কলকাতা, 28 জুলাই: সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু 16 দিনের প্যারোলে মুক্তির পর প্রেসিডেন্সের সংশোধনাগারে ঢোকার পরই বুকে যন্ত্রণা অনুভব করেন। এরপরই পরীক্ষার পর জানা যায় তাঁর হার্টে তিনটি ব্লকেজ রয়েছে। প্রয়োজনে বাইপাস সার্জারি করা হতে পারে। আর সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের সেই যাবতীয় মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট এবার ভালোভাবে যাচাই করার জন্য দিল্লির এইমস হাসপাতালে সে রিপোর্ট পাঠানোর ব্যবস্থা করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই মর্মে ইডি'র তরফে আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। আদালতের অনুমতি পেলে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের মেডিকেল রিপোর্ট পাঠানো হবে দিল্লির এইমস হাসপাতালে।
ইতিমধ্যেই আদালতে কালীঘাটের কাকুর তরফে জানানো হয়েছে, যে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে উপর ভরসা রাখতে পারছেন না। দক্ষিণ ভারতের কোনও হাসপাতাল থেকে কিংবা শহরের বাছাই করা তিনটি হাসপাতালের নাম তিনি জানিয়েছেন বলে খবর ৷ সেখান থেকে তাঁর সার্জারি করানোর অনুরোধ করেন তিনি ৷ তবে বর্তমানে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু এসএসকেএম হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর ধমনীতে তিনটি ব্লকেজ ধরা পড়েছে। এক্ষেত্রে বাইপাস সার্জারি করা হতে পারে।
গত 30 মে কালীঘাটের কাকুকে শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতার করে ইডি। এরপর কালীঘাটের কাকু গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী'র মৃত্যু হয় ৷ এরপর আদালতের বিশেষ অনুমতি নিয়ে 16 দিনের প্যারোলে মুক্তি পান কালীঘাটের কাকু ৷ প্যারোল শেষ হওয়ার পর তাঁকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেন। গ্রেফতারের পর কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফ থেকে কয়েক হাজার পাতার চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। শুক্রবার ইডির বিশেষ আদালতে এই চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মোট সাত হাজার 600 পাতার এই চার্জশিটে কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে এনেছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: চিকিৎসা ও জামিনের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারে 'কালীঘাটের কাকু'
জানা গিয়েছে, একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে কালীঘাটের কাকুর নামে। পাশাপাশি আগেই জানা গিয়েছিল তাঁর কোটি কোটি টাকা খাটানো হয়েছিল রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়। এই মর্মে কলকাতার বেশ কিছু নির্মাণকারী সংস্থার অফিসে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালায় ইডি। দক্ষিণ কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের একজন ব্যবসায়ীকে কার্যত ভয় দেখিয়ে তার ছ'টি সংস্থায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন কালীঘাটের কাকু। মূলত কয়েক কোটি কালো টাকা সাদা করার জন্যই এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন তিনি বলে অভিযোগ ইডির। আর তাঁকে এই কাজে সাহায্য করেছিলেন তাঁর হিসাব রক্ষক। এই দুর্নীতির ক্ষেত্রে সেই হিসাব রক্ষকের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে চলেছেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা।