বীরভূম, 10 এপ্রিল: বঙ্গ সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ 14 এপ্রিল তিনি বীরভূমের সিউড়িতে একটি জনসভা করবেন বলে জানা গিয়েছে ৷ জেলার সংগঠনকে চাঙ্গা করতে বিজেপির এই শীর্ষনেতা রাজ্য আসছেন ৷ উল্লেখ্য, অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূলের সাংগঠনিক দায়িত্ব নিয়েছে খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই কারণেই কি এই জেলার সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে রাজ্য নেতৃত্বের উপর ভরসা করতে পারছে না গেরুয়া শিবির ? উঠছে সেই প্রশ্নও ৷
গরুপাচার মামলায় এখন দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ৷ তাঁকে পদে বহাল রেখে কোর-কমিটি গঠন করে জেলার সাংগঠনিক কাজ চালাচ্ছে তৃণমূল ৷ সামনেই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ সেখানে অনুব্রতহীন বীরভূমে দলের ফল ভালো করতে তৃণমূল নেত্রীর যে কারও উপর ভরসা নেই তা তাঁর নিজের সিদ্ধান্তেই কার্যত স্পষ্ট ৷ তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের সাংগঠনিক রাশ নিজের হাতে নিয়েছেন ৷
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, অনুব্রত মণ্ডল জেলে যেতে বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি মনে করেছিল, এইবার বীরভূমের জমিতে হালে পানি পাবে তারা ৷ অন্তত, অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুবিধা সবাই নিতে চেয়েছিল ৷ কিন্তু, ‘সে গুড়ে বালি’ ঢেলে দেন খোদ মমতা ৷ কোর-কমিটি গঠন করে নিজে জেলার সংগঠনের মাথায় বসেন ৷ আর তাতেই বিরোধীদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায় ৷
তাই বিজেপির মতো সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল বীরভূমে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে মরিয়া হয়ে ওঠে ৷ আর সেই কাজ ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে রাজ্য বিজেপি ৷ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার একের পর এক সভা করছেন বীরভূমে ৷ এ দিনও বীরভূম থেকে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন শুভেন্দু ৷ সরাসরি চোরের দল বলে নিশানা করেছেন তিনি ৷ গরুপাচার ও বালি পাচার নিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূলকে তোপ দেগেছেন ৷
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের আগে এপ্রিলে মমতা বীরভূমে, দেউচা-পাচামি নিয়ে বড় বৈঠকের সম্ভাবনা
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির সংগঠনের ঝাঁঝ বাড়াতে আসরে নামছেন খোদ প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি ৷ আগামী 14 এপ্রিল বড় জনসভা করতে বীরভূম সফরে আসছেন অমিত শাহ ৷ ওইদিন দুপুরে চাণক্য সিউড়ির বেণীমাধব উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে সভা করবেন তিনি ৷ ইতিমধ্যে বিজেপির তরফে সম্ভাব্য এই সফরের সূচি প্রকাশ করা হয়েছে ৷ যদিও, জেলা প্রশাসনের কাছে এখনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর আসার কোন খবর নেই বলেই জানালেন বীরভূম জেলাশাসক বিধান রায় ৷
আরও পড়ুন: বৈঠকে বীরভূমের তৃণমূল কোর কমিটি, গদাধর হাজরার মন্তব্যের নিন্দা
প্রসঙ্গত, 21-এর ভোট পরবর্তী হিংসায় একাধিক ঘটনা ঘটেছে বীরভূমে ৷ সরজমিনে তদন্তে এসেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল ৷ যার রিপোর্টের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও চলছে ৷ আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই ৷ ভোট পরবর্তী হিংসায় মনোবল ভেঙে গিয়েছিল বিজেপি কর্মীদের ৷ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ও পরবর্তীতে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বীরভূমের দলীয় কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করতে নতুন করে উদ্যোগী বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ৷