কলকাতা : দর্শককে 'গুমনামী' ছবিটি বয়কট করার আবেদন জানিয়েছে সর্বভারতীয় ফরওয়ার্ড ব্লক । পুজোর পরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা । তাঁদের অভিযোগ, 'গুমনামী' ছবিটি নেতাজিকে অপমান করেছে । ইতিহাসকে বিকৃত ও মিথ্যাচার করেছে ছবিটি ।
'গুমনামী' ছবি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক চলছিল । প্রতিবাদ এসেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। কেউ পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন । কেউ দূরে সরে গেছে । তবে আজ ছবি নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তর কথা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সেক্রেটারি জি দেবরাজন ।
তাঁদের বক্তব্য, "সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'গুমনামী' ছবিতে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে । এছাড়া নেতাজি সুভাষচন্দ্রকে পরদার অন্তরালে গুমনামী বাবা নামধারী সাধু বা ভগবানজি বলে প্রমাণ করার অপচেষ্টা হয়েছে । ফরওয়ার্ড ব্লক তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি ।"
তাঁরা আরও বলেন, "পরিচালকের তরফে বলা হয়েছিল ছবিটি মুখার্জি কমিশনের শুনানির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে । আসলে এই ছবি মুখার্জি কমিশনের রায়কে ভিত্তি করে আদৌ তৈরি হয়নি । বরং কমিশনের শুনানির উপরই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে । ফলে বহু মনগড়া কাহিনিকে টেনে আনা হয়েছে । দিল্লিভিত্তিক কিছু তথাকথিত গবেষকের নেতাজিকে 'গুমনামী বাবা' হিসেবে প্রমাণিত করার দুরভিসন্ধিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ।" এর জন্য দর্শককে ছবিটি বয়কট করার আরজি জানিয়েছেন তাঁরা । ছবিতে ফরওয়ার্ড ব্লকের সহায়তার জন্য যে স্বীকৃতির কথা জানানো হয়েছে, তাও সত্য নয় বলে জানিয়েছেন তাঁরা । আর এর জন্য তাঁরা সৃজিত মুখার্জিকে চিঠিও পাঠাবেন ।
জি দেবরাজন বলেন, "পরিচালক যথেষ্ট পড়াশোনা করে ছবিটি তৈরি করেননি । বরং ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন । ছবির লেখক এবং পরিচালক অনেক জায়গায় প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন ফাইজাবাদের গুমনামী বাবাই আসলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস । আমরা এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ করছি । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস ফরওয়ার্ড ব্লক তৈরি করেছেন । ছবি বানানোর সময় আমাদের সঙ্গে একবারও আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করেনি সৃজিত মুখার্জি । তবে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন, যা আমরা অস্বীকার করেছি । ছবির প্রিমিয়ারে গিয়েছিলাম আমরা ১৫ জন । ছবিতে দেখানো অসঙ্গতি এবং বিকৃত ইতিহাসকে প্রতিবাদও করি প্রেক্ষাগৃহে । সৃজিত আমাদের সঙ্গে কথা বলে । বিষয়টি প্রেক্ষাগৃহেই থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে । আমাদের অফিসে এসে ট্রেলার দেখিয়ে যায় পরিচালক । তখন আমরা বলেছিলাম ছবি না দেখে কোনও মন্তব্য করব না । এরপর আমরা ছবিটি দেখি । আমাদের সন্দেহ এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে । সৃজিতবাবুকে কেউ-না-কেউ পরিচালনা করেছেন । আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব । ছবি জুড়ে শুধু মিথ্যাচার দেখানো হয়েছে । এখন পুজোর সময় । মামলা হবে পুজোর পর । ছবিতে সাংবাদিকের পরিবারের কিছু অশালীন দৃশ্যও রাখা হয়েছে । যা আমাদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয় ।"