ETV Bharat / city

Surjya Kanta Mishra : ‘বিজেমূল’ তত্ত্বে বিমানের উল্টো সুর সূর্যকান্তের গলায় !

‘বিজেমূল’ তত্ত্বে দ্বিধাবিভক্ত সিপিএম তথা বামফ্রন্ট ৷ ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি, ‘বিজেমূল’ তাঁদের দলের বা ফ্রন্টের তৈরি কোনও ব্যাখ্যা নয় ৷ অন্যদিকে, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র মনে করেন, বিজেপি বিরোধিতা করতে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অবস্থান নরম করলে চলবে না ৷

Surjya Kanta Mishra differs with Biman Bose regarding BJP-TMC issue
Surjya Kanta Mishra : ‘বিজেমূল’ তত্ত্বে বিমানের উল্টো সুর সূর্যকান্তের গলায় !
author img

By

Published : Aug 6, 2021, 2:29 PM IST

কলকাতা, 6 অগস্ট : দু’জনেই হেভিওয়েট ৷ একজন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান, আর অন্যজন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ৷ রাজ্য়ে বামেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এই দু’জনের সহাবস্থান একান্ত আবশ্যক বলেই মনে করেন রাজনীতির কারবারিরা ৷ অথচ সেই তাঁরাই বিরোধিতার ইস্যুতে পরস্পরের বিপরীত মেরুতে এসে দাঁড়িয়েছেন ! সংবাদমাধ্যমে তাঁদের মন্তব্য থেকে অন্তত এমনটাই ঠাওর হচ্ছে ৷ ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব নিয়ে একে অন্যের বক্তব্য মানতে নারাজ বিমান বসু (Biman Bose) ও সূর্যকান্ত মিশ্র (Surjya Kanta Mishra) ৷ বিমান মনে করেন, বিজেমূলের ভাবনা উঁচিয়ে একুশের ভোটে লড়া তাঁদের বড় ভুল ছিল ৷ বস্তুত, তাঁর দাবি, দল কখনই এমন কোনও তত্ত্বের আশ্রয় নেয়নি ! অন্যদিকে, সূর্যকান্তের কথা শুনলে মনে হবে, এখনও তৃণমূল আর বিজেপি তাঁর কাছে মুদ্রার এ-পিঠ আর ও-পিঠ ছাড়া আর কিছুই নয় ৷

পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে সিপিএমকে নতুন রূপে আবিষ্কার করেন রাজ্যবাসী ৷ বেশ কিছু ক্ষেত্রে এবার রক্ষণশীলতার বেড়া ভেঙে দিয়েছিলেন বামেরা ৷ আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে ভোটের আগে শেষ লগ্নের প্রচার পর্বে চেনা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল সিপিএম ৷ সোশ্য়াল মিডিয়ায় তাদের প্রচার নজর কেড়েছিল আট থেকে আশির ৷ লোকের মুখে মুখে ফিরছিল ‘বিজেমূল’ প্য়ারোডি ৷ তবে, ‘টুম্পা সোনা’র অনুকরণে সেই গান নিয়ে যতটা উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, ইভিএমে তার কোনও সুফল সিপিএম বা সংযুক্ত মোর্চা পায়নি ৷

আরও পড়ুন : ঐতিহাসিক ভুল আর ভুল স্বীকারই কি এখন সিপিআইএমে নিউ নর্মাল ?

ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছেন, সিপিএম তথা বামেরা যেভাবে তৃণমূল আর বিজেপিকে ‘এক’ করে দেখানোর চেষ্টা করেছিল, তা ভালোভাবে নেয়নি আমজনতা ৷ বরং বামেদের এই তত্ত্ব উল্টে বিজেপি আর তৃণমূলেরই পাল্লা ভারী করেছিল ৷ বামেরা (মূলত সিপিএম) যত দিনে এই সত্যিটা উপলব্ধি করেন, ততদিনে অবশ্য ‘খেলা’ শেষ ৷ আর ঠিক সেই কারণেই ভোটের ফল প্রকাশের কিছু সময় পর থেকেই বিজেমূল তত্ত্ব নিয়ে ঝাঁঝ কমাতে শুরু করে সিপিএম নেতৃত্ব ৷ এমনকী, ভবিষ্যতে জাতীয়স্তরে তৃণমূলকে সমর্থনের একটা আভাসও দিতে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কিছু সূত্র ৷

এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে বিমান বসু জানান, তাঁদের দল বা ফ্রন্ট কখনই ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব খাড়া করেনি ! তাঁরা বিজেপি বা তৃণমূলের রাজনৈতিক রসায়নকে এভাবে ব্যাখ্যা করতে চাননি বলেও দাবি করেছেন প্রবীণ এই রাজনীতিক ৷ প্রশ্ন হল, তাই যদি হবে, তাহলে ‘টুম্পা সোনা’র প্রয়োজন কী ছিল ? সরাসরি এর উত্তর আশা করা বোধ হয় উচিত নয় ৷ তবে ‘বিজেমূল’ নিয়ে বামেদের অন্দরেই যে প্রবল দ্বন্দ্ব রয়েছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট ৷ আগেই এ নিয়ে ‘বড় দাদা’ সিপিএমের সঙ্গে মতান্তর ছিল বাকি বাম শরিকদের ৷ আর এবার সেই মতভেদ ধরা পড়ল সিপিএমের নিজের ঘরেই ৷

বিমান বসু যখন বলছেন, ‘বিজেমূল’ তাঁদের সৃষ্ট তত্ত্ব নয়, ঠিক তখনই সূর্যকান্তের দাবি, একুশের ভোটে সিপিএমের ভরাডুবি হলেও যে তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে লড়াই হয়েছিল, তা ভুল নয় ! তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়তে চান, তাঁদের একজোট হতেই হবে ৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাঁরা নরম মনোভাবের কথা বলছেন, তাঁরা শাসকদলের বিরুদ্ধে থাকা ক্ষোভের উপাদানগুলিকে অস্বীকার করছেন ৷’’ অর্থাৎ বিমান বসুর উল্টো পথে হেঁটে সেই ‘বিজেমূলেই’ সিলমোহর দিচ্ছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ! প্রসঙ্গত, ভোটের আগে সূর্যকান্ত নিজে ‘টুম্পা সোনা’ সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন ৷ যা নিয়ে সেই সময় বিতর্কও কম হয়নি ৷ এমনকী, রক্ষণশীল বামেদের একাংশ তো সিপিএম নেতার রুচিবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছিলেন ৷

বিজেপির পাশাপাশি সূর্যকান্ত যে তৃণমূল কংগ্রেসকেও এখনও তাঁদের চরম শত্রু বলে ধরে রেখেছেন, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট ৷ তিনি বলেন, ‘‘টিকাকরণের (করোনার) বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য দু’মুখো নীতি নিয়ে বসেছিল ৷ সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরই তারা অবস্থান বদল করেছে ৷ এর ফলে যে ছবি সামনে এসেছে, তা সবাই দেখতে পাচ্ছেন ৷ করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ৷ তার জন্য কী কী প্রস্তুতি নিয়েছে দুই সরকার ? তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই ৷ মুখ্যমন্ত্রী শুধু বলছেন, ‘খেলা হবে’ ৷ ক্লাবগুলিকে অর্থ দিচ্ছেন ৷ কিন্তু বন্যা দুর্গতরা একটি ত্রিপল পাবেন কিনা, তার নিশ্চয়তা নেই ৷ কৃষকদের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে কিনা, তার সদুত্তর নেই ৷ স্কুল, কলেজ খুলবে কিনা, বেকাররা চাকরি পাবেন কিনা, সেই সবকিছুও ধোঁয়াশায় ভরা ৷’’

আরও পড়ুন : যাহা বিজেপি তাহাই তৃণমূল, দুইয়ে মিলে বিজেমূল : সেলিম

সূর্যকান্তের মতে, বিজেপি বিরোধিতাকে পোক্ত করতে আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট হতে হবে ঠিকই, কিন্তু তাদের সকলের চরিত্রও যে সমান নয়, সেটাও মনে রাখতে হবে ৷ এই বিষয়ে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন সূর্যকান্ত ৷ অতীতে তৃণমূল নেত্রীর আরএসএস ঘনিষ্ঠতা এবং বন্দনার ছবি মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মনে করেন, বিজেপি বিরোধিতার নামে তৃণমূলের অন্যায় থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকলে বিজেপির ভিতই আরও পোক্ত হবে ৷

কিন্তু সূর্যকান্ত এই কথা বললেও অন্য সুর শোনা যাচ্ছে সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমের গলায় ৷ খানিকটা বিমান বসুর মতোই তাঁরও সাফাই, ‘বিজেমূল’ সিপিএম বা বামেদের সৃষ্ট কোনও তত্ত্ব নয় ৷ বরং তিনি মনে করেন, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমজনতার মধ্যে থেকেই নানা ধরনের রাজনৈতিক ভাবনা উঠে আসে ৷ তৈরি নতুন নতুন শব্দ ৷ ‘বিজেমূল’ও তার ব্যতিক্রম নয় ৷ সেলিমের যুক্তি, একইভাবে সাতের দশকে ‘কংশাল’ শব্দটি শোনা যেত ৷ কিন্তু, তার অর্থ কখনই এটা নয় যে কংগ্রেস আর নকশাল এক ! সবমিলিয়ে বলা যায়, তৃণমূল বিরোধিতায় এখনও এককাট্টা হতে পারেনি একদা বাংলার শাসকশিবির সিপিএম তথা বামফ্রন্ট ৷ এই অবস্থায় আগামী দিনে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি কী হয়, এখন সেটাই দেখার ৷

কলকাতা, 6 অগস্ট : দু’জনেই হেভিওয়েট ৷ একজন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান, আর অন্যজন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ৷ রাজ্য়ে বামেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এই দু’জনের সহাবস্থান একান্ত আবশ্যক বলেই মনে করেন রাজনীতির কারবারিরা ৷ অথচ সেই তাঁরাই বিরোধিতার ইস্যুতে পরস্পরের বিপরীত মেরুতে এসে দাঁড়িয়েছেন ! সংবাদমাধ্যমে তাঁদের মন্তব্য থেকে অন্তত এমনটাই ঠাওর হচ্ছে ৷ ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব নিয়ে একে অন্যের বক্তব্য মানতে নারাজ বিমান বসু (Biman Bose) ও সূর্যকান্ত মিশ্র (Surjya Kanta Mishra) ৷ বিমান মনে করেন, বিজেমূলের ভাবনা উঁচিয়ে একুশের ভোটে লড়া তাঁদের বড় ভুল ছিল ৷ বস্তুত, তাঁর দাবি, দল কখনই এমন কোনও তত্ত্বের আশ্রয় নেয়নি ! অন্যদিকে, সূর্যকান্তের কথা শুনলে মনে হবে, এখনও তৃণমূল আর বিজেপি তাঁর কাছে মুদ্রার এ-পিঠ আর ও-পিঠ ছাড়া আর কিছুই নয় ৷

পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে সিপিএমকে নতুন রূপে আবিষ্কার করেন রাজ্যবাসী ৷ বেশ কিছু ক্ষেত্রে এবার রক্ষণশীলতার বেড়া ভেঙে দিয়েছিলেন বামেরা ৷ আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে ভোটের আগে শেষ লগ্নের প্রচার পর্বে চেনা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল সিপিএম ৷ সোশ্য়াল মিডিয়ায় তাদের প্রচার নজর কেড়েছিল আট থেকে আশির ৷ লোকের মুখে মুখে ফিরছিল ‘বিজেমূল’ প্য়ারোডি ৷ তবে, ‘টুম্পা সোনা’র অনুকরণে সেই গান নিয়ে যতটা উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, ইভিএমে তার কোনও সুফল সিপিএম বা সংযুক্ত মোর্চা পায়নি ৷

আরও পড়ুন : ঐতিহাসিক ভুল আর ভুল স্বীকারই কি এখন সিপিআইএমে নিউ নর্মাল ?

ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছেন, সিপিএম তথা বামেরা যেভাবে তৃণমূল আর বিজেপিকে ‘এক’ করে দেখানোর চেষ্টা করেছিল, তা ভালোভাবে নেয়নি আমজনতা ৷ বরং বামেদের এই তত্ত্ব উল্টে বিজেপি আর তৃণমূলেরই পাল্লা ভারী করেছিল ৷ বামেরা (মূলত সিপিএম) যত দিনে এই সত্যিটা উপলব্ধি করেন, ততদিনে অবশ্য ‘খেলা’ শেষ ৷ আর ঠিক সেই কারণেই ভোটের ফল প্রকাশের কিছু সময় পর থেকেই বিজেমূল তত্ত্ব নিয়ে ঝাঁঝ কমাতে শুরু করে সিপিএম নেতৃত্ব ৷ এমনকী, ভবিষ্যতে জাতীয়স্তরে তৃণমূলকে সমর্থনের একটা আভাসও দিতে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কিছু সূত্র ৷

এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে বিমান বসু জানান, তাঁদের দল বা ফ্রন্ট কখনই ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব খাড়া করেনি ! তাঁরা বিজেপি বা তৃণমূলের রাজনৈতিক রসায়নকে এভাবে ব্যাখ্যা করতে চাননি বলেও দাবি করেছেন প্রবীণ এই রাজনীতিক ৷ প্রশ্ন হল, তাই যদি হবে, তাহলে ‘টুম্পা সোনা’র প্রয়োজন কী ছিল ? সরাসরি এর উত্তর আশা করা বোধ হয় উচিত নয় ৷ তবে ‘বিজেমূল’ নিয়ে বামেদের অন্দরেই যে প্রবল দ্বন্দ্ব রয়েছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট ৷ আগেই এ নিয়ে ‘বড় দাদা’ সিপিএমের সঙ্গে মতান্তর ছিল বাকি বাম শরিকদের ৷ আর এবার সেই মতভেদ ধরা পড়ল সিপিএমের নিজের ঘরেই ৷

বিমান বসু যখন বলছেন, ‘বিজেমূল’ তাঁদের সৃষ্ট তত্ত্ব নয়, ঠিক তখনই সূর্যকান্তের দাবি, একুশের ভোটে সিপিএমের ভরাডুবি হলেও যে তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে লড়াই হয়েছিল, তা ভুল নয় ! তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়তে চান, তাঁদের একজোট হতেই হবে ৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাঁরা নরম মনোভাবের কথা বলছেন, তাঁরা শাসকদলের বিরুদ্ধে থাকা ক্ষোভের উপাদানগুলিকে অস্বীকার করছেন ৷’’ অর্থাৎ বিমান বসুর উল্টো পথে হেঁটে সেই ‘বিজেমূলেই’ সিলমোহর দিচ্ছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ! প্রসঙ্গত, ভোটের আগে সূর্যকান্ত নিজে ‘টুম্পা সোনা’ সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন ৷ যা নিয়ে সেই সময় বিতর্কও কম হয়নি ৷ এমনকী, রক্ষণশীল বামেদের একাংশ তো সিপিএম নেতার রুচিবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছিলেন ৷

বিজেপির পাশাপাশি সূর্যকান্ত যে তৃণমূল কংগ্রেসকেও এখনও তাঁদের চরম শত্রু বলে ধরে রেখেছেন, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট ৷ তিনি বলেন, ‘‘টিকাকরণের (করোনার) বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য দু’মুখো নীতি নিয়ে বসেছিল ৷ সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরই তারা অবস্থান বদল করেছে ৷ এর ফলে যে ছবি সামনে এসেছে, তা সবাই দেখতে পাচ্ছেন ৷ করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ৷ তার জন্য কী কী প্রস্তুতি নিয়েছে দুই সরকার ? তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই ৷ মুখ্যমন্ত্রী শুধু বলছেন, ‘খেলা হবে’ ৷ ক্লাবগুলিকে অর্থ দিচ্ছেন ৷ কিন্তু বন্যা দুর্গতরা একটি ত্রিপল পাবেন কিনা, তার নিশ্চয়তা নেই ৷ কৃষকদের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে কিনা, তার সদুত্তর নেই ৷ স্কুল, কলেজ খুলবে কিনা, বেকাররা চাকরি পাবেন কিনা, সেই সবকিছুও ধোঁয়াশায় ভরা ৷’’

আরও পড়ুন : যাহা বিজেপি তাহাই তৃণমূল, দুইয়ে মিলে বিজেমূল : সেলিম

সূর্যকান্তের মতে, বিজেপি বিরোধিতাকে পোক্ত করতে আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট হতে হবে ঠিকই, কিন্তু তাদের সকলের চরিত্রও যে সমান নয়, সেটাও মনে রাখতে হবে ৷ এই বিষয়ে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন সূর্যকান্ত ৷ অতীতে তৃণমূল নেত্রীর আরএসএস ঘনিষ্ঠতা এবং বন্দনার ছবি মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মনে করেন, বিজেপি বিরোধিতার নামে তৃণমূলের অন্যায় থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকলে বিজেপির ভিতই আরও পোক্ত হবে ৷

কিন্তু সূর্যকান্ত এই কথা বললেও অন্য সুর শোনা যাচ্ছে সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমের গলায় ৷ খানিকটা বিমান বসুর মতোই তাঁরও সাফাই, ‘বিজেমূল’ সিপিএম বা বামেদের সৃষ্ট কোনও তত্ত্ব নয় ৷ বরং তিনি মনে করেন, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমজনতার মধ্যে থেকেই নানা ধরনের রাজনৈতিক ভাবনা উঠে আসে ৷ তৈরি নতুন নতুন শব্দ ৷ ‘বিজেমূল’ও তার ব্যতিক্রম নয় ৷ সেলিমের যুক্তি, একইভাবে সাতের দশকে ‘কংশাল’ শব্দটি শোনা যেত ৷ কিন্তু, তার অর্থ কখনই এটা নয় যে কংগ্রেস আর নকশাল এক ! সবমিলিয়ে বলা যায়, তৃণমূল বিরোধিতায় এখনও এককাট্টা হতে পারেনি একদা বাংলার শাসকশিবির সিপিএম তথা বামফ্রন্ট ৷ এই অবস্থায় আগামী দিনে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি কী হয়, এখন সেটাই দেখার ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.