কলকাতা, 1 জুন : খাদ্য-শস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ । স্বয়ম্ভর করার জন্য ভালো মানের বীজ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের । সামনে খারিফ মরশুম । খাদ্য-শস্য উৎপাদনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জোগান হল বীজ । উন্নতমানের বীজ উৎপাদন ও ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় । যার কারণে বিভিন্ন সরকারি খামারে নানা ধরনের শস্যের বীজের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এখন রাজ্যে প্রায় 200 টি সরকারি খামার রয়েছে । এর মধ্যে 4টি খামার ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট সিড কর্পোরেশন লিমিটেডকে দেওয়া হয়েছে । এই খামার গুলিতে ধান, গম, ভুট্টা, তৈলবীজ, বাদাম, পাট, ডাল, আলু, এবং আখের উন্নত মানের বীজ উৎপাদন করা হয় । খামারগুলিকে আরও উন্নত করতে প্রায় 10 কোটি টাকার সরঞ্জাম কেনা হয়েছে । সরকারি খামারে ধানের বীজের উৎপাদন বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । এর ফলে সারা রাজ্যে ধান উৎপাদন গুণে-মানে সেরা হবে বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী । 5টি বীজ পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে । টালিগঞ্জ, বর্ধমান, মালদা, বাঁকুড়া ও কৃষ্ণনগরে । এছাড়াও প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে বীজ পরীক্ষাগার খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চলতি বছরে বীজের কোনও ঘাটতি নেই । রেজিস্ট্রার গ্রোয়ার, সিড প্রডিউসিং অর্গানাইজার, এবং সিড কম্পানিগুলি পর্যাপ্ত বীজের সংস্থান করে রেখেছে । নথিভুক্ত বীজ উৎপাদনকারী চাষি রাজ্য বীজ নিগমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন । চাষীদের মাঠ পর্যবেক্ষণের পর বীজের গুনগতমান দেখে সেগুলি দেওয়া হবে । জেলার ল্যাবরেটরিতেও বীজগুলির গুণগত মান নিয়ে যাচাই করা হবে । রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বীজ নিগমের সঙ্গে সহায়তায় চাষিরাও বীজ তৈরি করতে পারছে । সরকার সেই চাষিদের তৈরি করা বীজগুলির গুণগত মান যাচাই করে দেখবে। তারপর বণ্টন করা হবে ।
আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, " সামনে খারিফ মরশুমে ধানের বীজ ব্লক ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের দেওয়া হবে। রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে এবং জেলাওয়ারি হিসেবে বীজ বণ্টন করা হবে । ধানের বীজ দু'ভাগে দেওয়া হবে । দীর্ঘ সময়কালের জন্য় ধান বীজ এবং স্বল্প সময়কালের ধান বীজ । দীর্ঘ সময়কালের ধানবীজ 145 থেকে 150 দিনে পুষ্ট হয় । আর স্বল্প সময় কালের ধান বীজ 105 থেকে 120 দিনে পুষ্ট হয়। আমরা মূলত স্বল্প মেয়াদি সময়কালের ধানবীজ কৃষকদের দেব । সঙ্গে ওষুধ, আগাছানাশক এবং কীটনাশকও দেওয়া হবে। খারিফের সময় মূলত, ধান, ভাদ্রমাসে কলাই এবং মুগ ডাল, পুরুলিয়া চত্বরে বাদাম বীজ পাঠানো হবে। জুন মাসের গোড়াতেই কৃষকদের মধ্যে তা বণ্টন করা হবে।" লাল স্বর্ণ চাল চাষের জন্য রাজ্যের কৃষি দপ্তর থেকে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ বছরই প্রথম সেই চালের বীজ দেওয়া হবে।