বোলপুর, 7 নভেম্বর: "আপনার সাহিত্য কীভাবে স্বীকৃতি পায়, তা সহজেই বোধগম্য", এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 5 পৃষ্ঠার ব্যঙ্গাত্মক চিঠি লিখলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ চারিত্রপূজা, কর্মী রবীন্দ্রনাথ, শান্তিনিকেতন স্মৃতি- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বেশ কয়েকটি পুস্তক থেকে উদ্ধৃতি তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে নানা ভাবে কটাক্ষ করার অভিযোগ উঠল উপাচার্যের বিরুদ্ধে ৷ অন্যদিকে, 'ফলকে ব্রাত্য রবীন্দ্রনাথ' প্রতিবাদে তৃণমূলের আন্দোলন 12 দিনে পা দিল ৷
17 সেপ্টেম্বর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনকে 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ' তকমা দিয়েছে ইউনেসকো ৷ সেই সংক্রান্ত 3টি শ্বেত পাথরের ফলক বসিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ তাতে আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম থাকলেও ব্রাত্য স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷ এর প্রতিবাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে 12 দিন ধরে মঞ্চ তৈরি করে ধরনা বিক্ষোভ করছে তৃণমূল ৷
এর মধ্যে 8 নভেম্বর উপাচার্য হিসেবে মেয়াদ শেষ হচ্ছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ৷ তার আগে মঙ্গলবার তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে 5 পৃষ্ঠার চিঠি দেন ৷ চিঠি জুড়ে 'চারিত্রপূজা', 'শান্তিনিকেতন স্মৃতি', 'কর্মী রবীন্দ্রনাথ' গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি তুলে ব্যঙ্গ করা হয় রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে ৷ উদ্ধৃতি ছাড়াও চিঠিতে উপাচার্য সরাসরি লেখেন, "আমার জানা নেই যে কেউ আপনার মতো এত গুণসম্পন্না আছে কি না ? আপনার সাহিত্য খুব সহজেই কেন স্বীকৃতি পায়, তা সহজেই বোধগম্য ৷"
উপাচার্য চিঠিতে আরও লেখেন, "সবশেষে বিশ্বভারতীর পরিবর্তন হচ্ছে, তাই যাঁরা এর থেকে ফায়দা নিতেন, তাঁরা ভীত এবং প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে যেমন দপ করে জ্বলে ওঠে, তাই তাঁরা এবার শেষ কামড় দিচ্ছেন ৷" এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 2 টি চিঠিতে বেনজির আক্রমণ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূলের বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল ৷ তিনি বলেন, "শেষ দিন পর্যন্ত বিশ্বভারতীকে যত রকম ভাবে পারছেন, কলঙ্কিত করছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ তিনি একজন নোংরা উপাচার্য। বিশ্বভারতীর মানকে যেভাবে নামাচ্ছেন, আর এই চিঠির কুকীর্তির জন্য তীব্র ভাষায় নিন্দা করি ৷"
আরও পড়ুন: মহর্ষির শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের জায়গায় বিশ্বভারতীর বিতর্কিত ফলক, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের