কলকাতা, 2 মে: প্রত্যেক বছর এই সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিপদে পড়তে হয় বাংলাকে । আর তাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আগেভাগেই সতর্ক হচ্ছে রাজ্য । মঙ্গলবার নবান্নে বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত একাধিক দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী । এই বৈঠকেই দফতরগুলিকে প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বৈঠক থেকে মুখ্যসচিব নির্দেশ দিয়েছেন বিপর্যয়ের জন্য অপেক্ষা না-করে আগাম প্রস্তুতি সেরে ফেলতে হবে । এক্ষেত্রে নবান্ন থেকে জেলা এবং স্থানীয় প্রশাসন হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে ।
প্রসঙ্গত, এদিনের এই বৈঠকে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ছাড়াও সিভিল ডিফেন্স, এনডিআরএফ-সহ একাধিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন । মুখ্যসচিব মূলত সমস্ত দফতরগুলির সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলার নির্দেশ দিয়েছেন । আর আকস্মিক কোনও বিপদ এলে যাতে দ্রুত বেশি সংখ্যক মানুষকে রক্ষা করা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি রাখার কথাও বলেছেন তিনি ।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামী 10 মে বঙ্গোপসাগরে উৎপত্তি হওয়ার কথা ঘূর্ণিঝড় মোচার । যদিও এখনও তার গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত নয় নবান্ন । তবে এ বছর এই বিপর্যয় মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে । সাধারণত নবান্নের তরফ থেকে প্রত্যেক বছর জুনেই কন্ট্রোলরুম খোলা হয় । যেহেতু ঘূর্ণিঝড়ের একটা পূর্বাভাস ইতিমধ্যেই রয়েছে । তাই কাল বিলম্ব না করে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে রাজ্যে ।
এক্ষেত্রে জেলাভিত্তিক কন্ট্রোলরুমের পাশাপাশি সেন্ট্রালি একটা কন্ট্রোলরুম খোলার কথাও বলা হয়েছে । একইসঙ্গে এদিন নবান্নের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পাঞ্চেত-সহ আরও যে বাঁধগুলির মেরামতের কাজ চলছে সেগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে । একইসঙ্গে যে সমস্ত নদী বাঁধগুলির অবস্থা খারাপ সেগুলি বিপদ আসার আগেই ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
যেহেতু মে মাসে গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে । গত বছর এই সময়েই বাংলায় 'অশনি' আছড়ে পড়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাংলায় আসেনি । তবে 2021 সালে এই মে মাসেই এসেছিল ঘূর্ণিঝড় যশ । 2020-তে ছিল আমফান । এই অবস্থায় নবান্ন মনে করছে মে মাসটা মূলত সাইক্লোনের মাস । সেই কথা ভেবেই আগাম কন্ট্রোল রুম খুলে দেওয়া হচ্ছে । 1 মে থেকে 30 অক্টোবর পর্যন্ত এই কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে ৷
একইসঙ্গে সেচ দফতরকে বলা হয়েছে পাঞ্চেত এবং মাইথন থেকে কবে কবে কত কিউসেক জল ছাড়বে সেই বিষয়ে নজর রাখতে ৷ সেইমতো ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাতে এর জন্য রাজ্যকে ভুগতে না হয় তা নিশ্চিত করা । মোটের উপর মে-র দ্বিতীয় দিন থেকেই নবান্ন বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করে দিল ।
আরও পড়ুন : চলতি সপ্তাহেই হাওড়া থেকে পুরী বন্দে ভারত ও নিউ গড়িয়া থেকে রুবি মেট্রো উদ্বোধনের সম্ভাবনা