সিঙ্গুর , 31 মার্চ : মানুষ তাঁকে চেনে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই হিসেবে । বয়স 89 । এই বয়সের কারণেই সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য দলে আজ ব্রাত্য । এবারের নির্বাচনে তৃণমূল তাঁকে টিকিট দেয়নি । দলের প্রতি সেই ক্ষোভ মেটাতেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং নির্বাচনের টিকিটও পেয়েছেন । সিঙ্গুরের বিজেপি প্রার্থী হিসেবেই এবার ভোটের ময়দানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়বেন তিনি । অকপটে জানিয়েছেন বয়স কোন ফ্যাক্টর নয় , মনের জোরই তাঁর লড়বার শক্তি । জয়ের বিষয়েও আশাবাদী এই বর্ষীয়ান নেতা ।
এদিকে বৃহস্পতিবার সিঙ্গুরের জনসভায় এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্বাচনে মাস্টারমশাইয়ের আশীর্বাদ চেয়েছেন । নেত্রী এদিনের জনসভা থেকে মাস্টারমশাইয়ের উদ্দেশ্যে বলেন, "আমি ভেবে পাইনা মাস্টারমশাই কি করে বিজেপি হয়ে যায় মাস্টারমশাই কে আমি সম্মান জানাই । ওনার বয়সটাকে আমি সম্মান জানাই । আমি তো ওনাকে এতদিন জিতিয়ে নিয়ে এসেছি । আমি নিজে বলেছিলাম মাস্টারমশাই যেহেতু আপনি আমাদের সকলের থেকে বয়জ্যেষ্ঠ তাই আপনি আমাদের অ্যাডভাইস করুন । আপনাকে কোন একটা উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান বানিয়ে দেবো সেখানে আপনি সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন । আর আগামী পাঁচ বছরের জন্য বেচাকে এখানে কাজ করতে দিন । বেচা যেহেতু এখানকার লোকাল ছেলে, হরিপালে ছিল হরিপালে এবার ওর বৌকে দিয়েছি । মাস্টারমশাইকে আমি আজও সম্মান জানাই । আমি বললাম বেচা একটু মাস্টারমশাইকে বোঝা না যদি মাস্টারমশাই না দাঁড়ায় অন্য কোথাও থেকে দাঁড়াক তাহলে আমি সিঙ্গুরে দাঁড়াতে পারি । বেচা বলল মাস্টারমশাই শুনবেন না ।"
আরও পড়ুন : শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, পূর্ব মেদিনীপুরের নয় কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে ইভিএম
এরপর মাস্টারমশাইকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আপনি বাড়িতে থাকুন নিজের সম্মান বাঁচান, সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আর বেচারাম কে জয়ী হতে সাহায্য করুন । মনে রাখবেন আপনার সঙ্গে ও দীর্ঘদিন কাজ করেছে । তাই ওকে আশীর্বাদ করুন ।
এই বিষয়ে রবীন্দ্রনাথবাবু কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "চোর বেচারামকে আমি আশীর্বাদ করব না । ও দুবারের বিধায়ক হয়ে ওর পরিবারের নামে-বেনামে যা সম্পত্তি করেছে সেটা চুরি ছাড়া আর কিছুই নয় । মমতার তাকে ভোটে দাঁড়াতে না বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মমতা মিথ্যা কথা বলছেন । সাম্প্রতিককালে দুবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে । একবার যখন তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তখন তাকে ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । আর একবার যখন সিঙ্গুর ব্লক সভাপতি নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল তখন ক্ষোভ প্রকাশ করে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেছিলেন মহাদেব দাস কে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে গোবিন্দ ধারাকে ব্লক সভাপতি করা কোন মতেই মেনে নেবেন না । সে সময় একবার মমতা ফোন করেছিলেন তাকে । তখন ভোটে দাঁড়ানোর কোনও প্রসঙ্গে ওঠেনি । " নির্বাচনে সিঙ্গুরের মানুষ জবাব দেবে বলে জানান বর্ষীয়ান নেতা রবীন্দ্রনাথবাবু ।