কলকাতা 24 অগাস্ট: বাড়ির পাশেই বিদেশি মদের দোকান ৷ সকাল বা সন্ধ্যে সব সময় দোকানের বাইরে লাইন লেগেই থাকে ৷ চলে মদ বিক্রি ৷ লেগে থাকে অশান্তিও৷ আর তাই বিষয়টা ভালো চোখে নেননি পাড়ার কেউই ৷ দোকান তুলে দিতে পুলিশ-প্রশাসনের দরজায় কড়াও নেড়েছিলেন তাঁরা ৷ যদিও প্রতি ক্ষেত্রেই ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে৷ সরকারের অনুমতিতেই দোকানটি চালু হয়েছে, এই যুক্তিতে কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব হয়নি । এবার তাই বাধ্য হয়েই হাইকোর্টে আবেদন জানালেন এলাকার এক বাসিন্দা ৷
ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকুলতলা এলাকার ঘোষালারচক গ্রাম ৷ পাড়ার মধ্যে তৈরি হয়েছিল একটি বিদেশি মদের দোকান ৷ অভিযোগ, কয়েকদিন আগে বেশ কয়েকজন মত্ত যুবক করে এলাকায় হুজ্জুতি করে ৷ মহিলাদের কটূক্তি করে ৷ প্রতিবাদ করতে গেলে জোটে বেধড়ক মারধর ৷ স্থানীয় থানায় অভিযোগের পর জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ জানান ৷ অভিযোগ, গত মাসের 29 তারিখ লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও লাভের লাভ কিছু হয়নি । রমরমিয়েই চলছে ওই দোকান ৷ তাই বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন ঘোষালারচক গ্রামের বাসিন্দা প্রভাস সাপুই ৷ অবিলম্বে ওই মদের দোকানটি বন্ধ করার আবেদন তাঁর৷ বিচারপতি দেবাংশু বসাকের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়েছে । আগামী শুক্রবার হতে পারে মামলার শুনানি ৷
প্রভাসবাবু জানিয়েছেন, বাড়ির পাশেই রয়েছে তিনটি মন্দির (পঞ্চানন, শিব ও কালী) ৷ দোকানটির কাছাকাছি ছোটোদের একটা স্কুলও আছে । অভিযোগকারীর দাবি, দোকানটি এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে ৷ গ্রামের মহিলারা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারছেন না । এই সমস্যা নিয়ে প্রভাসবাবু ও গ্রামের অন্যান্যরা স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানান ৷ এক সময় দোকানে তালাও লাগিয়ে দেন স্থানীয়রা ৷ যদিও সেই তালা খুলে ফের চালু হয় দোকান ৷ এর পরই দোকান বন্ধ করার দাবিতে বকুলতলা মেন রোড অবরোধ করেন স্থানীয় ৷
মামলাকারীর আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরি বলেন, "আইন অনুযায়ী মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়ার আগে স্থানীয় জনমত যাচাই করতে হয় । জনমত যদি বিরুদ্ধে যায় তাহলে লাইসেন্স দেওয়া যায় না । এই বিষয়টি দেখার দায়িত্ব জেলা শাসকের । কিন্তু, জনমতের তালিকা তৈরি না করে, বক্তব্য না শুনে ওই মদের দোকানের অনুমোদন কী করে দেওয়া হল?
কিছু দিন আগেই প্রায় একই রকম একটি মামলায় হাইকোর্ট মদের দোকানের লাইসেন্স বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল । কারণ 100 জন গ্রামবাসী লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন তাঁরা চান না গ্রামে মদের দোকান চলুক ৷ এ ক্ষেত্রেও গ্রামবাসীরা চাইছেন ওই মদের দোকানটি বন্ধ হোক৷"