কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুরের ঘটনায় 14 জন ট্রেনি ডাক্তারকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ৷ বিচারপতির প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, "এ তো কলেজ কর্তৃপক্ষের অতিসক্রিয়তা বলে মনে হচ্ছে। "
গত 5 সেপ্টেম্বর সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বৈঠকের সময় কলেজের প্রিন্সিপালের ঘরে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করা, গুণ্ডামি, ভাঙচুরের ঘটনার পর কামারহাটি থানায় 15 জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ মনোজিৎ মুখোপাধ্যায়।
বিচারপতি গত শুনানিতে কামারহাটি থানায় কাছে সিসিটিভি ফুটেজ এবং কেস ডাইরি তলব করেছিলেন। এদিন সেই সিসিটিভি ফুটেজ জমা করেন আইনজীবী। পুলিশের আইনজীবী রুদ্র নন্দী এদিন আদালতে জানান, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যাচ্ছে, ঘটনাস্থল অধ্যক্ষের ঘরের সামনে। এই ট্রেনি ডাক্তাররা বাইরে থেকে এসে মোবাইলে রেকর্ড করছিল অধ্যক্ষের ঘরের ভিতরে যা হচ্ছিল । তার জন্য ভিতর থেকে ঘরের যে অংশ থেকে মোবাইলে ভিডিও করছিল সেখানে কাগজ লাগিয়ে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু বাইরে থেকে ধাক্কাধাক্কি করতে কাঁচের দরজার গ্লাস ভেঙে যায়।
বিচারপতি সেনগুপ্ত বলেন, "এটা র্যাগিংয়ের ঘটনা নয়।" রেসিডেন্ট ডাক্তারদের তরফে আইনজীবী সৌম্য মজুমদার অবশ্য বলেন, "রেসিডেন্ট ডাক্তাররাই কলেজ কাউন্সিলে অভিযোগ জানিয়ে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছিলেন।" তিনি আরোও বলেন, "ন্যাশানাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রুল অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া উচিত । এই ঘটনা র্যাগিংয়ের মধ্যে পড়ে কি না, কলেজ কাউন্সিলের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিত ৷ কারণ এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে ইন্টার্ন ডাক্তাররা।"
হাসপাতালের তরফে আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত জানান, অধ্যক্ষকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই 7 সেপ্টেম্বর 9 জনকে প্রাথমিকভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করা হয়। পরে ফের পাঁচ জনকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করা হয় ৷ মোট 14 জনকে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে ৷
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বহিষ্কৃত ডাক্তারদের তরফে বলেন, "রেসিডেন্ট ডাক্তাররা দরজা কেন পুরোপুরি বন্ধ করে দিলেন ভিতর থেকে ? পুলিশ পদক্ষেপ করেছে আমাদের বিরুদ্ধে ৷ কয়েকজন আদালত থেকে বেল নিয়েছেন ৷ কিন্তু রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হল না কেন ? ভিডিও করতে দেওয়া হবে না বলে দরজা বন্ধ করা হয় ৷ কলেজে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি কই ? অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডও নেই ? কেন বরখাস্ত করা হল ? কোন আইনে অন্তর্বর্তী সাসপেনশনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ? শুধুমাত্র বিরোধী পক্ষ বলেই কারোর বিরুদ্ধে এই ভাবে পদক্ষেপ করা যায় না ৷"
সেই সময় বিচারপতি সেনগুপ্ত মন্তব্য করেন, "এফআইআর-এর ভিত্তিতে সাসপেন্ড করা হল বলে উল্লেখ করা হয়েছে কলেজের তরফে ৷ কিন্তু এই ভাবে সাসপেন্ড করা যায় না। এখানে অতি তৎপরতা দেখানো হয়েছে।"