কলকাতা, 21 অগস্ট: গণধর্ষণের শিকার 11 বছর বয়সি নাবালিকার গর্ভপাতে সম্মতি হাইকোর্টের। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এই নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন মেডিক্যাল বোর্ড রিপোর্ট ফাইল করে। মেডিক্যাল বোর্ড 17 অগস্টের নির্দেশের পর 18 অগস্ট চিকিৎসকরা মতামত দিয়েছেন মেয়েটির গর্ভপাত করানো যাবে। তবে সেটা তমলুক হাসপাতালে না-করে একটু উচ্চতর হাসপাতালে করলে ভালো হবে। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের নির্দেশ মেয়েটির গর্ভপাত হবে এসএসকেএম হাসপাতালে।
যাতে বাচ্চা মেয়েটির কোনওরকম শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি হলে তা সামাল দেওয়া যায়। তারজন্য এসএসকেএম হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে একটা মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে মেয়েটির গর্ভপাত করাতে হবে যত দ্রুত সম্ভব। গত 17 অগস্ট 24 সপ্তাহের বেশি অন্তঃসত্ত্বা 11 বছর বয়সি ওই নাবালিকার আদৌ গর্ভপাত করানো সম্ভব কি না, তা জানতে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। নির্দেশে বলা হয় 24 ঘণ্টার মধ্যে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে নাবালিকা মেয়েটির গর্ভপাতের বিষয়ে।
পূর্ব মেদিনীপুর সিএমওএইচ ও তমলুক মেডিক্যাল হাসপাতালের সুপার ইনটেনডেন্টকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এদিন সেই রিপোর্ট জমা পড়ে আদালতে। চিকিৎসকরা জানান গর্ভপাত করানো সম্ভব। শারীরিক নির্যাতনের শিকার 11 বছর বয়সি মেয়েটি যখন 24 সপ্তাহের বেশি অন্তঃসত্ত্বা, অত্যন্ত গরীব পরিবারের মেয়ে। তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও কম হওয়ায় দেশের আইন সম্পর্কে ও তারা সম্পূর্ণ অজ্ঞ। গণধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল।
আরও পড়ুন: নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক, নির্যাতিতাকে 8 ঘণ্টা বসিয়ে রাখল হাসপাতাল !
কারণ দেশের আইন অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কোনও মহিলা, নাবালিকা বা নাবালিকার পরিবার 20 সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে পারে। বিশেষ কোনও রোগ বা জটিল শারীরিক পরিস্থিতিতে তা 24 সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ানো যায়। তার পরে গর্ভপাত করাতে হলে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানাতেও দেরি করে তার পরিবার। গত মাসে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের সাহায্যে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়।
ওই নাবালিকা এখন একটি হোমে রয়েছে। সে মা হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই। আদালতে পরিবারের দাবি ছিল, মেয়ে শারীরিক এবং মানসিকভাবে শক্ত নয়। একটি 11 বছরের মেয়ের পক্ষে সন্তানের জন্ম দেওয়া ও তার পরবর্তী যা কিছু তা বেশ কঠিন বিষয় ৷ প্রাথমিকভাবে যে হাসপাতালে দেখানো হয়েছিল তার পরিবার, সেখানে জানানো হয় অন্তঃসত্ত্বার বয়স কম হওয়ায় গর্ভস্থ সন্তানের ওজন কম এবং অন্য কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই জন্যই আদালতে মামলা দায়ের করতে বলেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: 11 বছরের নাবালিকার গর্ভপাত সম্ভব? মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের