কলকাতা, 24 সেপ্টেম্বর : ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন নিয়ে আদালত সঙ্গত প্রশ্ন করেছে বলে মনে করেন সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী । তাঁর মতে, "কেন শুধুমাত্র ভবানীপুরে নির্বাচন হবে সেই প্রশ্ন স্বাভাবিক । সারা দেশের 31টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে না । লোকসভার তিনটি উপনির্বাচন হবে না । সারা দেশে একটি মাত্র উপনির্বাচন ভবানীপুরে । কেন ভবানীপুর স্পেশাল । এখানেই শেষ নয়, এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে ভবানীপুরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব । আদালতে সেই প্রশ্ন উঠেছে । মুখ্যসচিব নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করলেন বলে ধরে নিতে হবে ।"
শুধু মুখ্যসচিব নন, সিপিএম নেতার সমালোচনার মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও । কোন যুক্তিতে সংবিধান সংকট হবে ধরে নিয়ে ভবানীপুরে নির্বাচন করল কমিশন, তা সামনে আসা জরুরি বলে মনে করেন তিনি ৷ " 213 জন বিধায়ক রয়েছে তৃণমূলের । 213 জন বিধায়ক একজনকে বেছে নেবেন । তিনি ছয় মাস চালাতে পারবেন, অসুবিধা নেই । তাহলে সংবিধানের সংকট কোথায়? এটা তৃণমূল কংগ্রেসের সংকট । কিন্তু তৃণমূলের সংকটকে সংবিধানের সংকট বলে সংবিধানের মুল্যায়নকে দুর্বল করে দেওয়া হল ।" সমালোচনা সুজনের । প্রায় একইসঙ্গে তিনি যোগ করলেন, "ভবানীপুরে যে ব্যক্তি জিতেছেন তিনি পদত্যাগ করলেন । হয়তো অন্য কোথাও দাঁড়াবেন । তাহলে তিন মাস আগে তিনি দাঁড়ালেন কেন? জিতলেন যদি ছাড়লেন কেন? ছাড়লেন যদি আবার দাঁড়ালেন কেন? আবার নির্বাচন করতে হবে কেন? ভবানীপুরের মানুষের কি অপরাধ যে তাঁদের ওপর ফের নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হল । অথচ তাঁরা একজনকে নির্বাচিত করেছিলেন । এই ব্যায়ভার কেন বহন করতে হবে? এই প্রশ্ন আমরা আগে তুলেছিলাম । আদালতও সেই কথাই বলেছে ।"
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: আমায় শারীরিক আঘাত করার পরিকল্পনা ছিল বিজেপির: মমতা
পাশাপাশি বর্ষায় শহরের জল যন্ত্রণা নিয়েও সরব হয়েছেন সুজন চক্রবর্তী ৷ তাঁর কথায়, "শহরবাসীর দুর্ভোগ অব্যাহত । 13 জন মানুষ প্রাণ হারালেন । সরকারের কোনও হেলদোল নেই । রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি না হয়েও এই অবস্থা, প্রমাণ করে নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল দশা । জল বেরনোর পথ গালিপিট, নালা, খালবিল ইত্যাদি তৃণমূল নেতাদের ব্যর্থতা এবং ব্যবসা করার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । বেহালায় একটি আস্ত খাল চুরি হওয়ার পরও পুরসভা চুপ । সরকার চুপ । নয়ানজুলি নিয়ে মামলা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে । বিজ্ঞান মঞ্চ, পরিবেশবীদরা সরব হয়েছেন, তাতেও হেলদোল নেই । বরং নিকাশি খালের ধারে রাস্তা বানিয়ে এমন করা হল যাতে জমির দাম বেড়ে যায় । এই দাম বৃদ্ধির লাভের পঁচাত্তর শতাংশ পৌঁছোয় কালীঘাটে । ফলে একটি দল এবং তার নেতারা স্বাভাবিক নিকাশি ব্যবস্থাকেই নষ্ট করে দিয়েছে ।’’
অপরাধের বিচার না করে, জমা জলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে দু'জন কম বয়সী বাচ্চার মৃত্যুতে টাকা দেওয়ার চেষ্টা আদতে মুখ বন্ধের পরোক্ষ নির্দেশ বলেই মনে করেন সুজন ৷ তাঁর কথায়, "আমি ওই দুই পরিবারকে স্যালুট জানাব । যারা মুখের ওপর বলে দিলেন আমরা চার লক্ষ টাকা দিচ্ছি মেয়েকে ফেরত দিন । টাকার বিনিময়ে সবকিছু কেনা যায় না । এই সবকিছু কেনার চেষ্টাই প্রমাণ করে এই সরকার কত অসভ্য ।’’
আরও পড়ুন : West Bengal Farmers : মমতার আমলে চাষিদের আয় বাড়লেও কৃষি নির্ভরতা কমেছে
তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের অপদার্থতা নিয়ে সরব হওয়ার পাশাপাশি সুজন চক্রবর্তী অসমের বিজেপি সরকারের কাজেরও নিন্দা করেছেন । অসমে গুলি চালানোর ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে বলেছেন, "বিজেপি এবং আরএসএস কতটা নৃশংস হতে পারে এই ঘটনা তার প্রমাণ ।’’