ETV Bharat / state

বায়ু দূষণে দিল্লির পরিণতি ঠেকাতে কলকাতা ও হাওড়ায় একাধিক পদক্ষেপ

কলকাতা ও হাওড়ার দূষণ ঠেকাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ কলকাতা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কর্পোরেশনের ৷

KMC
বায়ু দূষণ ঠেকাতে বৈঠক (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 2 hours ago

কলকাতা, 2 ডিসেম্বর: বায়ু দূষণে রাজধানীর অবস্থা দেখে শিউরে উঠছে দেশ ৷ আতঙ্কিত পরিবেশ সচেতন মানুষ থেকে প্রশাসন। গঙ্গার দুই পাড়ের শহর কলকাতা ও হাওড়ার দূষণ বিপদ চোখ রাঙাচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে দিল্লির পরিণতি যাতে না হয়, তাই নিয়ে তৎপর রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

সোমবার কলকাতা পুরসভায় পরিবহণ দফতর, হাওড়া ও কলকাতা কর্পোরেশনের আধিকারিক, দুই শহরের পুলিশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন ফিরহাদ। ছিলেন বোস ইন্সিটিউটের বিজ্ঞানীরাও। বাতাসের দূষণ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কি করণীয় ? এ ব্যাপারে পরামর্শ নেওয়া হয় বোস ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের। পাশাপশি একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দূষণ বৃদ্ধিতে লাগাম পড়ানো সম্ভব হবে বলেই আশা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

বৈঠক শেষে কলকাতার মেয়র বলেন, "শহরের বিভিন্ন জায়গায় দোকানে উনুন জ্বলে কাঠ কয়লার। তার পরিবর্তে আমরা 1600 দোকানদারকে ইলেক্ট্রিক কুকার দিচ্ছি ৷ আজ 16 জনকে দেওয়া হয়েছে ৷ সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক ঠেকাতে দূষণ পর্ষদ কে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছি। পুলিশকে বলা হয়েছে যথেচ্ছ কাটকয়লা জ্বালালে যাতে তাদের ধরে । লাগাতার স্প্রিংকলার ও মিস্ট ক্যানন ব্যবহার করে বাতাসের দূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারা গিয়েছে ৷ তবে আরও বেশ কিছু পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল, যেগুলি আজ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল ৷ এবার সেইগুলি বাস্তবায়ন করা হলে, আশা করা যাচ্ছে কলকাতা ও হাওড়ার বাতাসের গুণমান সন্তোষজনক হবে।"

দিল্লির দূষণের জেরে রীতিমত স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে 'জরুরি অবস্থা' পরিণত হওয়ার সমান। দিন ভোর ধোঁয়াশার চাদরে মুড়ে থাকছে রাজধানী শহর। দূষণের জেরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে দিল্লিবাসীকে। এমনকি অফিস থেকে স্কুল ছুটির সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সরকারকে। দেশের রাজধানী শহর বায়ু দূষণের নিরিখে দেশের শীর্ষস্থানে দাঁড়িয়ে ৷ এই ভয়াবহ পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে মহানগর কলকাতা বা ওপারের হাওড়ায় না-ঘটে সেই নিয়েই চিন্তা প্রশাসনের কর্তাদের ৷ ফলে এদিন আলোচনা থেকে একাধিক বিষয় উঠে এসেছে যেগুলো দুই শহরে দূষণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। ফলে বেশ কিছু পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা এই বিষয়গুলো তড়িঘড়ি ঠেকাতে পারে।

শীত এলেই শহরের বিভিন্ন পথঘাট কাঠ, পাতা জ্বালিয়ে আগুন পোয়াতে দেখা যায়। আর সেই থেকে তৈরি ধোঁয়া হুহু করে বাতাসে দূষণ বৃদ্ধি করে ৷ এদিকে নির্মাণ ক্ষেত্রে এখনও অনেক জায়গায় নির্মীয়মান ভবন না-ঢেকে খোলা অবস্থায় নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে ৷ পাশাপশি নির্মাণ বর্জ্য যথেচ্ছ খোলা অবস্থায় গাড়িতে নিয়ে যাওয়া শহরের বিভিন্ন অংশে ও সেগুলো জলজমি ভরাট করার ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে ৷ দুই শহরের রাস্তায় একাধিক গাড়ি যা বহু বছর পুরোনো যা থেকে কালো ধোঁয়া নির্গত হয়, সেটাও ভয়ঙ্কর পরিমাণ কার্বন কণা বাতাসে বৃদ্ধি করে।

দূষণ ঠেকাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুই শহরে যথেচ্ছ কাঠ ও বাঁশ পুড়িয়ে শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য গরম তাপ নেওয়া বন্ধ করা হবে। এই বিষয় পুলিশকে সক্রিয় হতে আবেদন করা হয়েছে। যাতে এমন দেখলেই ধরপাকড় করা হয়। নির্মাণ ক্ষেত্রে যেসমস্ত স্থান খোলা, সেগুলো ডাকার জন্য বিল্ডিং বিভাগ নজরদারি করবে। ভ্যানো জাতীয় গাড়ি ও বহু পুরোনো কালো ধোঁয়া নির্গত হয় এমন যানবাহন দেখলে বাজেয়াপ্ত করার পথে যাবে পুলিশ ও পরিবহণ দফতর। জলা ভরাট হবে না। কোথাও কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে বা কাঠ জ্বালাচ্ছে এমন দেখলে সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশ প্রশাসনকে জানাতে পারে সেই জন্য 100 ডায়ালের মত বিশেষ নম্বর চালু হবে ৷ যাতে ছবি তুলে পাঠাতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হবে ৷ যার মাধ্যমে দূষণ পর্ষদ কর্পোরেশন ও পুলিশ মুহূর্তে জানতে পারবে ৷ সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার ঠেকাতে প্রচার নয়, কঠোর হতে চলেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।

কলকাতা, 2 ডিসেম্বর: বায়ু দূষণে রাজধানীর অবস্থা দেখে শিউরে উঠছে দেশ ৷ আতঙ্কিত পরিবেশ সচেতন মানুষ থেকে প্রশাসন। গঙ্গার দুই পাড়ের শহর কলকাতা ও হাওড়ার দূষণ বিপদ চোখ রাঙাচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে দিল্লির পরিণতি যাতে না হয়, তাই নিয়ে তৎপর রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

সোমবার কলকাতা পুরসভায় পরিবহণ দফতর, হাওড়া ও কলকাতা কর্পোরেশনের আধিকারিক, দুই শহরের পুলিশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন ফিরহাদ। ছিলেন বোস ইন্সিটিউটের বিজ্ঞানীরাও। বাতাসের দূষণ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কি করণীয় ? এ ব্যাপারে পরামর্শ নেওয়া হয় বোস ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের। পাশাপশি একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দূষণ বৃদ্ধিতে লাগাম পড়ানো সম্ভব হবে বলেই আশা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

বৈঠক শেষে কলকাতার মেয়র বলেন, "শহরের বিভিন্ন জায়গায় দোকানে উনুন জ্বলে কাঠ কয়লার। তার পরিবর্তে আমরা 1600 দোকানদারকে ইলেক্ট্রিক কুকার দিচ্ছি ৷ আজ 16 জনকে দেওয়া হয়েছে ৷ সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক ঠেকাতে দূষণ পর্ষদ কে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছি। পুলিশকে বলা হয়েছে যথেচ্ছ কাটকয়লা জ্বালালে যাতে তাদের ধরে । লাগাতার স্প্রিংকলার ও মিস্ট ক্যানন ব্যবহার করে বাতাসের দূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারা গিয়েছে ৷ তবে আরও বেশ কিছু পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল, যেগুলি আজ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল ৷ এবার সেইগুলি বাস্তবায়ন করা হলে, আশা করা যাচ্ছে কলকাতা ও হাওড়ার বাতাসের গুণমান সন্তোষজনক হবে।"

দিল্লির দূষণের জেরে রীতিমত স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে 'জরুরি অবস্থা' পরিণত হওয়ার সমান। দিন ভোর ধোঁয়াশার চাদরে মুড়ে থাকছে রাজধানী শহর। দূষণের জেরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে দিল্লিবাসীকে। এমনকি অফিস থেকে স্কুল ছুটির সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সরকারকে। দেশের রাজধানী শহর বায়ু দূষণের নিরিখে দেশের শীর্ষস্থানে দাঁড়িয়ে ৷ এই ভয়াবহ পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে মহানগর কলকাতা বা ওপারের হাওড়ায় না-ঘটে সেই নিয়েই চিন্তা প্রশাসনের কর্তাদের ৷ ফলে এদিন আলোচনা থেকে একাধিক বিষয় উঠে এসেছে যেগুলো দুই শহরে দূষণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। ফলে বেশ কিছু পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা এই বিষয়গুলো তড়িঘড়ি ঠেকাতে পারে।

শীত এলেই শহরের বিভিন্ন পথঘাট কাঠ, পাতা জ্বালিয়ে আগুন পোয়াতে দেখা যায়। আর সেই থেকে তৈরি ধোঁয়া হুহু করে বাতাসে দূষণ বৃদ্ধি করে ৷ এদিকে নির্মাণ ক্ষেত্রে এখনও অনেক জায়গায় নির্মীয়মান ভবন না-ঢেকে খোলা অবস্থায় নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে ৷ পাশাপশি নির্মাণ বর্জ্য যথেচ্ছ খোলা অবস্থায় গাড়িতে নিয়ে যাওয়া শহরের বিভিন্ন অংশে ও সেগুলো জলজমি ভরাট করার ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে ৷ দুই শহরের রাস্তায় একাধিক গাড়ি যা বহু বছর পুরোনো যা থেকে কালো ধোঁয়া নির্গত হয়, সেটাও ভয়ঙ্কর পরিমাণ কার্বন কণা বাতাসে বৃদ্ধি করে।

দূষণ ঠেকাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুই শহরে যথেচ্ছ কাঠ ও বাঁশ পুড়িয়ে শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য গরম তাপ নেওয়া বন্ধ করা হবে। এই বিষয় পুলিশকে সক্রিয় হতে আবেদন করা হয়েছে। যাতে এমন দেখলেই ধরপাকড় করা হয়। নির্মাণ ক্ষেত্রে যেসমস্ত স্থান খোলা, সেগুলো ডাকার জন্য বিল্ডিং বিভাগ নজরদারি করবে। ভ্যানো জাতীয় গাড়ি ও বহু পুরোনো কালো ধোঁয়া নির্গত হয় এমন যানবাহন দেখলে বাজেয়াপ্ত করার পথে যাবে পুলিশ ও পরিবহণ দফতর। জলা ভরাট হবে না। কোথাও কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে বা কাঠ জ্বালাচ্ছে এমন দেখলে সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশ প্রশাসনকে জানাতে পারে সেই জন্য 100 ডায়ালের মত বিশেষ নম্বর চালু হবে ৷ যাতে ছবি তুলে পাঠাতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হবে ৷ যার মাধ্যমে দূষণ পর্ষদ কর্পোরেশন ও পুলিশ মুহূর্তে জানতে পারবে ৷ সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার ঠেকাতে প্রচার নয়, কঠোর হতে চলেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.