কলকাতা, 2 জুন : বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে COVID-19-এর মোকাবিলায় দু'টি শিফটে অফিস চালু করা হোক। ইলেকশনের সময় যেভাবে বেসরকারি বাসগুলিকে সরকার নিয়ে নেয়, সেভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসগুলিকে সরকার নিক । প্রয়োজনে বেসরকারি বাসগুলির ড্রাইভার, কন্ডাক্টরদের বেতন দিয়ে বাস চালানোর ব্যবস্থা করুক সরকার । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গতকাল চিঠি পাঠিয়ে এমনই পরামর্শ দিল রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন । তবে, শুধুমাত্র এই পরামর্শ নয় । COVID-19-এর মোকাবিলায় রোগনির্ণয়, কোয়ারানটিন, COVID হাসপাতালগুলির কী করণীয়, সেই সব বিষয়েও এ দিনের ওই চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
আগামী 2 জুন পর্যন্ত লকডাউনের সময় বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার । তবে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে । রাজ্যগুলিকে অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে । এ দিকে, COVID-19-এর সংক্রমণ এখন বেড়ে চলেছে । বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এ দেশে এখন COVID-19-এর পিক সময় অর্থাৎ, এখন এই রোগের সংক্রমণ বেড়ে চলার সময় । এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার । যদিও, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অফিস খুলে গেছে। শুধুমাত্র অফিস নয় । রুটি-রুজির কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষকেও বেরোতে হচ্ছে। সরকারি বাসগুলির পাশাপাশি বেসরকারি বাসগুলিকেও চালানোর কথা বলেছে রাজ্য সরকার । অথচ, বেসরকারি বাসগুলির মালিকরা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পথে বাস নামাতে চাইছেন না । এই ধরণের পরিস্থিতির মধ্যে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গল গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি পাঠিয়েছে । এই চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে । বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে কীভাবে COVID-19-এর মোকাবিলা করা প্রয়োজন, সেই সব বিষয়ে এই চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । এই সব পরামর্শের মধ্যে যেমন রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলিতে দুটি শিফট চালুর বিষয়, তেমনই রয়েছে বেসরকারি বাসগুলিকে চালানোর বিষয়টিও । এর পাশাপাশি COVID-19 নির্ণয়, চিকিৎসা, প্রতিরোধের নিয়েও এই চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
সরকারি চিকিৎসকদের এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " অফিস খুলে দেওয়া হল । অফিসগুলিকে দুই শিফটে চালু করা যায় না ? সকালে একটি শিফট, দুপুরে একটি শিফট। তা হলে একসঙ্গে সব মানুষকে বেরোতে হয় না । বাসগুলিও ফাঁকা থাকবে ।" ইতিমধ্যেই বহু মানুষকে বের হতে হচ্ছে । সরকারি বাস চলআছে । তবে, বেসরকারি বাসগুলি এখনও সেভাবে চালু হয়নি । কর্মস্থানে যাওয়া এবং সেখান থেকে ফেরার সময় বহু মানুষকে বাসের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে । চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " ইলেকশনের সময় রিকুইজিশন করে প্রাইভেট বাস নেওয়া হয় । এখন প্রাইভেট বাসের মালিকরা বাস চালাচ্ছেন না । চুপ করে বসে থাকবে সরকার ? বাসগুলিকে কেন রিকুইজিশন করে নেওয়া হচ্ছে না ? কন্ডাক্টর-ড্রাইভাররা বাস চালাবেন । প্রয়োজন হলে সরকার তাঁদেরকে বেতন দিয়ে বাস চালাবেন । তা হলে বাসের জন্য লাইনে এবং রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়াতে হয় না।" তিনি বলেন, " কিছু তো পরিকল্পনা ঘোষণা করবে সরকার । হঠাৎ করে বলা হল অফিস চালু হবে । লোকজন যাবেন কীভাবে ? অটো ভাড়া 2-3 গুণ বেশি । অটো ভাড়া দিতে হবে, না হলে বাসের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়াতে হবে ।"
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, " লকডাউন মানে চিকিৎসা নয়, লকডাউন মানে সরকারের প্রস্তুতির জন্য সময় । লকডাউন যখন শুরু হয়েছিল তখন তা বিজ্ঞানভিত্তিক ছিল না । যখন চলছিল, তখনও বিজ্ঞানভিত্তিক ছিল না । লকডাউন তোলা হচ্ছে বিজ্ঞানভিত্তিক ছাড়া । রোগ প্রতিরোধের জন্য বিজ্ঞান তো থাকতে হবে । ধর্মস্থান খোলার কী দরকার ছিল এখন ? ধর্মস্থান কি কোনও অর্থকরী বিষয় ? মানুষ তাঁর ধর্ম ঘরেই পালন করতে পারেন । ধর্মস্থান খুলে দেওয়া মানে সেখানে জমায়েতের রাস্তা খুলে দেওয়া । এরপর সেখানে কন্ট্রোল করা হবে কীভাবে ?" তিনি বলেন, " লকডাউন সারা জীবন চলতে পারে না। তার মানে এই নয় যে হঠাৎ করে পরিকল্পনা না করে লকডাউন শুরু করে দিলাম, আবার হঠাৎ করে পরিকল্পনা না করে লকডাউন তুলে দিলাম । এটা বিজ্ঞানভিত্তিক হওয়া উচিত।"
প্রতিটি রাজ্যের গঠনগত বিষয় অনুযায়ী COVID-19-এর মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন । পশ্চিমবঙ্গের জন্য কোন ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ? টেস্ট করতে হবে, কন্টাক্ট ট্রেসিং করতে হবে, কন্টাক্ট ট্রেস করে টেস্ট করাতে হবে । আক্রান্ত হলে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে । বেডের জন্য যাতে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে না হয়, তা দেখতে হবে । যে সব রোগী COVID-19-এ আক্রান্ত নন, সেই সব রোগীর জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যান্সার, ডায়ালিসিসের রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে । বাড়িতে বাড়িতে সমীক্ষা করতে হবে । বয়স্ক মানুষকে যাতে বাড়ি থেকে বের হতে না হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে । টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে । প্রতিদিনের টেস্টের রিপোর্ট যেন প্রতিদিন পাওয়া যায়, যেন ব্যাকলক না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে । এ কথা জানিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " এ সব নিশ্চিত না করে লকডাউন তোলা যায় না, সব কিছু খুলে দেওয়া যায় না।" তিনি বলেন, " 100 শতাংশ অফিস খুলে দেওয়া হচ্ছে অথচ, বাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না । বাসের ব্যবস্থা করে অফিস খোলা যেত না ? বেসরকারি বাসের মালিকরা বাস চালাবেন না বলে বসে থাকল, আর সরকারও চুপ করে বসে রইল, এটা কোনও সরকারের ভূমিকা হতে পারে ? বেসরকারি বাসের মালিকরা বাস চালাবেন না, সরকার চালাবেন । ড্রাইভার-কন্ডাক্টরকে সরকার মাইনে দেবে । সেখানে 20 জন করে প্যাসেঞ্জার নেওয়া যাবে । বাসের সংখ্যা বেশি হলে প্যাসেঞ্জারদের ভোগান্তি হবে না ।" তিনি বলেন, " অথচ, বাস চলছে না বলে বাসের সব সিটে প্যাসেঞ্জার নিয়ে চলার কথা ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে । এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই । এর মাধ্যমে ব্যবস্থা না করে মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া হল ।" সবাইকে মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছে। এই বিষয়ে চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " অমরা বার বার বলেছি, রেশনের মাধ্যমে চাল-গম যেমন দিতে হবে, এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে হলেও মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান রেশনের মাধ্যমে দেওয়া উচিত ।" তিনি বলেন, " লকডাউন চাপিয়ে দেওয়া হল সরকার নিজেকে প্রস্তুত করবে বলে । অথচ, এই দুই মাস যে সময়টা পেল সরকার, সেই সময়ের মধ্যে রাজ্য বা দেশ প্রস্তুত হল না যাতে বিপদ রুখে দেওয়া সম্ভব হয় । সমস্যা এখানেই ।"
অফিস হোক দুটি শিফটে, বেসরকারি বাস চালাক সরকার; মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি চিকিৎসকদের
আগামী 8 জুন থেকে খুলে যাচ্ছে সমস্ত অফিস । অথচ এই অবস্থায় চলছে না বেসরকারি বাসগুলি । হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি সরকারি বাস । তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গতকাল চিঠি পাঠিয়ে পরামর্শ দিল রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন । সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে দু'টি শিফটে অফিস চালু করা হোক। ইলেকশনের সময় যেভাবে বেসরকারি বাসগুলিকে সরকার নিয়ে নেয়, সেভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসগুলিকে সরকার নিক ।
কলকাতা, 2 জুন : বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে COVID-19-এর মোকাবিলায় দু'টি শিফটে অফিস চালু করা হোক। ইলেকশনের সময় যেভাবে বেসরকারি বাসগুলিকে সরকার নিয়ে নেয়, সেভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসগুলিকে সরকার নিক । প্রয়োজনে বেসরকারি বাসগুলির ড্রাইভার, কন্ডাক্টরদের বেতন দিয়ে বাস চালানোর ব্যবস্থা করুক সরকার । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গতকাল চিঠি পাঠিয়ে এমনই পরামর্শ দিল রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন । তবে, শুধুমাত্র এই পরামর্শ নয় । COVID-19-এর মোকাবিলায় রোগনির্ণয়, কোয়ারানটিন, COVID হাসপাতালগুলির কী করণীয়, সেই সব বিষয়েও এ দিনের ওই চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
আগামী 2 জুন পর্যন্ত লকডাউনের সময় বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার । তবে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে । রাজ্যগুলিকে অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে । এ দিকে, COVID-19-এর সংক্রমণ এখন বেড়ে চলেছে । বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এ দেশে এখন COVID-19-এর পিক সময় অর্থাৎ, এখন এই রোগের সংক্রমণ বেড়ে চলার সময় । এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার । যদিও, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অফিস খুলে গেছে। শুধুমাত্র অফিস নয় । রুটি-রুজির কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষকেও বেরোতে হচ্ছে। সরকারি বাসগুলির পাশাপাশি বেসরকারি বাসগুলিকেও চালানোর কথা বলেছে রাজ্য সরকার । অথচ, বেসরকারি বাসগুলির মালিকরা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পথে বাস নামাতে চাইছেন না । এই ধরণের পরিস্থিতির মধ্যে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গল গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি পাঠিয়েছে । এই চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে । বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে কীভাবে COVID-19-এর মোকাবিলা করা প্রয়োজন, সেই সব বিষয়ে এই চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । এই সব পরামর্শের মধ্যে যেমন রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলিতে দুটি শিফট চালুর বিষয়, তেমনই রয়েছে বেসরকারি বাসগুলিকে চালানোর বিষয়টিও । এর পাশাপাশি COVID-19 নির্ণয়, চিকিৎসা, প্রতিরোধের নিয়েও এই চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
সরকারি চিকিৎসকদের এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " অফিস খুলে দেওয়া হল । অফিসগুলিকে দুই শিফটে চালু করা যায় না ? সকালে একটি শিফট, দুপুরে একটি শিফট। তা হলে একসঙ্গে সব মানুষকে বেরোতে হয় না । বাসগুলিও ফাঁকা থাকবে ।" ইতিমধ্যেই বহু মানুষকে বের হতে হচ্ছে । সরকারি বাস চলআছে । তবে, বেসরকারি বাসগুলি এখনও সেভাবে চালু হয়নি । কর্মস্থানে যাওয়া এবং সেখান থেকে ফেরার সময় বহু মানুষকে বাসের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে । চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " ইলেকশনের সময় রিকুইজিশন করে প্রাইভেট বাস নেওয়া হয় । এখন প্রাইভেট বাসের মালিকরা বাস চালাচ্ছেন না । চুপ করে বসে থাকবে সরকার ? বাসগুলিকে কেন রিকুইজিশন করে নেওয়া হচ্ছে না ? কন্ডাক্টর-ড্রাইভাররা বাস চালাবেন । প্রয়োজন হলে সরকার তাঁদেরকে বেতন দিয়ে বাস চালাবেন । তা হলে বাসের জন্য লাইনে এবং রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়াতে হয় না।" তিনি বলেন, " কিছু তো পরিকল্পনা ঘোষণা করবে সরকার । হঠাৎ করে বলা হল অফিস চালু হবে । লোকজন যাবেন কীভাবে ? অটো ভাড়া 2-3 গুণ বেশি । অটো ভাড়া দিতে হবে, না হলে বাসের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়াতে হবে ।"
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, " লকডাউন মানে চিকিৎসা নয়, লকডাউন মানে সরকারের প্রস্তুতির জন্য সময় । লকডাউন যখন শুরু হয়েছিল তখন তা বিজ্ঞানভিত্তিক ছিল না । যখন চলছিল, তখনও বিজ্ঞানভিত্তিক ছিল না । লকডাউন তোলা হচ্ছে বিজ্ঞানভিত্তিক ছাড়া । রোগ প্রতিরোধের জন্য বিজ্ঞান তো থাকতে হবে । ধর্মস্থান খোলার কী দরকার ছিল এখন ? ধর্মস্থান কি কোনও অর্থকরী বিষয় ? মানুষ তাঁর ধর্ম ঘরেই পালন করতে পারেন । ধর্মস্থান খুলে দেওয়া মানে সেখানে জমায়েতের রাস্তা খুলে দেওয়া । এরপর সেখানে কন্ট্রোল করা হবে কীভাবে ?" তিনি বলেন, " লকডাউন সারা জীবন চলতে পারে না। তার মানে এই নয় যে হঠাৎ করে পরিকল্পনা না করে লকডাউন শুরু করে দিলাম, আবার হঠাৎ করে পরিকল্পনা না করে লকডাউন তুলে দিলাম । এটা বিজ্ঞানভিত্তিক হওয়া উচিত।"
প্রতিটি রাজ্যের গঠনগত বিষয় অনুযায়ী COVID-19-এর মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন । পশ্চিমবঙ্গের জন্য কোন ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ? টেস্ট করতে হবে, কন্টাক্ট ট্রেসিং করতে হবে, কন্টাক্ট ট্রেস করে টেস্ট করাতে হবে । আক্রান্ত হলে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে । বেডের জন্য যাতে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে না হয়, তা দেখতে হবে । যে সব রোগী COVID-19-এ আক্রান্ত নন, সেই সব রোগীর জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যান্সার, ডায়ালিসিসের রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে । বাড়িতে বাড়িতে সমীক্ষা করতে হবে । বয়স্ক মানুষকে যাতে বাড়ি থেকে বের হতে না হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে । টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে । প্রতিদিনের টেস্টের রিপোর্ট যেন প্রতিদিন পাওয়া যায়, যেন ব্যাকলক না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে । এ কথা জানিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " এ সব নিশ্চিত না করে লকডাউন তোলা যায় না, সব কিছু খুলে দেওয়া যায় না।" তিনি বলেন, " 100 শতাংশ অফিস খুলে দেওয়া হচ্ছে অথচ, বাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না । বাসের ব্যবস্থা করে অফিস খোলা যেত না ? বেসরকারি বাসের মালিকরা বাস চালাবেন না বলে বসে থাকল, আর সরকারও চুপ করে বসে রইল, এটা কোনও সরকারের ভূমিকা হতে পারে ? বেসরকারি বাসের মালিকরা বাস চালাবেন না, সরকার চালাবেন । ড্রাইভার-কন্ডাক্টরকে সরকার মাইনে দেবে । সেখানে 20 জন করে প্যাসেঞ্জার নেওয়া যাবে । বাসের সংখ্যা বেশি হলে প্যাসেঞ্জারদের ভোগান্তি হবে না ।" তিনি বলেন, " অথচ, বাস চলছে না বলে বাসের সব সিটে প্যাসেঞ্জার নিয়ে চলার কথা ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে । এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই । এর মাধ্যমে ব্যবস্থা না করে মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া হল ।" সবাইকে মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছে। এই বিষয়ে চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, " অমরা বার বার বলেছি, রেশনের মাধ্যমে চাল-গম যেমন দিতে হবে, এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে হলেও মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান রেশনের মাধ্যমে দেওয়া উচিত ।" তিনি বলেন, " লকডাউন চাপিয়ে দেওয়া হল সরকার নিজেকে প্রস্তুত করবে বলে । অথচ, এই দুই মাস যে সময়টা পেল সরকার, সেই সময়ের মধ্যে রাজ্য বা দেশ প্রস্তুত হল না যাতে বিপদ রুখে দেওয়া সম্ভব হয় । সমস্যা এখানেই ।"