কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি: গল্ফগ্রিনের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তদন্তে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আগেই এবার তদন্তে সরাসরি হস্তক্ষেপ করল হাইকোর্ট । বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ শুক্রবার নির্দেশ দিয়ে জানান, তদন্তে ত্রুটির জন্য অভিযুক্ত ছাড়া পেয়ে যেতে পারে । কারণ কেস ডায়েরি খতিয়ে দেখে মনে হয়েছে কোনও চিকিৎসার নথি আদালতে দেওয়া হয়নি । কোনও সাক্ষীকেও এই ব্যাপারে রাখা হয়নি । তদন্তকারী অফিসার হাসপাতালের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি । এমনকী আরও নতুন কিছু ধারা যুক্ত করার দরকার থাকলেও তা করা হয়নি ।
সেই জন্য বিভাগীয় ডিসিকে বিচারপতি নির্দেশ দেন, যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখে একমাসের মধ্যে নতুন চার্জশিট জমা দিতে হবে । ডিসি প্রয়োজন মতো নতুন তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করতে পারবেন । নিম্ন আদালতে মামলা চলার সময় একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে ।
মামলায় এখনও পর্যন্ত যাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে তাতে অসন্তুষ্ট বিচারপতি ঘোষ । আইও অর্থাৎ তদন্তকারী অফিসার নিজেও এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন । শুনে বিচারপতি ঘোষের প্রশ্ন, "এটা কলকাতা পুলিশের তদন্ত ? কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে তাতেই হয়ে গেল ? এটা কলকাতা পুলিশের তদন্ত ? কোন ডাক্তারের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে ?"
বিচারপতি এদিন তদন্তকারী অফিসারের রিপোর্ট দেখে আরও বলেন, "কোনও ডাক্তারকে সাক্ষী করা হয়নি । কোনও মেডিক্যাল অফিসার সাক্ষী দিচ্ছে না এটা হতে পারে ! শুধু মাথা খাটানোর ত্রুটি এটা নয়, গাফিলতি এটা । কেস ডায়েরির সঙ্গে রিপোর্টের কোনও সম্পর্ক নেই । এটা কলকাতা পুলিশের থেকে আশা করা যায় না । আমি নথির উপর কথা বলছি । আপনার হাতে যে নথি আছে তাকে কাজে লাগালেন না !"
এর আগে গত 12 ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ঘোষ তদন্তকারী আধিকারিকের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, "এইসব অফিসারদের কলকাতা পুলিশে থাকার কোনও যোগ্যতা নেই । এদের জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া উচিত ।"
উল্লেখ্য, গল্ফগ্রিন এলাকায় বাড়ির সামনে পোষ্য কুকুরকে নিয়ে ঘোরার সময় অভিনব সাহা নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে স্থানীয় কিছু যুবকের কথা কাটাকাটি থেকে মারামারি পর্যন্ত গড়ায় । তাঁর মা ঠেকাতে গেলে তিনিও শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন । ঘটনায় গুরুতর আহত হন অভিনব ৷ প্রথমে তাঁকে পরিবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে । তারপর অবস্থা আরও সংকটজনক হওয়ায় তাঁকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় । ওই হাসপাতাল অভিনবর প্যারালাইজড হওয়ার কথা জানায় । পুলিশ প্রথম হাসপাতাল থেকে চিকিৎসার নথি সংগ্রহ করলেও দ্বিতীয় হাসপাতালের কোনও নথি সংগ্রহ করেনি । ফলে অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করলেও নিম্ন আদালত তাদের জামিন দিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ৷