স্বাধীনতা দিবসের মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই জন্ম রাখি গুলজ়ারের । তখন অবশ্য তিনি রাখি মজুমদার । স্বাধীনতা ঘোষিত হওয়ার পর যখন পুরো দেশ সেই আনন্দেই মাতোয়ারা, তখন মজুমদার বাড়িতে দ্বিগুণ খুশির আবহ । কারণ মজুমদার দম্পতির কোল আলো করে তখন এক ফুটফুটে কন্যাসন্তানের কলকলানি । বাংলাদেশের বিখ্যাত জুতো ব্যবসায়ী ছিলেন রাখীর বাবা । দেশভাগের পর নদীয়ার রানাঘাটে বসবাস শুরু করে তাঁর পরিবার ।
মাত্র 16 বছর বয়সে সাত পাকে বাঁধা পড়েন রাখী, অজয় বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হয় । তবে সেই বিয়ে টেকেনি বেশিদিন । 1965-তেই বিচ্ছেদ হয় তাঁদের । এরপর 1967 সালে নতুন জীবনে পা রাখেন মজুমদার কন্যা । ফিল্মি ক্যারিয়ারের শুরু করেন বাংলা ছবি 'বধূবরণ' দিয়ে । 1970 সালে ধর্মেন্দ্রর বিপরীতে 'জীবন মৃত্যু' ছবিতে ডাক । সেখান থেকেই শুরু তাঁর স্বপ্নের উড়ান ।
1973 সালে রাখির জীবনে আরও এক টার্নিং পয়েন্ট আসে । কথার জাদুকর গুলজ়ারের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর । সেই সময়ে গুলজ়ার আর রাখি শহরের অন্যতম হাই-প্রোফাইল দম্পতি হিসেবে পরিচিত ছিলেন । তবে এই সম্পর্কও বেশিদিন টেকেনি । অফিশিয়ালি ডিভোর্স না হলেও 1974 সাল থেকেই তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন । তবে এখনও রাখির হাতে রাঁধা মাছ খেলে, গুলজ়ার একটা শাড়ি উপহার দেন তাঁকে । এক ছাদের তলায় না থাকলেও, বন্ধুত্বে না নেই রাখি আর গুলজ়ারের ।
শুধুমাত্র সৌন্দর্য দিয়েই দর্শকের মন জয় করেননি রাখি । তাঁর অভিনয় দক্ষতা ফিল্মফেয়ারে তাঁকে 16 বার নমিনেশন দিয়েছে। আর 2003 সালে 'শুভ মহরৎ' ছবিতে তাঁর রাঙাপিসি চরিত্রটি তো অমর হয়ে থেকে যাবে সিনেমাপ্রেমীদের কাছে । এই চরিত্র তাঁকে জাতীয় পুরস্কারও এনে দেয় ।
বড় পরদা থেকে বেশ কয়েক বছর দূরে রয়েছেন রাখি । উজ্জ্বল চোখের সেই পরীর মতো মুখটাকে দর্শক মিস করে আজও । তবে যেভাবেই থাকুন, সুস্থ থাকুন রাখি গুলজ়ার । জন্মদিনে ETV ভারত সিতারার এইটুকুই কামনা ।