কলকাতা, 11 ফেব্রুয়ারি: সোমবার সকালে কলকাতা পুরনিগমের পাসপোর্ট ও জন্ম সার্টিফিকেট সংক্রান্ত বিভাগের সামনে আসেন এক যুবক । অভিযোগ, উদ্দেশ্যহীনভাবে তিনি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ঘরের সামনে ঘোরাফেরা করছিলেন । পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর নাম রফিকুল ইসলাম বিশ্বাস । পাসপোর্ট সংক্রান্ত কিছু কাজের জন্যই তিনি পুরনিগমে এসেছিলেন ।
পুরনিগমের নিয়ম অনুযায়ী, তাঁর দেওয়া সমস্ত নথি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন পুরকর্মীরা । আর সেখানেই তাঁর একাধিক নথিপত্রে ধরা পড়ে অসঙ্গতি । এই বিষয়ে কলকাতা পুরনিগমের এক কর্মী জানান, রফিকুল ইসলাম বিশ্বাসের পাসপোর্ট, আধার কার্ড ও অন্যান্য পরিচয়পত্রে উল্লিখিত তথ্য একে অপরের সঙ্গে ঠিকভাবে মিলছে না । বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে আটক করে খবর দেওয়া হয় স্থানীয় নিউ মার্কেট থানায় ।
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার বলেন, "রফিকুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে পটল নামে 29 বছরের এই যুবক নদিয়া জেলার চোপড়ার বাসিন্দা । কিন্তু এই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আরবে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল । পরে সে দেশে ফিরে আসে । আমরাও বিষয়টি ভালোভাবে তদন্ত করে দেখছি যে, সে কোন উদ্দেশ্যে কলকাতা পুরনিগমে এসেছিল ৷"
নিউ মার্কেট থানা সূত্রের খবর, 2016 সালে এই রফিকুল ইসলাম বিশ্বাস আরবে চলে যান । সেখানে কয়েকবছর কাজ করার পর 2020 সালের পর ফের ভারতে ফিরে আসেন । ইতিমধ্যেই তার সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রফিকুলের দূরসম্পর্কের দুই আত্মীয় রয়েছে। এই দুই আত্মীয়র মধ্যে একজন ভারতীয় সেনায় কর্মরত । বর্তমানে তিনি ফোর্ট উইলিয়ামে রয়েছেন । তাঁর নাম কাজল গনি । এরপরেই নিউ মার্কেট থানার তরফ থেকে ভারতীয় সেনায় কর্মরত কাজল গনিকে ডেকে পাঠানো হয়। পরে জানা যায়, রফিকুলের আরও এক আত্মীয় রয়েছেন যিনি কলকাতা পুলিশের ওয়ারলেস ব্রাঞ্চের কনস্টেবল । যার নাম অনিরুদ্ধ গনি । তাঁকেও নিউ মার্কেট থানায় ডেকে পাঠানো হয় ।
লালবাজার সূত্রের খবর, তাঁরা রফিকুলকে দেখে চিনতে পারেন ও তাঁকে সনাক্ত করেন । তাঁরা দুজনেই জানান, রফিকুলের মানসিক সমস্যা রয়েছে । তাঁর চিকিৎসা চলছে । এরপর লালবাজারের তরফে রফিকুলের নদিয়া জেলার চোপড়ার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা হয় । পরিবারের সদস্যরা সোমবার রাতেই কলকাতায় আসেন। পরে রফিকুলের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র তাঁরা নিউ মার্কেট থানায় জমা দেন ।
সত্যিই রফিকুলের কোনও মানসিক সমস্যা রয়েছে কি না এবং তাঁর কী চিকিৎসা চলছে, তা জানার জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এখনও রফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন নিউ মার্কেট থানার তদন্তকারী আধিকারিকরা । এছাড়াও খতিয়ে দেখা হচ্ছে 2016 থেকে রফিকুল আরবের কোন কোন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং তাঁর সঙ্গে কাদের যোগাযোগ রয়েছে ।