কলকাতা, 14 মার্চ: স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত যতই এগোচ্ছে, ততই মন্ত্রী থেকে আধিকারিক, তৃণমূলের (Trinamool Congress) ছোট থেকে বড় নেতাদের গ্রেফতারের সংখ্যা বাড়ছে । এই দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ৷ গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ৷ এমনকী সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের মহাসচিব পদ থেকে ৷
পার্থ বারবার দলের পাশে থাকার বার্তা দিলেও তৃণমূল যে তাঁর পাশে নেই, তা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতার কথা স্পষ্ট হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার তৃণমূলের অন্যতম হেভিওয়েট নেতা ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) মন্তব্যে পার্থকে নিয়ে তৃণমূলের মনোভাব আরও স্পষ্ট হল ৷ ফিরহাদের মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে পার্থ যে এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, তা কার্যত মেনেই নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দল ৷
মঙ্গলবার শুরু হল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা । সেই কারণে ছাত্রছাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাতে চেতলার একটি স্কুলের সামনে হাজির মন মন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম । তিনি ছাত্রীদের ফুল ও উপহার দেন (Firhad Hakim Greets Higher Secondary Examinees) । তার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ৷ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘সত্যি সত্যি এই পার্থদাকে আমি চিনতাম না । এই পার্থদা আমার কাছে নতুন । বহু বছর আমি পার্থদার সঙ্গে রাজনীতি করেছি । এটা কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি ! টাকা নিয়ে কেউ চাকরি দেবে, এটা ভাবতে পারিনি ।’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন হুগলির তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ইডি সূত্রে খবর, শান্তনুকে জেরা করে স্পষ্ট হয়েছে যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই দুর্নীতির অন্যতম মূলচক্রী ৷ ফলে এই নিয়ে নতুন করে হইচই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ বিরোধীরা এবার আরও বেশি সরব হয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷ এই নিয়ে ফিরহাদ অবশ্য বলছেন,‘‘যতক্ষণ না প্রমাণিত হচ্ছে ততক্ষণ কিছু বলা যাবে না ।’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কী হয়েছে সেটা আমি জানি না । তবে যা হয়েছে সেটা কাম্য নয় । এটা আমাদের কাছে লজ্জার ।’’
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে যাঁদের দেখা যায়, তাঁদের মধ্যে পার্থ যেমন ছিলেন, তেমনই অনুব্রত মণ্ডলও (Anubrata Mondal) ছিলেন ৷ দু’জনেই গ্রেফতার হয়েছেন৷ পার্থ নিয়োগ দুর্নীতিতে, আর অনুব্রত গরুপাচার কাণ্ডে ৷ পার্থর কাছ থেকে দলীয় পদ কেড়ে নেওয়া হলেও অনুব্রত এখনও বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে বহাল রয়েছেন ৷ এর পরও পার্থ কখনও দল বিরোধী মন্তব্য করেননি ৷ বরং দলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন ৷
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভার উপ-নির্বাচনে হেরেছে তৃণমূল ৷ তার পরও জেল থেকে আদালেত ঢোকার মুখে পার্থ পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ভালো ফলের বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন ৷ এই নিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পার্টি এরপর আর আলোচনায় বসেনি । পার্টি ঠিক করবে । দলে কী আলোচনা হবে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করেন ৷ তিনি ও দল বৈঠক বসলে আলোচনা হবে ।’’
আরও পড়ুন: বুধেই মুখোমুখি অনুব্রত-সুকন্যা ? মণীশকেও দিল্লিতে তলব ইডির