ETV Bharat / state

সরকারি রাস্তা দখল করা ক্লাবের গেট গুঁড়িয়ে দিল জেসিবি - GOVERNMENT ROAD ENCROACHMENT

ইটিভি ভারতের খবরের জের ! রাস্তা দখল করে থাকা ক্লাবের কংক্রিট গেট প্রশাসনের নির্দেশে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ৷

Barasat GOVERNMENT ROAD ENCROACHMENT
ক্লাবের কংক্রিট গেট ভেঙে ফেলার মুহূর্ত (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 1, 2024, 10:39 PM IST

বারাসত, 1 ডিসেম্বর: দীর্ঘ চারমাস ধরে টালবাহানা চলার পর অবশেষে সরকারি রাস্তা দখলমুক্ত করল প্রশাসন। রবিবার বিকেলে কড়া নিরাপত্তায় জেসিবি এনে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল রাস্তার উপর ক্লাবের দখল করে থাকা কংক্রিটের গেট । ঘটনাটি উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসত কলোনি মোড় সংলগ্ন এলাকায় । প্রায় 16 ফুটের সরকারি রাস্তা শেষ পর্যন্ত দখলমুক্ত হওয়ায় খুশি এলাকার লোকজন। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁরা ।

প্রশাসন সূত্রে খবর, সরকারি এই রাস্তা দীর্ঘ বছর ধরে দখল করে রেখেছিলেন বারাসতের সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাব কর্তৃপক্ষ । অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও সেই রাস্তা ছেড়ে দেয়নি তাঁরা । উল্টে, কীভাবে সেই রাস্তা নিজেদের দখলে রাখা যায় সেই চেষ্টাই চালিয়ে গিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ । শেষমেশ মহকুমা শাসকের নির্দেশ অমান্য করায় জেসিবি দিয়ে সেই রাস্তা দখলমুক্ত করল প্রশাসন ।

রাস্তা দখল করা ক্লাবের গেট গুঁড়িয়ে দিল জেসিবি (ইটিভি ভারত)

খাতায় কলমে সরকারি রাস্তা ! বারাসত পুরসভার ম‍্যাপেও তা উল্লেখ রয়েছে । অথচ, সেই সরকারি রাস্তা ক্লাব কর্তৃপক্ষ গায়ের জোরে দখল করে রেখেছে । স্থানীয় বাসিন্দারা তা ব্যবহার করতে পারছেন না । গত 28 জুলাই সরকারি রাস্তা দখল করে রাখার সেই খবর তুলে ধরা হয়েছিল ইটিভি ভারতে । রাস্তার উপরেই কংক্রিটের কাঠামো এবং বিশ্রাম নেওয়ার টেন্টও সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তৈরি করার খবরও সেই প্রতিবেদনে তুলে ধরেছিল ইটিভি ভারত । তারপর থেকেই রাস্তা দখলমুক্ত করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ।

কিন্তু প্রতিবারই বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁদের । শেষমেশ সমস্যার সমাধানে সব পক্ষকে নিয়ে ত্রি-পাক্ষিক বৈঠক করেন বারাসতের মহকুমাশাসক সোমা দাস । আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাব কর্তৃপক্ষকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার সাতদিনের সময়সীমা বেঁধে দেন ।কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাতেও কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ ।

বারাসতের কলোনি মোড় সংলগ্ন 12 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সুভাষ ময়দান । সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাব ওই মাঠের দায়িত্বে রয়েছে । আগে মাঠটি খোলামেলা থাকলেও বর্তমানে ক্লাব কর্তৃপক্ষ মাঠের চারপাশ লোহার কাঠামো দিয়ে ঘিরে দিয়েছে । সেই সঙ্গে ওই মাঠের পাশ দিয়ে সাধারণ মানুষের ব্যবহার করার জন্য যে রাস্তা ছিল সেটাও ঘিরে দেওয়া হয়েছে । সেখানে কংক্রিটের দেওয়াল তুলে ঘর তৈরি করা হয়েছে । মাঠের পাশের ওই রাস্তা দিয়েই স্থানীয় বাসিন্দারা যাতায়াত করতেন । সহজেই তাঁরা 12 নম্বর জাতীয় সড়ক বা নবপল্লী এলাকায় পৌঁছে যেতে পারতেন । মাঠ ঘিরে দেওয়ার পরে সেই রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে । ফলে কলোনি মোড় বা 12 নম্বর জাতীয় সড়কের পৌঁছতে বাসিন্দাদের ঘুর পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে ।

স্থানীয় বাসিন্দারা সরকারি ওই রাস্তা জবরদখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন । পুরসভার পক্ষ থেকে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে বার কয়েক নোটিশও দেওয়া হয়েছে । কিন্তু তাঁরা কোনও গুরুত্ব দেয়নি । অবশেষে বারাসতের মহকুমাশাসক সোমা দাস গত সপ্তাহে ওই রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত নির্দেশ দেন । তিনি সাতদিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন । ইতিমধ্যে সেই সময়সীমাও শেষ হয়েছে । ক্লাব কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল না দেখে শেষ পর্যন্ত প্রশাসন এবং পৌরসভা । নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে কংক্রিটের কাঠামো ভেঙে দিয়ে রাস্তা জবরদখল মুক্ত করল রবিবার ।

তবে, এদিন দুপুর থেকেই রাস্তা জবরদখল ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে । বাসিন্দারা শাবল, হাতুড়ি নিয়ে রাস্তার উপরে নির্মাণ কাজ আংশিক ভেঙে দেন । রাস্তার পাশে ঘিরে দেওয়া লোহার ব্যারিকেডও এদিন ভাঙার চেষ্টা করেন উত্তেজিত বাসিন্দারা । সেই আঁচ পেয়েই পুরসভার পক্ষ থেকে জেসিবি পাঠানো হয় । ক্লাবের জবরদখল করা রাস্তার উপরে গড়ে তোলা কংক্রিটের দেওয়াল ভেঙে দেওয়া হয়েছে ।

এই বিষয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,"বৈঠকে বারবার সম্মতি জানানোর পরেও পরে ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষ বেঁকে বসেন । সরকারি রাস্তা ছাড়তে টালবাহানা শুরু করে তাঁরা । মহকুমাশাসকের নির্দেশও ক্লাব কর্তৃপক্ষ অমান্য করেছেন ৷ ফলে, আর কোনও উপায় ছিল না । তবে, সুষ্ঠুভাবে রাস্তা দখলমুক্ত হলে ভালো হত ।"

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাবের সম্পাদক রবীন শূর বলেন,"আমরাই যে দখল করে রেখেছি সেটা আগে তো দেখাতে হবে । মাপজোক করে সঠিক পদ্ধতিতে রাস্তা বের করা হোক । আমাদের তাতে কোনও আপত্তি নেই ।"

বারাসত, 1 ডিসেম্বর: দীর্ঘ চারমাস ধরে টালবাহানা চলার পর অবশেষে সরকারি রাস্তা দখলমুক্ত করল প্রশাসন। রবিবার বিকেলে কড়া নিরাপত্তায় জেসিবি এনে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল রাস্তার উপর ক্লাবের দখল করে থাকা কংক্রিটের গেট । ঘটনাটি উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসত কলোনি মোড় সংলগ্ন এলাকায় । প্রায় 16 ফুটের সরকারি রাস্তা শেষ পর্যন্ত দখলমুক্ত হওয়ায় খুশি এলাকার লোকজন। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁরা ।

প্রশাসন সূত্রে খবর, সরকারি এই রাস্তা দীর্ঘ বছর ধরে দখল করে রেখেছিলেন বারাসতের সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাব কর্তৃপক্ষ । অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও সেই রাস্তা ছেড়ে দেয়নি তাঁরা । উল্টে, কীভাবে সেই রাস্তা নিজেদের দখলে রাখা যায় সেই চেষ্টাই চালিয়ে গিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ । শেষমেশ মহকুমা শাসকের নির্দেশ অমান্য করায় জেসিবি দিয়ে সেই রাস্তা দখলমুক্ত করল প্রশাসন ।

রাস্তা দখল করা ক্লাবের গেট গুঁড়িয়ে দিল জেসিবি (ইটিভি ভারত)

খাতায় কলমে সরকারি রাস্তা ! বারাসত পুরসভার ম‍্যাপেও তা উল্লেখ রয়েছে । অথচ, সেই সরকারি রাস্তা ক্লাব কর্তৃপক্ষ গায়ের জোরে দখল করে রেখেছে । স্থানীয় বাসিন্দারা তা ব্যবহার করতে পারছেন না । গত 28 জুলাই সরকারি রাস্তা দখল করে রাখার সেই খবর তুলে ধরা হয়েছিল ইটিভি ভারতে । রাস্তার উপরেই কংক্রিটের কাঠামো এবং বিশ্রাম নেওয়ার টেন্টও সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তৈরি করার খবরও সেই প্রতিবেদনে তুলে ধরেছিল ইটিভি ভারত । তারপর থেকেই রাস্তা দখলমুক্ত করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ।

কিন্তু প্রতিবারই বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁদের । শেষমেশ সমস্যার সমাধানে সব পক্ষকে নিয়ে ত্রি-পাক্ষিক বৈঠক করেন বারাসতের মহকুমাশাসক সোমা দাস । আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাব কর্তৃপক্ষকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার সাতদিনের সময়সীমা বেঁধে দেন ।কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাতেও কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ ।

বারাসতের কলোনি মোড় সংলগ্ন 12 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সুভাষ ময়দান । সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাব ওই মাঠের দায়িত্বে রয়েছে । আগে মাঠটি খোলামেলা থাকলেও বর্তমানে ক্লাব কর্তৃপক্ষ মাঠের চারপাশ লোহার কাঠামো দিয়ে ঘিরে দিয়েছে । সেই সঙ্গে ওই মাঠের পাশ দিয়ে সাধারণ মানুষের ব্যবহার করার জন্য যে রাস্তা ছিল সেটাও ঘিরে দেওয়া হয়েছে । সেখানে কংক্রিটের দেওয়াল তুলে ঘর তৈরি করা হয়েছে । মাঠের পাশের ওই রাস্তা দিয়েই স্থানীয় বাসিন্দারা যাতায়াত করতেন । সহজেই তাঁরা 12 নম্বর জাতীয় সড়ক বা নবপল্লী এলাকায় পৌঁছে যেতে পারতেন । মাঠ ঘিরে দেওয়ার পরে সেই রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে । ফলে কলোনি মোড় বা 12 নম্বর জাতীয় সড়কের পৌঁছতে বাসিন্দাদের ঘুর পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে ।

স্থানীয় বাসিন্দারা সরকারি ওই রাস্তা জবরদখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন । পুরসভার পক্ষ থেকে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে বার কয়েক নোটিশও দেওয়া হয়েছে । কিন্তু তাঁরা কোনও গুরুত্ব দেয়নি । অবশেষে বারাসতের মহকুমাশাসক সোমা দাস গত সপ্তাহে ওই রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত নির্দেশ দেন । তিনি সাতদিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন । ইতিমধ্যে সেই সময়সীমাও শেষ হয়েছে । ক্লাব কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল না দেখে শেষ পর্যন্ত প্রশাসন এবং পৌরসভা । নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে কংক্রিটের কাঠামো ভেঙে দিয়ে রাস্তা জবরদখল মুক্ত করল রবিবার ।

তবে, এদিন দুপুর থেকেই রাস্তা জবরদখল ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে । বাসিন্দারা শাবল, হাতুড়ি নিয়ে রাস্তার উপরে নির্মাণ কাজ আংশিক ভেঙে দেন । রাস্তার পাশে ঘিরে দেওয়া লোহার ব্যারিকেডও এদিন ভাঙার চেষ্টা করেন উত্তেজিত বাসিন্দারা । সেই আঁচ পেয়েই পুরসভার পক্ষ থেকে জেসিবি পাঠানো হয় । ক্লাবের জবরদখল করা রাস্তার উপরে গড়ে তোলা কংক্রিটের দেওয়াল ভেঙে দেওয়া হয়েছে ।

এই বিষয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,"বৈঠকে বারবার সম্মতি জানানোর পরেও পরে ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষ বেঁকে বসেন । সরকারি রাস্তা ছাড়তে টালবাহানা শুরু করে তাঁরা । মহকুমাশাসকের নির্দেশও ক্লাব কর্তৃপক্ষ অমান্য করেছেন ৷ ফলে, আর কোনও উপায় ছিল না । তবে, সুষ্ঠুভাবে রাস্তা দখলমুক্ত হলে ভালো হত ।"

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে সুভাষ ইনস্টিটিউট ক্লাবের সম্পাদক রবীন শূর বলেন,"আমরাই যে দখল করে রেখেছি সেটা আগে তো দেখাতে হবে । মাপজোক করে সঠিক পদ্ধতিতে রাস্তা বের করা হোক । আমাদের তাতে কোনও আপত্তি নেই ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.