কলকাতা, ৯ মার্চ : প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে এই বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। মোবাইল নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কড়া মনোভাব নিলেও প্রতিদিনই এক, দু'জন করে পরীক্ষার্থী ধরা পড়ছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সংসদ। পরীক্ষার অষ্টম দিনেও তার ব্যতিক্রম দেখা গেল না। মোবাইল নিয়ে ধরা পড়ায় আজ দুই পরীক্ষার্থীর এবছরের পরীক্ষা বাতিল করল সংসদ।
আজ পরীক্ষা শেষে একটি বিবৃতি দিয়ে সংসদ জানিয়েছে, পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। হাওড়া জেলার শ্যামপুর ও খিদিরপুরের দুটি পরীক্ষাকেন্দ্রে দুজনের কাছ থেকে মোবাইল পাওয়া গেছে। তাদের এবছরের সকল পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে। আজ নিয়ে মোট ১৮জন পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮টির মধ্যে ৬টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষা চলাকালীন ফাঁস হয়। এই ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রথম থেকেই সতর্ক ছিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তার ইতিবাচক ফলাফলও দেখা যাচ্ছে। সংসদের এই কড়া মনোভাবকে স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষক মহল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, “এই ধরনের অপরাধ যারা করে তারা কোনও না কোনও জায়গা থেকে সাহস পায়। এত প্রচার করা হচ্ছে, রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হচ্ছে, আমরাও প্রথম দু-তিন দিন প্রচুর বলেছি। তারপরেও কেউ যদি করে তাহলে ধরে নিতে হবে তাকে উৎসাহ বা প্রোটেকশন দেওয়া বলুন, এই কাজটা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সংসদ যদি এই কড়া অবস্থান চালিয়ে যেতে পারে তাহলে এ বছর তো গেল, পরের বছর আরও ভালো হবে। কিন্তু মাঝখানে যদি কেউ ঢুকে পড়ে বলে, না ছেড়ে দেওয়া হোক, রেজিস্ট্রেশন ক্যানসেল করার দরকার নেই, তাহলে কিন্তু উদ্দেশ্য বিঘ্নিত হবে। যেটা মুখে বলা হয়েছে যে, পরীক্ষা বাতিল বা রেজিস্ট্রেশন বাতিল সেটা কার্যকর করতে হবে। যেটা বলা হয়েছে সেটা যদি করা হয় তাহলেই ভালো। কিন্তু, যদি কোনও চাপে পিছিয়ে আসা হয় বা এটাকে কোনও ভাবে হালকা করে দেওয়া হয় তাহলে একই ঘটনা বছরের পর বছর ঘটবে। সংসদ নিজের কাজটা ঠিকভাবেই করছে। আমাদের দাবি, এই স্ট্যান্ডপয়েন্টটাকে যেন ধরে রাখা হয়।”
এপ্রসঙ্গে সেকেন্ডারি টিচার্স অ্যান্ড এমপ্লয়েজ় অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, “প্রথমত আমরা বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র ছাত্রীদের মোবাইল নিয়ে যাওয়ারই বিরুদ্ধে। অধিকাংশ বিদ্যালয়েই এই নিয়ম ফলো করা হয়। যেহেতু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে, তাদের বয়স ১৮-র কাছাকাছি। এদের মধ্যে একটা সেকশন আছে, যারা সমস্ত নিয়মকানুনগুলো ফলো করে না। তবে যারা পরীক্ষা পরিচালনার মধ্যে থাকেন তাঁদের দায়ভারটা অনেক বেশি। তাঁরা কেন মোবাইল নিয়ে অ্যালাও করেন? শুধুমাত্র ট্রান্সপারেন্ট পেন্সিল বক্স, ক্যালকুলেটর নিয়ে ঢোকা যায় পরীক্ষাকেন্দ্রে। এই বয়সের ছাত্র-ছাত্রীদের একটা প্রবনতা থাকে অথরিটির বিরুদ্ধে যাওয়া। তবে যারা নিয়ম ভাঙছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি পাওয়া উচিত। এই সমস্ত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কাউন্সিলের পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী যা শাস্তি পাওয়ার কথা, সেই শাস্তিই পাওয়া উচিত। এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই।”