে পড়ে । তাই তারা কম প্রভাবিত হবে । তবে আগামী বছরের প্লেসমেন্ট আগের মতো হবে না তা নিশ্চিত ।"

কলকাতা , 31 জুলাই : কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দীর্ঘ লকডাউনের জেরে সব ক্ষেত্রেই ব‍্যাপক প্রভাব পড়েছে । বিশেষ করে অর্থনৈতিক মন্দায় ধুঁকছে গোটা দেশ । ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কম্পানিতে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে । বেতনও কাটা হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্যাম্পাসে প্লেসমেন্টের ক্ষেত্রেও কি এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন পড়ুয়ারা ? প্রতি বছর ক‍্যাম্পাসে মেধাবি ছাত্র-ছাত্রীদের খুঁজতে আসা কম্পানি কি ক‍্যাম্পাসমুখী হয়েছে ? রাজ‍্যের একাধিক নামী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেল , কোরোনার কারণে বেশিরভাগ ক‍্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেই অধিকাংশ প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল । লকডাউনের অল্পবিস্তর নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও তার বেশিরভাগটাই এড়ানো গেছে এই বছর ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের থেকেও ভালো প্লেসমেন্ট হয়েছে এই বছর । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন , "আমাদের যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্টসের ইকোনমিক্সে প্লেসমেন্টটা ভালো হয়। এই প্লেসমেন্ট আমাদের যথেষ্টই গর্বের কারণ। এ বছরও খুব খারাপ হয়েছে সেটা আমি বলব না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক বা কর্পোরেট সেক্টর, কোরোনার প্রভাবটা আমরা টের পেয়েছি মার্চ মাস থেকে। আরও নির্দিষ্টভাবে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। তার আগেই কিন্তু আমাদের অধিকাংশ প্লেসমেন্ট হয়ে গেছে। লকডাউনের সময়ে অনলাইন মোডে অন্ততপক্ষে 20 জনের প্লেসমেন্ট হয়েছে । সব মিলিয়ে আমাদের এই বছরের যে প্লেসমেন্ট রেকর্ড দেখা যাচ্ছে, 84 শতাংশ স্টুডেন্ট আমাদের প্লেসমেন্ট পেয়েছে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউতে। যদি আমরা বিগত দুই বছরের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে দেখব, একই রকম আছে। বরং, এই বছর একটু বেশি হয়েছে । "

খড়গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (IIT) রেজিস্ট্রার বিএন সিং বলেন , "এই বছর কোনও সমস‍্যা হয়নি । ভালোই প্লেসমেন্ট হয়েছে । ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (IIEST), শিবপুরের প্লেসমেন্টেও তেমনভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি । প্রতিষ্ঠানের এক আধিকারিক এই বিষয়ে বলেন, "আমাদের সাধারণত অগাস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে আউটগোয়িং ব‍্যাচের ক‍্যাম্পাসিং শুরু হয়ে যায় । আমাদের লকডাউনের আগেই অধিকাংশ ক‍্যাম্পাসিংটা হয়ে গিয়েছিল । "

লকডাউন চলাকালীন সময়েও থমকে থাকেনি প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়া । যাদবপুর এবং IIEST শিবপুর , দুটি প্রতিষ্ঠানেই অনলাইনের মাধ‍্যমে ক‍্যাম্পাস ইন্টারভিউ করে একাধিক পড়ুয়াকে চাকরির অফার দিয়েছে বহু কম্পানি । তারপরেও কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে এই বছরের প্লেসমেন্টে । যেমন অনেক কম্পানি আগে অফার দিয়েছিল । কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই তা বাতিল করেছে । আবার , অনেক কম্পানির আসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসেনি ।

এই প্রসঙ্গে IIEST শিবপুরের এক আধিকারিক বলেন , " দু'টো কম্পানি অফার করার পরে আর কেউ নিতে চায়নি । ওই কম্পানিগুলি থেকে চার থেকে পাঁচজনের মতো পড়ুয়া অফার পেয়েছিল । প্রায় 10-12টা কম্পানির সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু, এই পরিস্থিতির কারণে তারা কেউ আর নিতে চাইল না । ইন্টার্নশিপের মাধ‍্যমেও প্লেসমেন্ট হত । সেক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপ শেষের পর অনেক পড়ুয়াই চাকরির অফার পেয়ে যেতেন । অন‍্যান‍্য বছর IIEST-র 60-70 জনের মতো ছাত্র-ছাত্রী এভাবে চাকরির অফার পেয়ে যেতেন‌ । সেটাও এবার প্রভাবিত হয়েছে । "

তবে, এই বছরের প্লেসমেন্টে শুধু কোরোনার প্রভাব পড়েনি বলেই দাবি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির । চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন , "এই বছর যে শুধু কোরোনার জন্য প্লেসমেন্টে প্রভাব পড়েছে তা নয় । হ‍্যাঁ এটা অন‍্যতম একটা কারণ । অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে । এই বছর আর একটা বিষয় , যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ততটা প্রভাব না ফেলতে পারলেও , অন‍্যান‍্য জায়গায় তার প্রভাব পড়েছে । তা হল, অর্থনৈতিক মন্দা আগের থেকেই চলছিল । একটি কম্পানি যে আমাদের এখানে অফার তুলে নিয়েছে তার পিছনে কোরোনা যতটা দায়ী , তার থেকে বেশি দায়ী বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা । ওটা একটি মাল্টিন্যাশনাল কম্পানি ছিল । যার ভিত্তি ভারতে নয় । ওরা সব নিয়োগই বাতিল করেছিল । এই রকম বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা সব জায়গাতেই হয়েছে‌ । যাদবপুরে একটিই ঘটেছে। আমি আবারও বলছি , কোরোনা একটা অন‍্যতম কারণ । কিন্তু , কোরোনার সঙ্গে যুক্ত জেনেরাল যে অর্থনৈতিক মন্দা , সেটা কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে এই ক‍্যাম্পাস নিয়োগের উপর ।"

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের থেকে নির্বাচিত মোট চারজন সেন্ট্রাল প্লেসমেন্ট কো-অর্ডিনেটর থাকেন । তাঁরা প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্য করে থাকেন । এই বছরের এক সেন্ট্রাল প্লেসমেন্ট কো-অর্ডিনেটর নরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন , "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরোনা ভাইরাসের জন্য প্লেসমেন্টের উপর খুব কম প্রভাব পড়েছে । কারণ, যে সময় লকডাউন শুরু হয় সেই সময় আমাদের 80 শতাংশের বেশি পড়ুয়া চাকরি পেয়ে গেছিল । আরও কিছুদিন হাতে পাওয়া গেলে হয়তো নম্বরটা কিছুটা বাড়ত । "

এই বছরের প্লেসমেন্ট ভালো হলেও আগামী বছর নিয়ে যথেষ্ট দুশ্চিন্তায় রয়েছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ । 2021-এর প্লেসমেন্ট নিয়ে চিরঞ্জীবাবু বলেন , " আমার ধারণা কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও তার ব্যাতিক্রম হবে না । আগে থেকেই একটা অর্থনৈতিক মন্দা ছিল । সেটা আরও বেশি ঘনীভূত হয়েছে । তার জন্য বিশ্ব এবং ভারতে যে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে তার কিছুটা প্রভাব পড়বেই । সেটা নিয়ে আমাদের একটু আশঙ্কা আছে । আমি দীর্ঘদিন প্লেসমেন্টের সঙ্গে যুক্ত। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়তেই পারে। 2021-এ যাঁরা হবেন সেই ব‍্যাচটা নিয়ে আমরা সত‍্যিই কিছুটা চিন্তায় আছি । 2021-টা যথেষ্ট চ‍্যালেঞ্জিং। সেই চ‍্যালেঞ্জটা আমাদের নিতে হবে । সেটা আমরা কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারি সেটাও আমাদের পর্যালোচনা করে দেখতে হবে । "

কী বলছে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ

প্লেসমেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে IIEST-র এক আধিকারিক বলেন, " গোটা বিশ্বে একটা অর্থনৈতিক মন্দা চলছে । ভারতবর্ষের GDP , শিল্প বৃদ্ধি যাই দেখা হোক না কেন দেখা যাবে আমরা একটা অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি । এটার প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই চাকরির উপর পড়বে । লকডাউনে সবকিছু থমকে গিয়েছে । তাতে কম্পানিগুলির অবস্থা সহজেই অনুমেয় । রাজ‍্য থেকে বছরে 35-40 হাজার পড়ুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে । নিয়োগটা যদি আগের তুলনায় অর্ধেক বা তিনভাগের এক ভাগ হয়ে যায় তাহলে যে সব প্রতিষ্ঠানগুলি নিচের দিকে আছে তাঁদের ওখানে ক্যাম্পাসিংয়ে প্রভাব পড়বে । যাদবপুর , শিবপুর, IIT, NIIT একটা ব্র্যান্ডিংয়ের মধ্যে পড়ে । তাই তারা কম প্রভাবিত হবে । তবে আগামী বছরের প্লেসমেন্ট আগের মতো হবে না তা নিশ্চিত ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.