বালুরঘাট, 2মার্চ : সঠিক নিয়ম মেনে দেওয়া হচ্ছে না বাড়ি বাড়ি জলের কানেকশন । পৌরসভার পক্ষ থেকে বিনামূল্যে কানেকশন দেওয়া হবে বললেও উপভোক্তাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে টাকা । এমন কী মুখ চিনে চিনে দেওয়া হচ্ছে কানেকশন । এই অভিযোগ তুলে সোমবার বিক্ষোভ দেখালেন বালুরঘাট পৌরসভার এক ও সাত নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যস্থল তারণ চন্দ্র স্কুলপাড়ার এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বালুরঘাট থানার পুলিশ ৷ পুলিশি হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি । স্থানীয়রা জলের কানেকশন দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে । যদিও বালুরঘাট পৌর প্রশাসক তথা সদর মহকুমাশাসক বিশ্বরঞ্জন মুখার্জি জানান 2018 সালে 2100 জন উপভোক্তা কানেকশন নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল । তারা সেই সময় টাকাও দিয়েছিল । তাই তাদের আগে কানেকশন দেওয়া হচ্ছে । সেগুলো শেষ হলে বাকিদের দেওয়া হবে ।
2014সালের মার্চ মাসে 2010-11 সালে বরাদ্দকৃত 42কোটি টাকা দিয়েই বালুরঘাট পৌরসভা বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানীয় জল দেওয়ার প্রকল্পের কাজ শুরু করে। 42কোটি টাকা দিয়ে প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু হলেও পরে তা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায় । অবশেষে 2018 সালে এই প্রকল্প শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে চালু হয় । প্রথম দিকে বলা হয় জল কানেকশনের জন্য দিতে হবে টাকা । যদিও পৌর নির্বাচনের ঠিক বিনামূল্যে জল দেওয়া হবে সেই ঘোষণা করা হয় পৌর প্রশাসকের তরফ থেকে । তারপর শহরে বেশ কিছু ওয়ার্ডে শুরু হয় জল দেওয়ার কাজ । অভিযোগ, সঠিক নিয়ম মেনে জলের কানেকশন দেওয়া হচ্ছে না । এনিয়ে আজ সকালে বালুরঘাট শহরের পাওয়ার হাউজ় স্কুল পাড়া এলাকার, এক নম্বর ও সাত নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলের বাসিন্দারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে । তাদের আবেদনপত্রের রিসিভ কপি নিয়ে এই বিক্ষোভে সামিল হয় । তাদের অভিযোগ, ঠিকাদার সংস্থা মুখ দেখে দেখে বিশেষ করে শাসকদলের নেতা কর্মীদের বাড়িতেই জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে ।
এই বিষয়ে এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অরূপ কর্মকার বলেন, ‘‘আমাদের এই এলাকার টিউবওয়েলের জল ব্যাবহারযোগ্য নয় । আমরা পৌরসভার টাইম কলের উপর নির্ভরশীল । তবে সেই জলও মাঝে মধ্যে আসে না । কিন্তু বাড়ি বাড়ি পানীয় জল দেওয়ার কথা শুনেই আমরা আবেদন করেছিলাম । সম্প্রতি এলাকায় জলের সংযোগ দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছিল । আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম । কিন্তু আমাদের আবেদনপত্রের রিসিভ কপি থাকা সত্ত্বেও পাড়ায় মাত্র কয়েকটি বাড়িতেই জলের সংযোগ দিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা । মুখ দেখে দেখে দেওয়া হচ্ছে ।’’
বালুরঘাট মহকুমাশাসক তথা পৌরসভার প্রশাসক বিশ্বরঞ্জন মুখার্জি বলেন, ‘‘2018সাল পর্যন্ত 2100 আবেদন জমা পড়েছিল । আমরা মার্চ মাসের মধ্যে ওই সমস্ত আবেদনকারী পরিবারকেই সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি । মার্চের পর থেকে শহরের বাকি প্রায় 25 হাজার পরিবারে বিনা খরচায় জলের সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে জলের সংযোগ দেওয়ার নাম করে কেউ বকশিশ নিচ্ছে, এই অভিযোগ পেলে, তার তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।"