জলপাইগুড়ি, 28 সেপ্টেম্বর : কোরোনার সংক্রমণের জেরে এবার বিগ বাজেটের পুজো হাতছাড়া হয়েছে জলপাইগুড়ির প্রতিমা শিল্পীদের । মূর্তি তৈরির বায়না পাচ্ছিলেন না অনেকে । এরই মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো কমিটিগুলিকে 50 হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন । তারপর থেকেই বেড়েছে প্রতিমার চাহিদা । আশার আলো দেখছেন শিল্পীরা ।
কোরোনার সংক্রমণের জেরে মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হয় দেশে । বছরের প্রথম থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত সবরকম পুজো-পার্বণ বন্ধ ছিল । দুর্গাপুজো হবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন পুজো কমিটির কর্তারা । শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার জানায়, পুজো হবে । পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, 50 হাজার টাকা করে পাবে পুজো কমিটিগুলি । মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে দুর্গা প্রতিমার চাহিদা বেড়েছে জলপাইগুড়ি জেলায় । কিন্তু প্রস্তুতি না থাকায় অনেক শিল্পী কাজের বরাত নিতে পারছেন না । তবে একেবারে নিরাশও করছেন না তাঁরা । আগে থেকে কম খরচে একচালার প্রতিমা তৈরি করে রেখেছিলেন অনেকে । সেসব এখন 15 থেকে 25 হাজার টাকর মধ্যে বিক্রি হচ্ছে । প্রতিমার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আর্থিক সংকট কাটার আশা করছেন শিল্পী থেকে কারিগররা ।
শিল্পী চঞ্চল পাল বলেন, "আর্থিক সাহায্য মেলায় অনেকে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । বিগ বাজেটের পুজো নেই । তাই এক চালার ঠাকুর কয়েকটি বানিয়েছি । তবে চাহিদা মেটাতে পারছি না ।" দুর্গাপুজোর উপর মৃৎশিল্পীদের সারা বছরের রোজগার নির্ভর করে থাকে । এক লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতিমার অর্ডার আসে । এবার তা প্রায় এক চতুর্থাংশে দাঁড়িয়েছে । কারিগর সত্যলাল সরকার বলেন, "প্রতিমা বিক্রি না হলে আমরাই বা কী খাব? আর মালিকপক্ষ কী লাভ রাখবেন? এভাবেই চলতে হবে ।" আর এক কারিগর রণজয় দাস বলেন, "কোরোনার জন্য সারা বছর কাজ করতে পারিনি । রোজগার তেমন হয়নি । তবে পুজো হচ্ছে । কিছু আয় হবে আশা করছি ।"
মাটির প্রতিমায় রঙের প্রলেপ পড়ে গেছে । শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছেন না শিল্পী থেকে কারিগররা । তাদের একটাই লক্ষ্য, ছোটো করে হোক । কিন্তু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে যেন কোনও খামতি না থাকে ।