কলকাতা, 13 মে: ডার্বিতে তার দুরন্ত পারফরম্যান্স জন্ম দিয়েছিল নতুন আশার । বাঙালি গোলরক্ষকদের যোগ্য উত্তরাধিকার মিলেছে বলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলেন প্রাক্তনরা । লাস্ট লাইন অব ডিফেন্সের নবতম সংজ্ঞা হয়েও উজ্জ্বল তারকা হয়ে ওঠার বদলে ধুমকেতুতে পরিণত হয়েছেন দেবজিৎ মজুমদার । সমর্থকদের দেওয়া "সেভজিৎ" তকমাও এখন প্রশ্নের মুখে । হারিয়ে ফেলতে বসা সেই মুকুট উদ্ধারে নতুনভাবে তৈরি হচ্ছেন দেবজিৎ । লকডাউনে ঘরবন্দী থাকলেও নতুন মরশুমে নিজের মতো করে তৈরি করছেন প্রস্তুতির রূপরেখা ।
মোহনবাগান থেকে ATK হয়ে ফের সবুজ মেরুনে প্রত্যাবর্তন । সেখানেও সময়টা ভালো যায়নি বাঙালি গোলরক্ষকের । নিজের পারফরমেন্সের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইটা শুরু করতে চাইছেন দেবজিৎ । মাঠে নামতে না পারার আক্ষেপ রয়েছে । কারণ বল নিয়ে অনুশীলনের আলাদা প্রভাব রয়েছে । লকডাউনে প্রতিটি খেলোয়াড়ই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন । তবে দোষারোপ না করে এই কোরোনা পরিস্থিতিতে নিয়ম মেনে চলার পক্ষে দেবজিৎ । তাঁর কথায়, "এমন একটা ভাইরাস যার গতিপ্রকৃতি সম্বন্ধে জানা নেই । সোশাল ডিসট্যান্সিং একমাত্র উপায় । সবার আগে জীবন । জীবন বাঁচলে তারপর সবকিছু । তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে ।" ঘরবন্দী অবস্থায় ফিটনেস বজায় রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ । তবে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে ফিটনেস ধরে রাখাটা প্রয়োজন । "এখন তো ঘরের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই । তাই ঘরে থেকে ফিটনেস ট্রেনিং করছি । একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে নিজের ফিটনেস রক্ষার তাগিদটা নিজেরই । তাই শিডিউলটা নিজেই নিজের মত করে তৈরি করেছি," বলছিলেন দেবজিৎ মজুমদার ।
কোরোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লিগ চালু করার চেষ্টা চলছে । তা নিয়ে নানামুনির নানামত । কীভাবে ফুটবলারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকবে তা নিয়ে কার্যত গবেষণা চলছে । আইলিগ জয়ী দলের গোলরক্ষক মনে করেন, এই ভাবনা চিন্তার পিছনে নিশ্চয়ই একটা পরিকল্পনা রয়েছে । সঠিকভাবে সেই পরিকল্পনার প্রয়োগ হলে সমস্যা হয়তো হবে না । তবে এক্ষেত্রেও তিনি ফুটবলের নিয়ামক সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী চলতে চান । মাঠে খেলা চলাকালীন থুতু ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে । এই নিয়ম সত্যিই চালু হয়েছে কি না তা জানার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন দেবজিৎ । কারণ থুতু ফেলা, জল খাওয়া এবং তা মুখ থেকে ফেলা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি । তবে তড়িঘড়ি এই বিষয়ে মত প্রকাশ করতে চান না তিনি ।
একইরকমভাবে কর্নারের সময় পেনাল্টি বক্সে দু’দলের ফুটবলারদের জমায়েতে কীভাবে ডিসট্যান্সিং মানা হবে তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে বাঙালি গোলকরক্ষকের । অস্থির সময়ের জটিলতা সরিয়ে নতুন আশার আলোর অপেক্ষায় দেবজিৎ মজুমদার । কারণ হারানো সিংহাসন উদ্ধারের তাগিদ রয়েছে তাঁর মধ্যে । ইতিমধ্যে নিজের মতো করে ফিটনেস ট্রেনিং করছেন । নতুন মরশুমে ATK-র হাত ধরে মোহনবাগান এবার ISL-এ । আইলিগ জয়ী দল থেকে হাবাসের সংসারে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম দেবজিতের । তবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি প্রস্তাব এসেছে দেবজিতের কাছে । কিন্তু লকডাউন চলায় এই ব্যাপারে তিনি "স্পিকটি নট" । "সেভজিৎ" তকমা উদ্ধারে নতুনভাবে ঝাঁপাতে চাইছেন দেবজিৎ মজুমদার ।