মেখলিগঞ্জ, 1 নভেম্বর : স্বামীর মৃত্যুর পর তিন বিঘা জমিই সম্বল ৷ বয়স সত্তর ৷ শেষ বয়সে ছেলেমেয়ের থেকে ভালোবাসা, আদর-যত্নই চান তিনি ৷ তবে সে সৌভাগ্য কোথায় ? সম্পত্তি না লিখে দেওয়ায় ঠাঁই হয়নি নিজের বাড়িতে ৷ প্রায় চার বছর ধরে কখনও মেয়ের বাড়ি, কখনও ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েই দিন কাটছে তাঁর ৷
তিনি সুশীলা রায় ৷ কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ ব্লকের ভোটবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ৷ মৃত্যুর পর তিন বিঘা জমি রেখে গেছেন স্বামী উমেশ রায় ৷ সেই জমির লোভে সুশীলাকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত ছেলে কমল রায় ও ছেলের বউ ঝর্না রায় ৷ প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন ৷
অভিযোগ, প্রায় চার বছর ধরে সম্পত্তির লোভে কমল ও ঝর্না সুশীলাকে খেতে দিতেন না ৷ দিনের পর দিন বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন ৷ ছেলে, বউমার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি ৷ কয়েকদিন আগে নিজের বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করেন সুশীলা ৷ তবে, বাড়িতে ঠাঁই হয়নি তাঁর ৷ মারধর করে তাড়িয়ে দেন কমল ৷
শেষ পর্যন্ত, পুলিশের দ্বারস্থ হন সুশীলা ৷ গতকাল কমল ও ঝর্নার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মেখলিগঞ্জ থানায় ৷ সুশীলা বলেন, "কোনও মা চায় না সন্তানের ক্ষতি হোক ৷ কিন্তু ছেলে যদি না বোঝে তাহলে কী করব ? বাধ্য হয়েই থানায় অভিযোগ জানিয়েছি ৷"
তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঝর্না রায় ৷ তিনি বলেন, "সব ঠিকই আছে ৷ ছেলে-মা'তে ঝগড়া হত ৷ কোনও মারধর করা হয়নি ৷ সম্পত্তি না পেয়েই কেন তাড়িয়ে দেব ? শাশুড়ি মা মারা গেলে সব তো আমরাই পাব ৷ মারধর, প্রাণে মারার অভিযোগ মিথ্যে ৷"
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷