ওয়াশিংটন, 8 মে : মার্চে কোরোনাকে প্যানডেমিক ঘোষণা করে WHO (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) । এরপর থেকে 9 মাস অর্থাৎ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে প্রায় 2 কোটি শিশু জন্মাতে পারে বলে জানাল UNICEF । যা বিশ্বে সর্বোচ্চ ।
কোরোনার দাপট শুরু হয়েছে গত বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকে । তখন শুধুমাত্র চিনেই এর প্রভাব ছিল । পরে ধীরে ধীরে ছড়াতে থাকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে । এরপরই মার্চের 11 তারিখ একে প্যানডেমিক ঘোষণা করে WHO । তারপর থেকে চলতি বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বে 11 কোটি 60 লাখ শিশুর জন্ম হতে পারে জানাল UNICEF । যাতে ভারত সবচেয়ে এগিয়ে । তারা মনে করছে, এত শিশুর জন্ম হলে এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়তে পারেন মা ও শিশু উভয়ই । কারণ কোরোনার জেরে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থায় সমস্যা হতে পারে । এর পাশাপাশি সংক্রমণের ভয় ও সুষ্ঠু পরিষেবা প্রদানেও বাধা রয়েছে বিশ্বের সর্বত্র ।
শিশু জন্মানোর হারে বিশ্বে সবচেয়ে প্রথমে রয়েছে ভারত । সেখানে 9 মাসে 2 কোটি শিশুর জন্ম হতে পারে বলে জানিয়েছে UNICEF । পরেই রয়েছে চিন, যেখানে এক কোটি 35 লাখ শিশুর জন্ম হতে পারে । তারপর নাইজেরিয়া, 64 লাখ, পাকিস্তান, 50 লাখ ও ইন্দোনেশিয়ায় 40 লাখ শিশু জন্মাতে পারে । তবে, সংস্থাটি জানিয়েছে, "এই দেশগুলির মধ্যে বেশিরভাগেই শিশু জন্মানোর হার বেশি । প্যানডেমিক কোরোনা থাবা বসানোর আগেও এখানে শিশু জন্মের পরিসংখ্যান বেশিই ছিল ।" দেখলে বোঝা যাবে, এর মধ্যে শুধু ভারতেই জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে জন্ম নিতে পারে দু'কোটি 41 লাখ শিশু ।
এবিষয়ে UNICEF-এর সতর্কতা, সংক্রমণ রুখতে যে ধরণের পদক্ষেপ করা হয়েছে তা এমনিতেই কোরোনা বাদ দিয়ে বাকি বিভিন্ন চিকিৎসার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করেছে । এক্ষেত্রে শিশু জন্মানোর ব্যাপারটিও বাদ যাচ্ছে না । তাই এই প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে শিশু জন্ম দেওয়া অনেকটা ঝুঁকির । এতে মায়েরা তাঁদের সন্তানদের কিছুটা হলেও বিপদের মুখে ফেলছেন । শুধুমাত্র তৃতীয় বিশ্বের দেশ বা উন্নয়নশীল দেশ নয় । এক্ষেত্রে একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্বের ধনী দেশগুলিও । এই পরিস্থিতিতে একদম নতুন একটা পৃথিবীতে সন্তানকে নিয়ে নতুন যাত্রা শুরুর জন্য বাবা-মায়েদের তৈরি থাকতে হবে ।
এবিষয়ে UNICEF-এর এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর হেনরিয়েটা বলেন, "এটা এমন একটা পরিস্থিতি, সেখানে প্রসূতিরা ভয় পাচ্ছেন প্রাথমিক চিকিৎসা করাতে, হাসপাতালে যেতে । প্রত্যেকের মধ্যেই সংক্রমণের ভয় রয়েছে । আর লকডাউনে তাঁদের পরিষেবা পেতেও খানিকটা সমস্যা হচ্ছে । ফলে প্রত্যেককেই তৈরি থাকতে হবে । যদিও এটা বলা মুশকিল কোরোনা মাতৃত্বের ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব ফেলবে ।"
কোথা থেকে এই সমীক্ষা? UNICEF জানিয়েছে, অ্যামেরিকার পুপলেশন ডিভিশনের ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেক্টস 2019 থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই সমীক্ষা । 10 মে মাতৃ দিবস উপলক্ষ্যে এমন তথ্য প্রকাশ । এক্ষেত্রে তারা আরও জানিয়েছে, বিশ্বে প্রতিবছর 2 কোটি 80 লাখ প্রসূতি ও শিশুর মৃত্যু হয় । যার পরিসংখ্যানটি এরকম, 11 সেকেন্ডে একটি শিশুর মৃত্যু । ফলে এমন পরিস্থিতিতে সকল প্রসূতিকে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শও দিয়েছে তারা । পাশাপাশি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের কর্মীদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে তাঁরা এটা নিশ্চিত করতে পারেন যে এই প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে ভুল ওষুধ বা ভুল চিকিৎসার জন্য অন্তত কারও মৃত্যু না হয় ।